Samakal:
2025-08-01@04:46:17 GMT

জমিতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো

Published: 13th, March 2025 GMT

জমিতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো

চলতি মৌসুমে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এর পরও দুশ্চিন্তায় বৃহত্তর সিলেটের শস্যভান্ডারখ্যাত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা। স্থানীয় টমেটো চাষিরা বলছেন, ফলন ভালো, বাজারে চাহিদাও আছে। এর পরও টমেটো তুলে আড়তে বিক্রি করে পরিবহন খরচও ওঠাতে পারছেন না তারা। ফলে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে  অনেক কৃষকের টমেটো।

জানা গেছে, উপজেলার প্রান্তিক কৃষক এবং স্থানীয়দের অনেক দিনের দাবি একটি হিমাগার স্থাপনের। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পর্যায় থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। একটি হিমাগার থাকলে এভাবে নষ্ট হতো না কৃষকের কষ্টের ফসল। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই এই টমেটো বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। এখন হিমাগারে সংরক্ষণ করা গেলে তখন লাভের মুখ দেখতেন চাষিরা।

উপজেলার ভানুগাছ বাজারের আড়তদার শরিফ উদ্দিন জানান, গত এক মাস ধরে আড়তে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা কেজিতে। এর আগের সপ্তাহে বিক্রি ছিল ৪ থেকে ৫ টাকা কেজি। বাজারে টমেটোর দাম এতটাই কম যে, কৃষক টমেটো তুলতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। সংরক্ষণের সুযোগ থাকলে এখন কমে বিক্রি করে পরে মুনাফাও করতে পারতেন কৃষক। এতে বাজারে টমেটোর দামও সহনীয় থাকত। কোনো পক্ষের কষ্ট হতো না।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার আদমপুর এবং মাধবপুরে সবচেয়ে বেশি টমেটো চাষ হয়। যারা আগাম টমেটো চাষ করেছিলেন তারা লাভবান হলেও বাকিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মাধবপুর ইউনিয়নের টমেটো চাষি সুলেমান, বকুল, শামীম ও বুরহান জানান, আগে বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা টমেটো নিতে এলেও এখন কোনো পাইকার আসছে না। আগের মতো টমেটোর চাহিদা এখন নেই। টমেটো তোলা বা ভাড়া দিয়ে বাজারে নিয়ে ৪-৫ টাকা কেজি বিক্রি করে কোনো লাভ হয় না। তাই ফসলই তোলা বন্ধ।

আমদপুরের কৃষক মোস্তাফা কামাল জানান, বিক্রির চেয়ে খরচ বেশি। সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে মানুষ এখনও কম দামে খেতে পারত, পরেও বাজারে টমেটো পাওয়া যেত। দাম অসহনীয় হতো না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, টমেটো একটি পচনশীল কৃষিপণ্য। উৎপাদ বেশি হওয়ায় কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। যারা আগাম টমেটো চাষ করেছেন, তারা ভালো দাম পেয়েছেন। এ ছাড়া এখন যারা টমেটো লাগাবেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তারাও ভালো দাম পাবেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় হিমাগার স্থাপনের বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, এ উপজেলার কৃষকের কষ্টের ফসল সংরক্ষণে সম্প্রতি সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে অবগত করা হয়েছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের নজরে দেওয়া হয়েছে বিষয়টি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফসল উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ