ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি আইনত নারী নন: ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট
Published: 16th, April 2025 GMT
ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির সার্টিফিকেটে নারী লেখা থাকলেই তিনি আইনত নারী নন। বরং যুক্তরাজ্যের সমতা আইন একজন নারীকে জৈবিকভাবে নারী হিসেবে জন্মগ্রহণকারী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে। বুধবার ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলার রায়ে এভাবে নারীকে সংজ্ঞায়িত করেছে।
বিচারপতি প্যাট্রিক হজ জানিয়েছেন, আদালতের পাঁচজন বিচারক সর্বসম্মতিক্রমে রায় দিয়েছেন যে সমতা আইনে ‘নারী’ ও ‘যৌন’ শব্দটি একজন জৈবিক নারী ও জৈবিক যৌনতাকে বোঝায়।
এই রায়ের অর্থ হল, একজন ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি যার কাছে নারী হিসেবে স্বীকৃতির সার্টিফিকেট আছে, তাকে সমতার স্বার্থে নারী হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়।
এই মামলাটি ২০১৮ সালে স্কটিশ পার্লামেন্টে পাস করা একটি আইন থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ওই আইনে বলা হয়েছে, স্কটিশ সরকারি সংস্থাগুলোর বোর্ডে ৫০ শতাংশ মহিলা প্রতিনিধিথাকা উচিত। সেই আইনে নারীর সংজ্ঞায় ট্রান্সজেন্ডার নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
৮৮ পৃষ্ঠার রায়ে লর্ড হজ, লেডি রোজ এবং লেডি সিমলার বলেছেন, “২০১০ সালের সমতা আইনে যৌনতার সংজ্ঞা স্পষ্ট করে যে যৌনতার ধারণাটি দ্বিমুখী; একজন ব্যক্তি হয় একজন নারী, নয়তো একজন পুরুষ।”
আদালত বলেছে, “যদিও ‘জৈবিক’ শব্দটি এই সংজ্ঞায় নেই, তবুও এই সরল এবং দ্ব্যর্থক শব্দগুলির সাধারণ অর্থ জৈবিক বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায় যা একজন ব্যক্তিকে পুরুষ বা নারী করে তোলে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
শোবিজের একঝাঁক একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”
ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”
সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”
“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।