সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকার তেইশের ছিলা শাপলার বিলের আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। তবে পুরোপুরি আগুন নেভাতে এখনো সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, ভাটায় ভোলা নদী শুকিয়ে পানি শূন্য হয়ে রয়েছে। ফলে পানি ছেটাতে পারছে না ফায়ার সার্ভিস। এখনো কোথাও কোথাও মাটির ওপর শুকনো পাতার মাঝে থেকে ধোঁয়া উঠছে, মাঝে মাঝে জ্বলে উঠছে আগুন। পুরোপুরি আগুন নেভাতে কাজ করছে বন বিভাগের ২০ এবং ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট।
আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ড্রোনের মাধ্যমে ওই এলাকা পর্যবেক্ষণ করছে বন বিভাগ।
খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক (সিএফ) ইমরান আহমেদ বলেন, সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত আগুন নেভানো যায়। তবে এ জায়গাটি খুবই দুর্গম, পানির প্রাপ্যতা নিয়েও জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তারপরও যত দ্রুত সম্ভব আগুন সম্পূর্ণরূপে নির্বাপণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে কখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে তা বলা যাচ্ছে না।
এদিকে, চাঁদপাই রেঞ্জের তেইশের ছিলা-শাপলার বিল এলাকায় আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দীপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এই নিয়ে বনের আগুনের ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি করল বনবিভাগ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ
জীব ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে বনজীবী থেকে শুরু করে পর্যটক, কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবন ঘুরেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী।
গত শুক্রবার তারা ভ্রমণে যান। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়িতে অবস্থানকালে নিজেদের ছবি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ নিয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সাবেক নেতা আমিনুর রহমান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এডিসি পদমর্যাদার একজনের মাধ্যমে বন বিভাগের কাছ থেকে ১০ জনের অনুমতি মেলে। ওই দলে তিনি যুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর সঙ্গে ট্রলারে উঠে পড়েন। এ সময় তাদের আর নামিয়ে দেওয়া যায়নি।
উপসচিব বা তাঁর জন্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে যাওয়া উচিত ছিল কিনা– জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলার তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’ কথা বলার জন্য ওই উপসচিবের নাম ও যোগাযোগ নম্বর চাইলে তিনি দেননি।
এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের জিয়াউর রহমান বলেন, এক উপসচিবের একান্ত সচিব (পিএস) পরিচয়ে ১০ জনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া হয়। অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো করে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই সঙ্গে কয়েক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুন্দরবনে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের এমন আবদারে তারা অসহায় হয়ে পড়েন।