৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত এনসিপি: সারজিস আলম
Published: 4th, April 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জন্য ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। তবে এনসিপি এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ শুক্রবার রংপুর নগরের কেরামতিয়া জামে মসজিদে জুম্মার নামাজের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম এ কথা বলেন। এনসিপির রংপুর জেলার নেতা–কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করতে সাংগঠনিক সফরে আজ দুপুরে তিনি রংপুরে আসেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক দল এনসিপি গঠনের মাত্র এক মাস হয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ যে আমরা শুনতে পাচ্ছি, এক বছরের মধ্যে নির্বাচনের কথা। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া। আমরা মনে করি, এই চ্যালেঞ্জ দিতে আমরা অভ্যস্ত এবং প্রস্তুত।’
এক যুগ ধরে গণমানুষের রাজনীতি ছিল না উল্লেখ করে এনসিপি উত্তরাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক আরও বলেন, ‘রাজনীতি ছিল টাকা দিয়ে মনোনয়ন কেনা এবং রাতের আঁধারে ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাওয়া। এখন যখন আমরা জনগণের রায়ে বাংলাদেশে নতুন করে নির্বাচনের আশা করছি, তখন আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, জনগণের কাছে যেতে হবে। কারণ, জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফেরত পাবে। আমরা জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে সংসদে যেতে চাই।’
আরও পড়ুনএবার ভ্যানে করে এলাকায় ঘুরলেন, জনসংযোগ করলেন সারজিস আলম ২৫ মার্চ ২০২৫ঈদপরবর্তী এই সময়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠকেরা সারা দেশের জেলাগুলোয় সাংগঠনিক সফর করবে বলে জানান সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি অলিগলি ও বাড়িতে যাব জনগণের কাছে। আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখি, যা করতে চাই, আমাদের যা প্রত্যাশা, সেগুলো তুলে ধরতে। জনগণ কী চায়, সেগুলো শুনতে আমরা তাদের কাছে যাব।’
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আসাদুল্লাহ আল গালিব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদসহ জাতীয় নাগরিক পার্টি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনসনাতন ধর্মাবলম্বী মানে নৌকায় ভোট দেয়, এই ধারণা পাল্টাতে হবে: সারজিস আলম২৮ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জনগণ র আম দ র স গঠক এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, “দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন।”
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, “দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।”
বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।”
শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান জানান, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তার দল।
তারেক রহমান বলেন, “দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।”
দেশে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক উদাসীনতা প্রকট হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, “নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তাহীন সমাজ নিশ্চয়ই সভ্য সমাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।”
সেজন্য তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলসহ বাংলাদেশের সচেতন নারী সমাজকে তাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করা যাবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জে ড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ