শামীম ওসমানের দোসর বক্তাবলী ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মানববন্ধন
Published: 25th, March 2025 GMT
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার ও শামীম ওসমানের দোসর রশিদ মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এসময় দ্রুত রশিদ মেম্বারের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর আদেশ বাতিলের দাবি জানানো হয়।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এলাকার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ মানববন্ধন বের করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র আহবায়ক নজরুল ইসলাম প্রধান, ফতুল্লা থানা মৎসজীবি দলের সাবেক সভাপতি রাসেল প্রধান, বক্তাবলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, সাংগঠনিক সম্পাদক হালিম আজাদ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসীর গডফাদার শামীম ওসমানের দোসর ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক হত্যা মামলার আসামি আব্দুর রশিদকে কিভাবে বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়।
পরিষদে পূর্বের প্যানেল চেয়ারম্যান থাকা সত্বেও আইন বর্হিভূত ভাবে মোটা অংকের টাকা লেনদেনে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ১নং ওয়ার্ড মেম্বার রশিদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়।
একজন আওয়ামী লীগের দোসর রশিদকে কিছুতেই চেয়ারম্যান হিসেবে বক্তাবলীবাসী মেনে নিবে না।
বক্তারা আরো বলেন, রশিদ মেম্বার কত কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিয়মের বাইরে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়ে গেলো। টাকার কাছে দেশের আইন কিভাবে বিক্রি হয়ে যায়।
টাকার কাছে সরকারি লোক বিক্রি হলেও বক্তাবলীবাসী রশিদকে কখনো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নিবে না। রশিদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর আদেশ প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে। এমনকি বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।
এদিকে সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ সহ সাধারণ জনগণ বিক্ষোভ মিছিল বের করে কানাইনগরস্থ বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এসে হাজির হয়।
এই সময় রশিদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দিয়ে রাজপথ মুখরিত করে। পরে বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন করে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩
নোয়াখালী জেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই স্কুলছাত্র শাহরিয়ার হাসান রিমনকে (১৬) এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে আহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে সুধারাম মডেল থানায় রিমনের মা বাদী হয়ে দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম ও ছবি প্রকাশ করেনি।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।
আহত শাহরিয়ার হাসান রিমন জেলা শহরের বসুন্ধরা কলোনি বাসিন্দা মো. জামাল উদ্দিন ও ফরিদা ইয়াছমিন দম্পত্তির ছেলে। সে স্থানীয় হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
আরো পড়ুন:
কুমিল্লায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনি, কারাগারে ইমামের মৃত্যু
বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে কিশোর গ্যাং সদস্যরা শাহরিয়ার হাসান রিমনকে ধারালো ছুরি এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় রাতে আহত রিমনের মা ফরিদা ইয়াছমিন ২১ জনকে এজহারভুক্ত ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান পরিচালনা করে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।
রিমনের মা ফরিদা ইয়াছমিন জানান, রিমনের পিঠে, মাথায়সহ মোট ছয়টি ছুরির আঘাত করা হয়। তার অপারেশন ঢাকা মেডিকেল কলেজে করানো হয়েছে। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা চলছে। তার পিঠের আঘাতগুলো ফুসফুস পর্যন্ত চলে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, হামলাকারীরা ভেবেছিল রিমন মারা গেছে। যখন জানতে পারে সে বেঁচে আছে, তখন তারা ফের হামলা করতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল পর্যন্ত যায়। রিমনের অপরাধ দুই দল কিশোরের মাঝে চলমান দ্বন্দ্ব মিমাংসা করে দেওয়া। একপক্ষ মানলেও অপরপক্ষ মিমাংসার বিষয়টি মন থেকে মানতে পারেনি। তারাই আমার ছেলের উপর হামলা করেছে।
রিমনের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, রিমনকে ধারালো ছুরি দিয়ে মোট ছয়টি আঘাত করা হয়েছে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি রিমনের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
ঢাকায় রিমনের সঙ্গে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদা সুলতানা ইতু জানান, রাতেই রিমনের সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। এরপর তার অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, রিমনের পিঠের আঘাতগুলো গুরুতর। ছুরির আঘাত প্রায় ফুসফুস পর্যন্ত চলে এসেছে। তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে জেলা শহরের বার্লিংটন মোড়ে একদল কিশোর রিমনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বার্লিংটন এলাকাটি কিশোর গ্যাংয়ের আখড়া। এই এলাকা দিয়ে প্রতিদিন সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, হরিনারায়ণপুর স্কুল, সরকারি মহিলা কলেজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা যাতায়াত করে। প্রতিদিন তাদের উত্ত্যক্ত করা হয়। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। প্রশাসনেরও নজরদারি নেই।
এদিকে, রিমনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করার প্রতিবাদে তার স্কুলের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, স্কুলের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে রিমনের উপর যারা হামলা করেছেন, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এজহারভুক্ত একজনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় আমাদের আরো অনুসন্ধান চলছে। সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অপরাধীদের খুব দ্রুতই আইনের আওতায় আনতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।
ঢাকা/সুজন/বকুল