সাঁতারু থেকে মন্ত্রী, এখন তিনি বৈশ্বিক ক্রীড়াঙ্গনে সবচেয়ে ক্ষমতাধর
Published: 21st, March 2025 GMT
সুইমিংওয়ার্ল্ড যুক্তরাষ্ট্রের ত্রৈমাসিক সাময়িকী। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় ক্রিস্টি কভেন্ট্রিকে নিয়ে একটি লেখা ছাপা হয়েছিল। সেটি আগের বছর এথেন্স অলিম্পিকে তাঁর সাফল্যের প্রেক্ষিতে। সেই লেখার শেষে কভেন্ট্রিকে নিয়ে ছোট্ট তথ্যপঞ্জিও ছিল। যেখানে জীবন নিয়ে নিজের গোপন পরিকল্পনায় কভেন্ট্রি বলেছেন, ‘নিজের একটি রেস্টুরেন্ট খুলতে চাই।’
কভেন্ট্রির নিজস্ব ওয়েবসাইটে তাঁর বিষয়ে ঘাঁটতে গিয়ে একটি তথ্য জেনে অবাক লাগতে পারে। ৯ বছর বয়সে মা–বাবাকে বলেছিলেন, অলিম্পিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এবং সোনা জিতবেন। ৯ বছর বয়স মানে ১৯৯২ সাল—এর ঠিক এক যুগ পর ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিকে যে মেয়েটি সাঁতারে সোনা, রুপা ও ব্রোঞ্জ জিতলেন, তাঁর জীবন নিয়ে ইচ্ছার ব্যাপ্তি তো আরও বড় হওয়ার কথা! কভেন্ট্রি জিম্বাবুয়ের হয়ে সাঁতারে প্রথম অলিম্পিক সোনাজয়ী। ভবিষ্যৎও ছিল উজ্জ্বল।
একটি রেস্টুরেন্ট খুলতে চাওয়ার ইচ্ছাটা এমন একজন অ্যাথলেটের সঙ্গে কতটা মানানসই?
হ্যাঁ, ব্যক্তিগত ইচ্ছার জায়গা থেকে দেখলে এই বিষয় নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। কভেন্ট্রির সাঁতারু হয়ে ওঠা যেখানে, যুক্তরাষ্ট্রের সেই অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়কে মেজর করে তাঁর ডিগ্রি নেওয়া আছে। ব্যবসায় নিয়েছেন মাইনর ডিগ্রি। এটুকু বিচারে ওই ইচ্ছাটা ঠিকই আছে। কিন্তু সোনাজয়ী একজন অলিম্পিয়ানের জীবন নিয়ে পরিকল্পনায় রেস্টুরেন্ট ব্যবসা থাকবে, এটা একটু ব্যতিক্রমই বটে!
কিংবা কভেন্ট্রি তখন সেই ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন হয়তো পরিস্থিতির কারণে। জিম্বাবুয়ের সাবেক স্বৈরাচারী শাসক রবার্ট মুগাবে ২০০১ সালে শ্বেতাঙ্গদের দখলে থাকা কৃষি–ফার্মগুলোকে ‘প্রত্যাবাসন’ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সরকারি লোকজন হাজারো শ্বেতাঙ্গের কৃষিজমি কেড়ে নিয়েছে সে সময়। সাদাদের ওপর কালোদের অত্যাচারের মাত্রাও বাড়ছিল।
সে পরিস্থিতিতে শ্বেতাঙ্গ রক্তের কভেন্ট্রি যতই দেশকে অলিম্পিকের সোনা এনে দিন না কেন, নিজেকে নিয়ে তাঁর স্বপ্নটা বড় হওয়ার কথা নয়। হ্যাঁ, অন্য দেশে গিয়ে হয়তো পারতেন। কিন্তু সাময়িকীর সে লেখাতেই কভেন্ট্রি বলেছিলেন, ‘জিম্বাবুয়ে আমার ঘর। ওখানে আমার জন্ম। ওটাই আমার সংস্কৃতি। আমি সব সময় জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধিত্বই করব। গায়ের রং আমার কাছে কোনো বিষয় না।’
ক্রিস্টি কভেন্ট্রি যখন বেইজিং অলিম্পিকের পুলে।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে অধ্যাদেশের খসড়াটি সচিব কমিটির মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রমের খসড়া তৈরি করেছে।
খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এই কমিশনের চেয়ারপারসন হবেন। সদস্য থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ; গ্রেড-২ পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা; অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা; পুলিশ একাডেমির একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ; আইন, অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ের একজন কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক; ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন মানবাধিকারকর্মী।
আরও পড়ুনপুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে স্বাধীন কমিশন অপরিহার্য৮ ঘণ্টা আগেকমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন।কমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন। সদস্যরা যোগদানের দিন থেকে চার বছর নিজ নিজ পদে থাকবেন। মেয়াদ শেষে কোনো সদস্য আবার নিয়োগের যোগ্য হবেন না।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ প্রতিপালনে বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বলা হয়েছে—এই কমিশন যেকোনো কর্তৃপক্ষ বা সত্তাকে কোনো নির্দেশ দিলে উক্ত কর্তৃপক্ষ বা সত্তা অনধিক তিন মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। তবে কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো অসুবিধা হলে সে ক্ষেত্রে নির্দেশ বা সুপারিশ পাওয়ার অনধিক তিন মাসের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কমিশন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে যে নির্দেশ বা সুপারিশ পাঠাবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ বা সুপারিশ কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করে কমিশনকে জানাতে হবে।
আরও পড়ুনকোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি৯ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।এই কমিশনের সদস্য পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রদানের জন্য সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হবে। খসড়া অধ্যাদেশে প্রধান বিচারপতির মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির মনোনীত একজন সরকারদলীয় এবং একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যকে বাছাই কমিটিতে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের উপস্থিতিতে বাছাই কমিটির কোরাম হওয়া ও বাছাই কমিটির বাছাই প্রক্রিয়া শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।
আরও পড়ুন‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা১৭ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ খসড়ায় কমিশন প্রতিষ্ঠা, কার্যালয়, সদস্যদের নিয়োগ, মেয়াদ, কমিশনের সদস্য হওয়ার জন্য কারা অযোগ্য, সদস্যদের পদত্যাগ, অপসারণ, পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধি, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, নাগরিকের অভিযোগ অনুসন্ধান-নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসন, পুলিশপ্রধান নিয়োগ, আইন-বিধি, নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা বিষয়েও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনমাঝেমধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কি আমাদের লোক’: আইজিপি১৭ ঘণ্টা আগে