রাজশাহীতে বাসায় ঢুকে চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ৪
Published: 17th, March 2025 GMT
রাজশাহী নগরের বড়বনগ্রাম এলাকায় এক ফ্রিল্যান্সারের বাসায় ঢুকে মারধর ও চাঁদা দাবির অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল, চাকু, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও স্টাম্পসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার হয়।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুর
সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা হত্যা: এমপি ও এসপির বিরুদ্ধে মামলা
গ্রেপ্তার চারজন হলেন- নগরের শাহমখদুম থানার বড়বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকার সাজ্জাদুর রহমান (২৫), একই এলাকার হাসানুর রহমান রাব্বি (২৫), ভাড়ালিপাড়া এলাকার রাকিব হাসান (২৮) ও নগরের বোয়ালিয়া থানার কুমারপাড়া এলাকার সানি রহমান (৩০)।
আরএমপির মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন জানান, গোপালগঞ্জের এক ব্যক্তি বড়বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করেন। রবিবার বিকেলে তার বান্ধবী জরুরি প্রয়োজনে বাসায় তার সঙ্গে দেখা করতে যান। কিছুক্ষণ পর চারজন দেশীয় অস্ত্রসহ জোরপূর্বক বাসায় প্রবেশ করেন। তারা ওই দুইজনের মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন এবং পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ভুক্তভোগীদের মারধর এবং বাসার বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। অভিযুক্তরা ওই ফ্রিল্যান্সারের বান্ধবীর ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে।
তিনি আরো জানান, অভিযুক্তরা ওই তরুণীকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করেন তারা। তাকে ধর্ষণের চেষ্টাও করা হয়। ওই ফ্রিল্যন্সার কৌশলে তার সহকর্মীর মাধ্যমে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্তরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে নগরের শাহমখদুম থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ এল ক র নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি
আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির প্রতি আনুগত্য নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে কেবল আইন ও দেশের প্রতি। নির্বাচনকালীন পুলিশের আচরণ হতে হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, ন্যায়নিষ্ঠ ও পেশাদার।’
শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পুলিশ লাইনসের ড্রিলশেডে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) ও রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের যৌথ আয়োজনে এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের মূল দায়িত্বে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পেছনে পুলিশ সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। তিনি পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করে বলেন, ‘যে সরকারই আসুক না কেন, পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে আইন অনুযায়ী কাজ করা। কেউ যেন আগাম ধারণা করে বা কাউকে খুশি করার জন্য দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত না হয়। একজন পুলিশ সদস্য হয়তো কাউকে ফেভার করলে তা হয়তো প্রকাশ পাবে না, কিন্তু একদিন নিজের বিবেকের কাছেই তাঁকে জবাব দিতে হবে।’
পুলিশের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো সততা ও পেশাগত দায়িত্ববোধ—এ কথা উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, পুলিশের কাজ কঠিন। আসামি ধরতে গেলে বাধা বা হুমকি আসে, এমনকি আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়। তবু দায়িত্ব থেকে পিছু হটলে চলবে না।
পুলিশ বাহিনীর দেড় শ বছরের ঐতিহ্য ও ত্যাগের কথা স্মরণ করে আইজিপি বলেন, ‘এই পুলিশ বাহিনী একদিনে গড়ে ওঠেনি। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টে পুলিশ কঠিন এক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। ধাপে ধাপে সেই পরিস্থিতি অতিক্রম করে আজকের অবস্থানে এসেছে। যদিও এখনো কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে, তবু একসময় সমালোচিত সেই পুলিশ বাহিনী আজ নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।’
পুলিশের প্রতি সমাজের প্রত্যাশা ও সমালোচনার কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, ‘এত কিছুর পরও পুলিশ দায়িত্ব থেকে সরে যায়নি, এটাই পুলিশের শক্তি।’
আগামী নির্বাচনকে পুলিশের জন্য একটি ‘বড় পরীক্ষা’ ও ‘সুযোগ’ হিসেবে অভিহিত করে আইজিপি অতীতের ভুল সংশোধন করে সততা ও পেশাদারির মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জনের আহ্বান জানান।
এর আগে আইজিপি বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের কর্মপরিবেশ ও বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান। রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী রেঞ্জ, আরএমপি এবং রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত পুলিশের সব ইউনিটের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।