Prothomalo:
2025-08-01@17:16:02 GMT

তিন দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ

Published: 16th, March 2025 GMT

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলার সীমান্তরেখায় সালদা নদী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার অন্তর্গত। অদূরেই বাংলাদেশ–ভারত সীমান্ত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

সালদা নদীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্থায়ী কোনো ঘাঁটি ছিল না। নদীর পূর্ব পারে মন্দভাগ ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে। নদীর অপর পার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে না থাকলেও তা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল না। কাছাকাছি চাঁদলা গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ছিল পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থান। মাঝেমধ্যেই তারা সেখান থেকে সালদা নদীর পাড়ে আসত। অস্থায়ীভাবে সেখানে অবস্থান নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নজরদারির চেষ্টা করত। তখন বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করতেন, যাতে তারা সেখানে স্থায়ীভাবে অবস্থান না করতে পারে। কারণ, সালদা নদী ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ পথ।

২১ বা ২২ অক্টোবর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বালুচ রেজিমেন্টের একটি বড় দল সালদা নদীর অপর পারে সমবেত হয়। তারা সেখানে বাংকার খনন করতে থাকে। এর কয়েক দিন আগে থেকেই তারা মন্দভাগ দখলের চেষ্টা করছিল। এ কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অধিনায়ক ধারণা করলেন, পাকিস্তানি সেনারা যেকোনো সময় মন্দভাগ আক্রমণ করতে পারে। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশ দিলেন তা প্রতিহত করতে।

নির্দেশ পেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত প্রস্তুত হলেন। তাঁরা ছিলেন তিনটি দলে বিভক্ত। একটি দলে ছিলেন আবদুল লতিফ। ২৩ অক্টোবর রাতে (তখন ঘড়ির কাঁটা অনুসারে ২৪ অক্টোবর) বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল সালদা নদী রেলস্টেশনের পূর্ব দিকে পাহাড়ি এলাকায়; একটি দল সালদা নদী ও গুদামঘরের পশ্চিমে নদী অতিক্রম করে এবং অপর দলটি পাকিস্তানি সেনাদের পেছনে অবস্থান নেয়। তারপর তিন দিক থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সাঁড়াশি আক্রমণ করেন। তখন সেখানে ভয়াবহ এক যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

আবদুল লতিফ ছিলেন নদী অতিক্রমকারী দলে। তাঁরা সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কয়েকটি বাংকার ধ্বংস করেন। এরপর তিনি কয়েকজন সহযোদ্ধার সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছিলেন সামনে। তখন হঠাৎ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছোড়া গুলিতে তিনি শহীদ হন।

আবদুল লতিফ চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ১৯৭১ সালে তাঁর পদবি ছিল হাবিলদার। তখন তাঁর রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল কুমিল্লা সেনানিবাসে। মার্চ মাসে এই রেজিমেন্টের বেশির ভাগ সদস্য সেনানিবাসের বাইরে মোতায়েন ছিলেন। তবে তিনি ছিলেন সেনানিবাসে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সেখান থেকে পালিয়ে তাতে যোগ দেন। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরের মন্দভাগ ও সালদা নদী সাবসেক্টরে।

আবদুল লতিফ, বীর প্রতীক

গ্রাম মহেষপুর, উপজেলা নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

বাবা লিল মিয়া, মা গোলাপী খাতুন। অবিবাহিত। খেতাবের সনদ নম্বর ৯২। শহীদ ২৩ অক্টোবর ১৯৭১।

সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা। দ্বিতীয় খণ্ড। প্রথমা প্রকাশন। (প্রকাশ: মার্চ, ২০১৩)।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ