মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে এখনো খেলতে দেখে অবাক দিনেশ কার্তিক
Published: 25th, February 2025 GMT
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিম পা রেখেছেন প্রায় ২০ বছর হলো। ওয়ানডে খেলছেন ১৯ বছর ধরে। মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতাও মুশফিকের মতো। তিনি ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছেন ১৮ বছর ধরে।
এই দুজনের এখনো খেলে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার দীনেশ কার্তিক। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষে খেলা না ছাড়ায় অবাক হয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার কার্তিক।
বিপিএল থেকেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হচ্ছেন মুশফিক। ১৪ ম্যাচে রান করেছিলেন মাত্র ১৮৪। এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দুই ম্যাচেও আউট হয়েছেন ০ ও ২ রানে। এ ছাড়া মাহমুদউল্লাহও কাল ফিরে গেছেন ৪ রান করে। এ কারণেই দলে তাদের জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে কার্তিক জাকের আলীকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে টেনেছেন এই দুই ক্রিকেটারর প্রসঙ্গ।
আমার মনে হয় কোনো না কোনো সময়ে তরুণদের জন্য জায়গাটা ছাড়তে হবে। কারণ, এটা দলকে স্থিতিশীল করবে।দীনেশ কার্তিকচ্যাম্পিয়নস ট্রফির দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের হয়ে রান করেছেন জাকের। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৬৮ রানের ইনিংসের পর কাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছেন ৪৫ রানের ইনিংস। দুদিনই জাকের খেলেছেন ৭ নম্বরে। শীর্ষ পাঁচে জাকেরের ব্যাটিং করা নিয়ে প্রশ্ন করার পর কার্তিক মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে টেনে এনেছেন, ‘আমি ভেবেছিলাম ২০২৩ বিশ্বকাপ শেষেই মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ অবসর নেবে। তবে তারা খেলা চালিয়ে যাওয়াটাকেই বেছে নিয়েছে। জানি না আর কত দিন খেলবে। (খেললে) আমি অবাক হব। অবশ্য তারা আমাকে অনেক বিস্মিত করেছে। সম্ভবত আরও কিছুদিন খেলবে।’
আরও পড়ুনতাঁর মৃত্যুর খবরটা আপনি কীভাবে পেয়েছিলেন ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২কার্তিক যোগ করে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় কোনো না কোনো সময়ে তরুণদের জন্য জায়গাটা ছাড়তে হবে। কারণ, এটা দলকে স্থিতিশীল করবে। প্রথমদিকে তারা হয়তো স্ট্রাগল করবে, তবে শেষে গিয়ে এটাই তাদের সাফল্য দেবে। ২০২৬ সালে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ভালো করতে চাইলে এমনটাই হওয়া উচিত। তাদের(বাংলাদেশের) বড় পরিসরে ভাবতে হবে, সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে।’
বিপিএলে একসঙ্গে ফরচুন বরিশালে খেলেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।