মেহজাবীন–আদনানের ৪৬৯৪ দিনের গল্প
Published: 25th, February 2025 GMT
‘একটা ছেলে এসেছিল দেখা করতে; বাঁকা দাঁত, মিষ্টি হাসি। এক শুটিং হাউসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম, সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত নেড়েছিল। মাত্র ১৫ মিনিট আমরা কথা বলি, এরপর সে চলে যায়; যাওয়ার সময় মনে হলো, আমার হৃদয়ের একটা অংশ যেন চলে গেল।’ গতকাল দুপুরে বিয়ের ছবি প্রকাশ করে এভাবেই ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন মেহজাবীন চৌধুরী। জানিয়েছেন ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল আদনান আল রাজীবের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। তখন কি জানতেন, ১৩ বছর পর রাজীবের সঙ্গেই চিরস্থায়ী বন্ধনে বাধা পড়বেন।
গতকাল দুপুরে দেওয়া পোস্টে মেহজাবীন জানিয়েছেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে প্রযোজক–পরিচালক আদনান আল রাজীবকে বিয়ে করেছেন তিনি। গতকাল রাজধানী অদূরে একটি রিসোর্টে ছিল ‘বিবাহ অনুষ্ঠান’।
মেহজাবীন লিখলেন বাঁকা দাঁত, মিষ্টি হাসির সেই ছেলের সঙ্গে প্রেমের গল্পবিয়ের ১০ দিন পর ছবি প্রকাশ করলেন মেহজাবীন। আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘১৩ বছর পর, আমরা এখানে পৌঁছেছি। আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি, সব সাফল্য একসঙ্গে উদ্যাপন করেছি, দুঃসময় পেরিয়ে এসেছি। সাত বছরের বন্ধুত্ব নাকি আজীবন স্থায়ী হয়; আমরা প্রায় দ্বিগুণ সময় পার করেছি। ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের বন্ধন চিরস্থায়ী হয়েছে, শপথ করেছি হাত হাত রেখে চলব। আদনান আল রাজীব, জীবনের সেরা বন্ধু হিসেবে তোমাকে পছন্দ করেছি।’
জীবনের এই নতুন পথচলায় ভক্ত, অনুসারীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন মেহজাবীন। পোস্টের সঙ্গে হ্যাশট্যাগে ৪৬৯৪ দিন লিখেছেন অভিনেত্রী। এটা দিয়ে তিনি হয়তো আদনানের সঙ্গে সম্পর্কের মোট দিনকে বুঝিয়েছেন।
বিয়ের পাঁচটি ছবি প্রকাশ করে মেহজাবীনের দেওয়া পোস্টে শুভকামনা জানিয়েছেন তাঁর ভক্ত, অনুসারী থেকে তারকারা। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টায় মেহজাবীনের পোস্টের প্রতিক্রিয়া এসেছে ২ লাখ ৯৭ হাজারের বেশি, মন্তব্য এসেছে ২২ হাজারের বেশি, শেয়ার হয়েছে প্রায় ৯ হাজার। ছবিতে কফি রঙের প্লেইন শেরওয়ানি পরেছিলেন আদনান আল রাজীব, মেহজাবীনকে দেখা গেছে চাপা সাদা লেহেঙ্গায়।
অবশেষে বিয়ের ছবি প্রকাশ করলেন মেহজাবীনমেহজাবীন ফেসবুকে বিয়ের ছবি প্রকাশ করার পর বিভিন্ন সূত্রে গতকালের রিসোর্টে হওয়া বিয়ের অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। যেখানে মালাবদলের পর মেহজাবীন ও আদনানকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে দেখা যায়। এক পর্যায়ে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন মেহজাবীন। নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে এদিন হাজির হয়েছিলেন গীতিকার কবির বকুল, নির্মাতা আশফাক নিপুন, মোস্তফা কামাল রাজ, নুহাশ হুমায়ুন, সংগীতশিল্পী এলিটা, অভিনয় শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশা, সিয়াম, তাসনিয়া ফারিণ, তানজিন তিশা, সাবিলা নূরসহ অনেকে।
একই জায়গায় গত রোববার মেহজাবীন ও আদনানের গায়েহলুদ ও মেহেদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের ছবি তোলায় বিধিনিষেধ ছিল। তবে এত কড়াকড়িতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ঠিকই ফাঁস হয়েছে মেহজাবীন চৌধুরীর গায়েহলুদের একাধিক স্থিরচিত্র।
আদনান আল রাজীব ও মেহজাবীন চৌধুরী। ফেসবুক থেকে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ম হজ ব ন অন ষ ঠ ন ফ সব ক গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।
আরো পড়ুন:
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”
প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”
গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী