বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সহকারী সম্পাদক আলী হাবিব আর নেই। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, বিকেলে অফিসে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখেন।
পরে রাত পৌনে ৮টার দিকে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে সাংবাদিকদের সম্মানে জামায়াতের ইফতার
নিষেধাজ্ঞা বাতিল, সরকারি বিজ্ঞাপন পাবে ‘সাপ্তাহিক একতা’
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ কম্পাউন্ডে (কালের কণ্ঠের অফিস প্রাঙ্গণে) তার প্রথম জানাজা হবে। জানাজা শেষে রাতেই তার মরদেহ ঝিনাইদহের গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে।
আলী হাবিব ১৯৬৪ সালে ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দৈনিক জনকণ্ঠে সম্পাদকীয় সহকারী হিসেবে যোগদান করেন ১৯৯৩ সালে। পরে ২০০১ সাল থেকে সহকারী সম্পাদক ও ফিচার বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ‘রঙ্গভরা বঙ্গদেশ’ ও ‘ঝিলিমিলি’ ফিচার পাতার বিভাগীয় সম্পাদক ছিলেন।
তিনি দৈনিক কালের কণ্ঠে ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কর্মরত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় কালের কণ্ঠের উপসম্পাদকীয় বিভাগে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতেন। ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই প্রকাশিত ‘এই ক্ষত সারাবে কে’ শিরোনামের উপসম্পাদকীয়তে তিনি সমসাময়িক একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট প্রকাশিত ‘তরুণরা বাংলাদেশকে শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বে নিয়ে যেতে পারবে’ শিরোনামের উপসম্পাদকীয়তেও তিনি তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা নিয়ে আলোকপাত করেন।
আলী হাবিবের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কাদের গনি চৌধুরী, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, নির্বাহী সম্পাদক মো.
শোক বার্তায় তারা আলী হাবিবের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, র্যাগিংসহ নানা অভিযোগ এনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন ১০ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব ও সনদপত্র বাতিল করেছে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃতরা হলেন, বিশ্বজিৎ শীল, সাইদুজ্জামান পাপ্পু, জাহাঙ্গীর আলম অপু, মহিউদ্দিন মুন্না, হাসু দেওয়ান, আকিব মাহমুদ, আবির, অন্তু কান্তি দে, জাকির হোসেন ও রিয়াদ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি ড. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে যাদের শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে, তাদের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। যারা এখনো অধ্যয়নরত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ছাত্রলীগের বিচারসহ ৯ দাবি জবি ছাত্রদলের
রাবিতে প্রভাষক হলেন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা, ক্ষোভ
ভিসি আরো জানান, ২০২৪ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়, যা সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদিত হয়েছে। গত পরশু তাদের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃত ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্ট মাসে এমন কোনো ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটেনি, যে কারণে আমাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। ক্যাম্পাসে কোটা প্রত্যাহার দাবিতে একদিন বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে প্রোগ্রাম হয়েছে, সেদিনও কিছু হয়নি। আমরা সম্পূর্ণভাবে ভিসি ও ছাত্রদল-শিবিরের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একদিন নিশ্চয়ই এই অবিচারের বিচারও হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের কিছু বলার নেই। শুধু জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনাও আছে অভিযোগে। তারই প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’’
২০১৫ সালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত কমিটি দেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের ব্যানারে নানান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যেত। বহিষ্কৃত ও সনদ বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজন ৫ আগস্টের আগে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কিছু দিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা বহিষ্কৃত ১০ জনের একজন বিশ্বজিৎ শীল।
ঢাকা/শংকর/বকুল