রাজশাহীতে ভাড়া বাসা থেকে এক নারীর অগ্নিদগ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘরের মেঝেতে হেলেনা আক্তার (৩৫) নামের ওই নারীর লাশ পড়ে ছিল। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

হেলেনা আক্তার নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভদ্রা রেললাইনের পাশের বস্তির এক কক্ষের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তার স্বামীর নাম আলমগীর হোসেন ওরফে রয়েল। তিনি হেলেনার দ্বিতীয় স্বামী। ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছে না তার।

নিহতের মা ও ভাই অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় হেলেনাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে, পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি।

চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, ‘‘সকালে বস্তির এক লোক ফোন করে ঘরে আগুনে পোড়া লাশ পড়ে থাকার কথা জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।’’

ওসি জানান, ‘‘ওই কক্ষে তেমন আসবাবপত্র নেই। মেঝেতেই ঘুমাতেন হেলেনা। আগুনে তার পুরো শরীর ঝলসে গেছে। পাশে একটি মশারিতে শুধু  পোড়া চিহ্ন দেখা গেছে। আর কিছু পোড়েনি।’’

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘হেলেনার আগের স্বামীর এক ছেলে আছে। সে মাদ্রাসায় আবাসিক থাকে। দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে হেলেনা একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। যে ঘরে তারা থাকতেন তার পাশের ঘরে আরেক প্রতিবন্ধী নারী থাকেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, আগুন লাগলে হেলেনার চিৎকার-চেঁচামেচি করার কথা। কিন্তু, এমন কিছু তিনি শোনেননি।’’

তিনি বলেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা হেলেনার স্বামী আলমগীর হোসেনকে খুঁজছি। কিন্তু, তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করছি, তিনি পালিয়েছেন। এ ঘটনায় হেলেনার স্বজনেরা মামলা করলে নেওয়া হবে। তবে, কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা পুলিশি তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে।’’

ঢাকা/কেয়া/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। 

এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আরো পড়ুন:

কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল

জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত

লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, ‍“২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।” 

“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি