তখন ম্যাচ শুরু হতে প্রায় ঘণ্টা খানেক বাকি। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের একানা স্টেডিয়ামে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মেন্টর কায়রন পোলার্ড একটা স্বারক জার্সি উপহার দিলেন ব্যাটসম্যান সূর্য কুমার যাদবকে। খানিক বাদে মাঠে গড়ানো লক্ষ্ণৌর বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল ‘স্কাই’ খ্যাত এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানের মুম্বাইয়ের জার্সিতে শততম। অষ্টম ক্রিকেটার হিসাবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএলে শততম ম্যাচ খেললেন সূর্যকুমার। তবে তার এই বিশেষ ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে পারল না মুম্বাই।

টস জিতে প্রথমে লক্ষ্ণৌকে ব্যাটিংয়ে পাঠান মুম্বাই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। মিচেল মার্শ, এডিন মার্করাম ও ডেভিড মিলারের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০৩ রান সংগ্রহ করে লক্ষ্ণৌ। জবাব দিতে নেমে ২.

২ ওভার শেষে সফরকারী দলটির সংগ্রহ ছিল ২ উইকেট হারিয়ে ১৭ রান। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই করে তারা । তিনে নামা নামন ধীর ও মুম্বাইয়ের জার্সিতে শততম ম্যাচ খেলতে নামা সূর্যকুমারের ব্যাটিংয়ে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যায় অতিথি দলটি। তবে সেটা যথেষ্ট ছিল না জয়ের জন্য। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রানেই থামে মুম্বাইয়ের ইনিংস। ১২ রানের জয় পায় লক্ষ্ণৌ।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে লক্ষ্ণৌর ওপেনার মার্শ একাই রান তুলতে থাকেন। ৯ চার ও ২ ছক্কায়, ৩১ বলে ৬০ রান করে, সপ্তম ওভারের শেষ বলে মার্শ সাজঘরে ফিরেন। তখন আরেক ওপেনার মার্করামের রান মাত্র ১৪! টপ অর্ডারে এই দুই ব্যাটার ছাড়া আর কেউ রান পাননি। নিকোলাস পুরান করেন ১২। এই ম্যাচেও ব্যর্থ হন ঋষভ পন্থ। করেন মাত্র ২ রান।

আরো পড়ুন:

স্টার্ক-ডু প্লেসিস-ম্যাকগার্কে হায়দরাবাদকে হারালো দিল্লি

প্রায় ১৮ বছর পর ঘরের মাঠে চেন্নাইয়ের ‘অন্যরকম’ হার

তবে আয়ুশ বাদোনিকে নিয়ে সেই চাপ সামলে নেন মার্করাম। গড়েন ৫১ রানের জুটি। ৪টি চারে বোদানি ১৯ বলে করেন ৩০ রান। এরপর স্বদেশী মিলারকে সাথে নিয়ে নিজের সহজাত ব্যাটিং করে যান মার্করাম। এই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৫৩ রান করেন। অন্যদিকে কিলার খ্যাত মিলারের অবদান ছিল ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ বলে ২৭ রান। বল হাতে মুম্বইয়ের হয়ে একাই পাঁচ উইকেট নেন কাপ্তান হার্দিক। একটি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট, অশ্বনী কুমার, ভিগনেশ পুথুর।

ম্যাচ শুরু আগে অনুশীলনে চোট পাওয়ায় এই ম্যাচে ছিলেন না রোহিত শর্মা। তার বদলি হিসেবে ওপেনিংয়ে খেলা উইল জ্যাকস করেন মাত্র ৫ রান। রায়ান রিকেলটনের ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। ধীর বেশ দাপুটের সঙ্গেই খেলছিলেন। তবে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায়, ২৪ রানে ৪৬ রানে থামতে হয় তাকে। সূর্যকুমার নিজের চেনা ছন্দে খেলে ৪৩ বলে ৬৭ রান করেন। স্কাই তার ইনিংস সাজান ৯ চার ও ১ ছক্কায়। তিনি ফেরার পরেই রানের গতিটা কমে যায়।

তিলক বর্মা চেষ্টা করলেও রাতটা তাঁর জন্য ছিল না। ২৩ বলে ২৫ রান করার পর মুম্বাই ম্যানেজম্যান্ট তাকে রিটার্য়াড হার্ট করায়। শেষে হার্দিক ১৬ বলে ২৮ রান করলেও পারেননি দলকে জেতাতে। শেষ তিন ওভারে রানের পাহাড় চেপে দিয়ে বাজিমাত করে লক্ষ্ণৌ। আকাশ দীপ, শার্দূল ঠাকুর ও আবেশ খানরা নেন ১টি করে উইকেট।

আসরে এখন পর্যন্ত সমান ৪টি করে ম্যাচ খেলেছে এই দুই দল। যেখানে লক্ষ্ণৌর জয় ২টিতে। অন্যদিকে মাত্র ১টি ম্যাচ জিতে রীতিমত ধুঁকছে মুম্বাই।

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র কর ম র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা

বয়স ৪৪, শরীরও আর আগের মতো চলছে না। তবু মহেন্দ্র সিং ধোনি আইপিএল ছাড়েননি। সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছেন, শোনা যাচ্ছে, পরের মৌসুমেও খেলবেন। অথচ তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স বলছে, সময় ফুরিয়েছে। তবু তিনি খেলে যাচ্ছেন কেন? ক্রিকেট ছাড়তে পারছেন না তাই? নাকি খ্যাতির মোহ? সত্যিটা এসবের চেয়েও বড়—ধোনি এখন শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একটি বিশাল অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেমের মূল স্তম্ভ, যাঁর বিদায় মানে অনেক কিছুর ধস।

চলুন দেখা যাক, কীভাবে ধোনির একটুখানি মাঠে থাকা বদলে দেয় বিশাল অঙ্কের হিসাব।২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ব্র্যান্ড ভ্যালু

২০২৫ আইপিএল ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ইতিহাসেই সবচেয়ে বাজে মৌসুম। পয়েন্ট তালিকায় একেবারে তলানিতে থেকে মৌসুম শেষ করেছে তারা। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার, এর কোনো প্রভাবই পড়েনি সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে; বরং সামান্য বেড়েছে!
হুলিহ্যান লোকির ‘আইপিএল ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন স্টাডি ২০২৫’ প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা ২০২৪ সালে ছিল ২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যদিও আইপিএলের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজির র‍্যাঙ্কিংয়ে চেন্নাই ১ নম্বর থেকে তিনে নেমে গেছে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে নয়।
তুলনা করে দেখা যাক—রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) প্রথমবার আইপিএল জেতায় তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে, উঠে এসেছে ১ নম্বরে। অথচ সিএসকে কিছু না করেই সেরা তিনে আছে শুধু একজনের জন্য—ঠিক ধরেছেন, এম এস ধোনি!

আরও পড়ুনফিক্সিং, বিদ্রোহ এবং ষড়যন্ত্রে ভরা ড্রেসিংরুম: পাকিস্তান ক্রিকেটের অস্থির অধ্যায়২৭ জুলাই ২০২৫দর্শকসংখ্যায় ‘ধোনি ইফেক্ট’

২০২৩ আইপিএলের একটি মুহূর্তই বলে দেয়, ধোনির উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে মাত্র ৩ বল খেলেছিলেন ধোনি, করেছিলেন ১২ রান। তাতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিউয়ারশিপ পৌঁছায় ১ কোটি ৭০ লাখে, যা ছিল সে মৌসুমের সর্বোচ্চ। এমনকি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের ১ কোটি ৬০ লাখ ভিউয়ারকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ধোনির সেই ৩ বল স্থায়ী ইনিংসটা!
টিএএম মিডিয়া রিসার্চ বলছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরও ধোনি দিনে গড়ে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ১৪ ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম ধরে রেখেছেন। ২০২৪ সালে তিনি ৪২টি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন, যা অমিতাভ বচ্চন (৪১) ও শাহরুখ খানের (৩৪) চেয়েও বেশি।

মহেন্দ্র সিং ধোনি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বপ্নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জুয়েল, অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভুটান যাত্রা
  • রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে
  • ৪৭ দিন ক্যাম্পে থেকে ১০–১২ দিন অনুশীলন, হতাশ ক্রিকেটাররা
  • অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ 
  • ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা