নিখোঁজ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার, কোমরে বাঁধা ছিল বালুর বস্তা
Published: 23rd, March 2025 GMT
রাজবাড়ীর কালুখালীতে নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর নিরব শেখ (১৭) নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার কোমরে শিকল দিয়ে একটি বালুর বস্তা বাঁধা ছিল।
রোববার সকালে উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিরব ওই ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর জিয়ারুল শেখের ছেলে।
নিরবের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিরব বাড়ির পাশে মাধবপুর বাজারে যায়। রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোঁজ চেয়ে পোস্ট দেন তারা। এর কিছুক্ষণ পর নিরবের বাবার কাছে একটি নম্বর থেকে ফোন করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে নিরবকে হত্যার হুমকি দেয়। মুক্তিপণ দেওয়ার জন্য পাংশা উপজেলার একটি ব্রিজের কাছে যেতে বলা হয়। এরপর থেকেই সেই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শনিবার নিরবের বাবা কালুখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। রোববার সকালে স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, রোববার সকালে ইকরাম নামে এক জেলে পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে উপুড় হয়ে ভাসমান একটি মরদেহ দেখতে পান। এরপর এলাকাবাসী গিয়ে নিশ্চিত হয় এটি নিখোঁজ নিরবের মরদেহ। নিরবের কোমরে শিকল দিয়ে একটি বালুর বস্তা বাঁধা ছিল, যেন মরদেহ পানিতে ডুবে থাকে। তবে মরদেহটি ফুলে ফেঁপে পানির ওপরে ভেসে ওঠে।
নিরবের বাবা জিয়ারুল শেখ জানান, তার তিন ছেলে। তিন বছর আগে ছোট ছেলে জন্মের সময় তার স্ত্রী মারা যায়। অভাব অনটনের সংসারে নিরব নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছে। পরে সাভারের একটি কারখানায় কাজ করত। বেতন নিয়মিত না পাওয়ায় সে কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরে আসে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বাজারে গিয়ে আর ফেরেনি। এখন ছেলের লাশ দেখতে হলো। নিরব কারও সঙ্গে কোনো ঝগড়া-বিবাদে জড়িত ছিল না।
তিনি আরও জানান, ফেসবুকে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর তার নম্বরে ফোন করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। কারা কী উদ্দেশ্যে চেয়েছিল তা তিনি ধারণাও করতে পারছেন না।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান জানান, গত শনিবার নিরবের বাবা কালুখালী থানায় জিডি করেন। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর মুক্তিপণও চাওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছিল। এরই মধ্যে আজ নিরবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খুব শিগগির অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। মুক্তিপণ চাওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মরদ হ ন রব র ব ব র মরদ হ র ন রব
এছাড়াও পড়ুন:
মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা
সুনামগঞ্জে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এক কৃষকের মরিচখেতে একটি তাজা গ্রেনেড পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান তাঁর মরিচখেতে গিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় ওই গ্রেনেড পান। বিষয়টি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। এরপর বিষয়টি বিশ্বম্ভরপুর থানার পুলিশকে জানানো হয়।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মখলিছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেনেড সাদৃশ্য ওই বস্তু দেখতে পায়। এরপর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় থাকা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ঘটনাটি জানানো হয়। আজ দুপুরে সেখান থেকে লেফটেন্যান্ট আল হোসাইনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে প্রথমে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে সেটি নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ নেন তাঁরা। নিষ্ক্রিয় করার সময় গ্রেনেডটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। চারপাশের মাটি গর্ত হয়ে যায়।
সেনা কর্মকর্তা আল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেনেডটি বিশ্বযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোনোভাবে আসতে পারে। এটি মাটির নিচে ১০০ বছরের কমবেশি সময়ে সক্রিয় থাকে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর উচিত ছিল আগেই বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানো। এটি বিস্ফোরিত হলে জানমালের অনেক ক্ষতি হতে পারত।