বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার অভিযোগ, গুলিতে নারী নিহত
Published: 7th, February 2025 GMT
নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগরে পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি ও ইউপি কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় গুলিতে একজন নারী নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামে বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খানের বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত নারীর নাম শান্তা ইসলাম (২৪)। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খানের চাচাতো ভাই শাকিল খানের স্ত্রী। শান্তাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা মো.
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে সোহেল ও তাঁর সমর্থকেরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খানের বাড়িঘরে হামলা চালান। এ সময় শান্তা বাধা দিলে তাঁকে গুলি করা হয়। তাঁর রক্তাক্ত দেহ প্রায় ২০ মিনিট ঘরের ভেতরে আটকে রাখা হয়। প্রতিবেশী কয়েকজন নারী ঘরের ভেতর থেকে গুলিবিদ্ধ শান্তাকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন।
হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইসমাইল হোসেন জানান, শান্তা নামের এক নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর পিঠের দিকে গুলি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খান জানান, ‘সোহেলের নেতৃত্বে আমার বাড়ি ও ইউপি কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। মূলত আমাকে টার্গেট করেই ওই হামলা চালানো হয়। এ সময় বাড়িতে আমার বৃদ্ধ দুই চাচা ও মহিলারা ছিলেন। বাধা দিতে গেলে আমার চাচাত ভাই শাকিলের স্ত্রী শান্তাকে গুলি করে হত্যা করেন সোহেল।’
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে সোহেল মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেন এই প্রতিবেদক। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেএয়া সম্ভব হয়নি। এসএমএস পাঠিয়ে ও হোয়াটস অ্যাপে ম্যাসেজ পাঠিয়েও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানান, গুলিতে একজন নারী নিহত হয়েছেন। ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের দল কাজ করছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক
চট্টগ্রাম নগরে কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার প্রাইভেট কার থামিয়ে হামলার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে বান্দরবান থেকে কাজী মো. ইমন হোসেন (২৩) ও মো. সুজন (২৪)–কে গ্রেপ্তার করে ডিবি (পশ্চিম)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, এক ব্যক্তির নির্দেশে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এ হামলা চালান। সেই নির্দেশদাতা এখনো পলাতক।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশীদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, হামলার সময় ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কাস্টমস কর্মকর্তাকে ভয় দেখানোই ছিল হামলার লক্ষ্য। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
৪ ডিসেম্বর সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকায় কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুল আরেফিন ভাড়ায় নেওয়া প্রাইভেট কারে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তিন ব্যক্তি তাঁদের গাড়ি থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির কাচে কোপ দেন। গাড়ির কাচ ভাঙার পাশাপাশি হামলাকারীরা একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। তবে দুই কর্মকর্তা দ্রুত গাড়ি সরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়ম, রাজস্ব জালিয়াতি ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জড়িত চক্র হামলা চালাতে পারে। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের নিষিদ্ধ পপি বীজ ও ঘন চিনি, প্রায় ৩০ কোটি টাকার নিষিদ্ধ সিগারেট এবং মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা বিপুল পরিমাণ প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে দুজন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। প্রসাধনী জব্দের পর মো. আসাদুজ্জামানকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়।
হামলার নির্দেশদাতার পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে হামলায় ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিষিদ্ধ পপি বীজ, ঘন চিনি ও মিথ্যা ঘোষণায় আসা প্রসাধনী জব্দের কারণে একটি সিন্ডিকেট ক্ষুব্ধ। গত দুই মাসে এসব সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি আসছে।
আরও পড়ুনগাড়ি থামিয়ে কাচে চাপাতির কোপ, একজন বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’০৪ ডিসেম্বর ২০২৫