বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের জন্য দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধানের ঘোষিত সময়সীমা যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত। কারণ, আজ দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত। তাই আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব পৌঁছে দেওয়া। আমরা দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধানকে অভিনন্দন জানাই এ রকম একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরির জন্য।’

আজ রোববার দুপুরে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত ‘অবাধ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ফ‍্যাসিবাদমুক্ত ও পেশাদার প্রশাসন তথা রাষ্ট্র অপরিহার্য শর্ত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন জহির উদ্দিন। গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড মিলনায়তনে যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা বিএনপি। এতে দুই উপজেলার নেতা-কর্মীরা ছাড়াও ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যোগ দেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার ছয়টি শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ শুভেচ্ছা হস্তান্তর করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন।

নির্বাচনের জন্য সেনাপ্রধানের দেওয়া সময়সীমার প্রতি গুরুত্বারোপ করে সভায় জহির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মনে করি না যে সরকার নির্বাচনকে প্রলম্বিত করতে চায়। কিন্তু যদি তা করে, তাহলে আমরা ধরে নেব যে দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধানের নির্বাচনের সময়সীমাকে কেউ অবজ্ঞা করছে, তারা কারা। আমরা তাদের চিহ্নিত করব সময়মতো।’

সেনাপ্রধানকে অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ সময় আরও বলেন, দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধানকে অভিনন্দন জানাই একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরির জন্য। এ দায়িত্বই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিদ্রোহী সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা পালন করেছিলেন।

গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সরোয়ার আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মিজানুর রহমান খান। এতে বক্তব্য দেন আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো.

হাফিজুল ইসলাম, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক বদিউজ্জামান মিন্টু, সদস্যসচিব শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান, আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপি সদস্যসচিব মোল্লা বশির আহমেদ পান্না, গৌরনদী পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, বরিশাল উত্তর জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়্যেদুল আলম খান প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র সময়স ম বর শ ল রহম ন উপজ ল সদস য গ রনদ

এছাড়াও পড়ুন:

বাবুগঞ্জে এবি পার্টির ফুয়াদের বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিল

বরিশালের বাবুগঞ্জে জনগণকে চাঁদাবাজ আখ্যায়িত করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় লোকজন। ‘বাবুগঞ্জ-মীরগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের’ ব্যানারে গতকাল বুধবার বিকেলে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রাম থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। পরে রাতে ওই কর্মসূচির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একদল ব্যক্তি ঝাড়ু হাতে আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। মিছিলের সামনে ছিলেন নারীরা। তাঁদের হাতে ছিল ছাড়ু। একজন হ্যান্ডমাইকে স্লোগান দিচ্ছেন, ‘ফুয়াদের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ফুয়াদের ঠিকানা, বাবুগঞ্জে হবে না’।

মুলাদী-বাবুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৩ আসনে এবি পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

৭ ডিসেম্বর বরিশালের বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার মধ্যবর্তী মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ সময় সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মীরগঞ্জ সেতুর ঠিকাদারদের কাছে স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে।’ তাঁর এ বক্তব্যে সেখানে উপস্থিত স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তাঁরা আসাদুজ্জামানের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান এবং কয়েকজনকে তেড়ে আসতে দেখা যায়। পরে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধ লোকজন।

আরও পড়ুন‘স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে’ বলার পর বরিশালে তোপের মুখে এবি পার্টির ফুয়াদ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আসাদুজ্জামান তাঁর নেতা-কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। বিএনপি নেতা-কর্মীরাও ‘ভুয়া ভুয়া’সহ বিভিন্ন উত্তেজনাকর স্লোগান দিতে দিতে তাঁকে অনুসরণ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পর আসাদুজ্জামানের মন্তব্যের প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। ক্ষমা না চাইলে বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলায় আসাদুজ্জামানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলে তাঁরা ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ খান গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মীরগঞ্জ এলাকায় এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ একটি মিছিল করেছে। এটা আমরা জেনেছি।’

আরও পড়ুনবাবুগঞ্জের ঘটনায় এক দিনেই বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে: এবি পার্টির নেতা ফুয়াদ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

এদিকে ওই ঘটনার পর গত সোমবার বরিশাল প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দলের একাংশের আচরণের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার ভোট কমছে। বাবুগঞ্জের ঘটনায় এক দিনেই ১০ লাখ ভোট কমে গেছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের অযোগ্যতার বিধান নেই ইসির পরিপত্রে
  • ভোটের মাঠে জোটের ভিড়ে জনপ্রত্যাশা কোথায় গেল 
  • পার্বত্য ৩ আসনে প্রার্থী না দিতে জাতীয় দলগুলোর প্রতি আহ্বান ইউপিড
  • শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান ইসলামী ফ্রন্টের
  • তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
  • মেট্রোরেল নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চলবে
  • ‘নির্বাচন সহজ হবে না, পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামতে হবে’
  • নির্বাচনের তফসিলে ভোটের তারিখ ছাড়াও যা যা থাকে
  • আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে পুরোপুরিভাবে জয়লাভ করতে হবে: নেতাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল
  • বাবুগঞ্জে এবি পার্টির ফুয়াদের বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিল