পাহাড়ে ঈদ আর বৈসাবির কেনাকাটা চলছে একসঙ্গে। মুসলমানের ঈদ আর পাহাড়ি সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় রাঙামাটির মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা জমে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন দুই উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলায় শতকোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে এবার। দিনে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ক্রেতা আসেন বেশি, ইফতারের পর বাঙালি ক্রেতার পদচারণায় মুখর থাকে মার্কেট।
শহরের বিএম শপিং মার্কেট, দীপ্তি প্লাজা, আলিফ মার্কেট, রিজার্ভ বাজারের শপিং কমপ্লেক্স, এলকে টাওয়ার, ছলক মার্কেটে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে ক্রেতার ভিড় রয়েছে। নারী ক্রেতারা শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, প্রসাধনী আর ছেলেরা পাঞ্জাবি, শার্ট কেনায় ব্যস্ত।
ক্রেতা জহুরা বেগম বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বেশিও না আবার কমও না। যে যার সাধ্য অনুযায়ী কিনছেন। দোকানিরা তাদের লাভ অনুযায়ী বিক্রি করছেন।’ সালেহা বেগম জানান, দাম এবার আওতার মধ্যে রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর মার্কেটে লোকজন বেশি, কেনাকাটাও প্রচুর হচ্ছে।
আগামী ৩১ মার্চ বা ১ এপ্রিল ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিনব্যাপী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু উৎসব শুরু হচ্ছে। এবার ঈদুল ফিতর, পহেলা বৈশাখ ও বৈসাবি কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় আনন্দ বেশি হবে। ইতোমধ্যে বিজু উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোকজন আগেভাগে কেনাকাটা শুরু করেছেন।
ড্রেস পয়েন্টের স্বত্বাধিকারী নিলয় মজুমদার বলেন, ‘এবার যেহেতু গরমকালে ঈদ পড়েছে, তাই ক্রেতার জন্য কটন কাপড়ের বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক রাখা হয়েছে। ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। ঈদের পর পর বিজু উৎসব রয়েছে।’
রূপমেলা প্রসাধনী দোকানের ব্যবস্থাপক মো.
বিএম শপিং কমপ্লেক্সের রমণী শাড়িবিতানের মালিক আব্দুল কাদের জানান, রোজার শেষ সময়ে এখানে বেচাকেনা বেড়ে যায়। মালেক শাহ ক্লথ স্টোরের মালিক মো. মামুন জানান, জিনিপত্রের দাম গতবারের চেয়ে একটু বেশি হলেও, অতিরিক্ত নয়।
ভিন্ন কথা বললেন বিএম শপিং কমপ্লেক্সের তানহা ফ্যাশনের মালিক মো. জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘গত বছর এই সময়ে ক্রেতা বেশ ভালোই ছিল। এ বছর তা অর্ধেকেরও কম। সীমিত দরে আমরা কাপড় বিক্রি করছি, তারপরও ক্রেতা মিলছে না। গত বছর এই সময়ে দিনে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার বিক্রি হলেও এ বছর দিনে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে।’
দোকানি মো. খোরশেদ আলম জানান, গতবারের চেয়ে এবারের দাম একটু সামান্য বাড়তি। দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী আগে যেটা দুই হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এখন অর্ধেক দামে চাইছেন ক্রেতারা। শলক মার্কেটের মোনালিসা স্টোরের মালিক মন্টি চাকমা জানান, বিজু উৎসবকে কেন্দ্র করে ভালো ডিজাইনের মালপত্র সংগ্রহে রাখা হয়েছে।
বনরূপা উত্তর বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি বিজয়গিরি চাকমা জানান, বিজুকে কেন্দ্র করে আগে বনরূপা বাজারে জাঁকজমকভাবে বেচা-বিক্রি হতো। এবার তা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে মানুষের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা। তিনি আরও জানান, এবারে বিজুকে কেন্দ্র করে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার বেচা-বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘রাঙামাটি পার্বত্য জেলাটি একটি মিশ্র সংস্কৃতির এলাকা। এখানে আমরা ঈদ ও বিজু উৎসব কিংবা চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব একসঙ্গে উদযাপন করি। এসব উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরো শহর এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ন দ র কর ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।