অ্যানফিল্ডে জাদু দেখানোর অপেক্ষায় পিএসজি
Published: 11th, March 2025 GMT
মঙ্গলবার ও বুধবার রাতের খেলা দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর মহারণ। এই রাউন্ডের সবচেয়ে বড় ম্যাচটা আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে লিভারপুল ও পিএসজির মাঝে।
অন্যদিকে এই ম্যাচের আগে নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতেই পারে লিভারপুল। আগের ম্যাচে পার্ক দে প্রিন্সে গিয়ে যে অল রেডরা বড় ব্যবধানে হেরে আসেনি, এটাই বিশ্বয়ের। উল্টো ১-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফেরা লিভারপুল নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতে পারে। অন্যদিকে প্রথম লেগে প্রতিপক্ষের পোস্টে ২৭ শট নিয়েও গোল করতে না পারাটাই হয়ে যেতে পারে পিএসজির কোয়ার্টারে উঠতে না পারার সবচেয়ে বড় কারণ।
এই ম্যাচের আগে অল রেড ম্যানেজার আর্নে স্লট তো বলেই ফেললেন তিনি যত ক্লাবকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছেন এই মৌসুমে তার মাঝে পিএসজিই সবচেয়ে পরিপূর্ণ।
আরো পড়ুন:
পিএসজি হারল ‘বিশ্ব সেরা’ গোলরক্ষকের বিপক্ষে!
লিভারপুলের মানসিকতার প্রশংসায় স্লট
স্লট জানান, “হ্যাঁ, আমার এটিই মনে হয় (লিভারপুলকে মৌসুমের সেরা পারফরম্যান্স মেলে ধরতে হবে)। কারণ এই মৌসুমে আমাদের মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে পরিপূর্ণ দল এটিই। অবশ্যই আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে খেলেছি আমরা। খুব বড় ব্যবধান নেই (পিএসজির সঙ্গে)। তবে পিএসজি যে তীব্রতা দিয়ে খেলে, সঙ্গে তাদের মান তো আছেই। তাদের আছে দারুণ এক ম্যানেজার, যিনি প্রতিটি ফুটবলারের সেরাটা বের করে আনেন।”
আগের ম্যাচে গোলকিপার আলিসন বেকার পিএসজির নিশ্চিত ৯টা গোল বাঁচিয়েছিলেন। অন্যদিকে শেষ দিকে বদলি নামা হার্ভি ইলিয়টের গোলে শেষ পর্যন্ত নাটকীয় জয় পেয়ে যায় লিভারপুলই। অন্যদিকে তারা শেষ ৪ ম্যাচে অপরাজিত।
তবে এতকিছুর পরও অলরেডরা নিজেদের মাঠে খুব একটা স্বস্তিতে নেই। কারণ প্রতিপক্ষ পিএসজির ব্যাকরণে যে রক্ষণাত্বক ফুটবল বলতে কিছুই নেই। আর ব্যবধানটা যেহেতু মাত্র ১ গোলের তাই যে কোন কিছুই হতে পারে অ্যানফিল্ডে।
ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে রেনেসের বিপক্ষে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে জেতে পিএসজি। তবে এরপরও দলে ৮টি পরিবর্তন করার বিলাসিতা দেখাতে পেরেছিলেন দলটির ম্যানেজার লুই এনরিক। তাই এই স্প্যানিশ কোচ ইংলিশ ক্লাবটির বিপক্ষে ক্লান্তিহীন এক একাদশ মাঠে নামাতে পারবেন।
ঘরের মাঠে লিভারপুলের বিপক্ষে হারার আগে পিএসজির টানা ২২ ম্যাচ অপরাজিত ছিল। সুতরাং বুঝায় যাচ্ছে ছন্দে আছে দলটি। সাথে আছে আত্মবিশ্বাস। তাই তো দলটির স্প্যানিশ ম্যানেজার লুই এনরিকে জানান, “যদি আমরা প্রথম লেগের মতো পারফরম্যান্স করতে পারি, তাহলে পরের রাউন্ডে যেতেই পারি। অ্যানফিল্ড খেলার জন্য অবশ্যই কঠিন জায়গা। তবে আমরা আমাদের মতোই খেলব। আগেও এ রকম ব্যবধান আমরা ঘুচিয়েছি এবংন ফিরে এসেছি। আবারও সেই চেষ্টা করার জন্যই সেখানে যাব।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসজ চ য ম প য়নস ল গ প এসজ র ব যবধ ন সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।