সুন্দরবনের শিবসা নদীর তীরে গাবগাছের বাগানটা যেন বিস্ময়
Published: 16th, February 2025 GMT
গহিন বন, চারদিকে ঘন গাছের সারি। সকালের রোদ যেন আঁচল বিছিয়েছে সুন্দরবনের বুকে। বনের শাকবাড়িয়া নদী ধরে ট্রলার এগিয়ে চলছে বন বিভাগের বজবজা টহল ফাঁড়ির দিকে। নিরাপত্তা দিতে সেখান থেকে ট্রলারে উঠলেন বনপ্রহরী মফিজুল ইসলাম। গন্তব্য সুন্দরবনের শিবসা নদীর পাড়ের গাবগাছের বাগান দেখা। ম্যানগ্রোভ এই বনে সুন্দরী, গেওয়া, গরানসহ শত শত প্রজাতির গাছ সচরাচর দেখা গেলেও গহিন বনে গাবগাছের বাগান দেখাটা বিস্ময়ের।
১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনার সুন্দরবনঘেঁষা কয়রা উপজেলা থেকে বন বিভাগ পর্যটকদের ভ্রমণের অনুমতিপত্র দেওয়া শুরু করেছে। উদ্বোধনী দিনে যথাযথ নিয়ম মেনে রাজস্ব দিয়ে ভ্রমণকারী দলের সঙ্গী হয়েছেন এই প্রতিবেদক। সুন্দরবনে গাবগাছের বাগান দেখার ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
বনের মধ্যের ঝপঝোপিয়া ও আড়ুয়া শিবসা নদী দিয়ে এঁকেবেঁকে ট্রলার চলে যায় গহিন বনের শিবসা নদীতে। শান্ত শিবসা নদী ধরে চলতে থাকে ট্রলার। ট্রলারে বসে একটু খেয়াল করলে বনের ভেতরটা দেখা যায়। কেওড়া বনের নিচে ঝোপজঙ্গল কম। বনের ভেতরে তাকিয়ে দেখা গেল, হরিণ ও বন্য শূকরের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। বানরের পাল দৌড়ঝাঁপ করছে। ট্রলারে আলাপকালে সফরসঙ্গী বনপ্রহরী মফিজুল ইসলাম বললেন, ‘খাল বা নদীর ধারে দল বেঁধে হরিণের চলাফেরার দৃশ্য এখন হরহামেশাই চোখে পড়ে।’
শিবসা নদীর তীরে গাবগাছের বাগান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।