বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত। একই সঙ্গে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের কারণে ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়া থেকে ভারত লাভবান হবে। চীন থেকে যেসব কারখানা সরে আসবে, তার বড় একটি অংশ হয়তো ভারতে যাবে। কিন্তু তার বাস্তবতা কতটা।

সংবাদ বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ভারত কার্যত বাণিজ্যবান্ধব রাষ্ট্র নয়। দেশটিতে শুল্কের হার অনেক বেশি; বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তারা সুরক্ষাবাদী। যে কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলে আসছেন, ভারত হলো শুল্কের রাজা। কিন্তু ভারতের সুবিধা হলো বিশ্বের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ বাজার। এ ক্ষেত্রে ভারত প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলেছে। ভারতের প্রবৃদ্ধি মূলত তার এই বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজারের কল্যাণে। যে কারণে বৃহৎ অর্থনীতিগুলোর মধ্যে ভারত সবচেয়ে দ্রুত এগোচ্ছে। এই যে তার নীতিগত অবস্থান, সে জন্য বিশ্ববাণিজ্যের এই টালমাটাল সময়ে তারা কিছুটা সুরক্ষিত, যদিও বিষয়টি কিছুটা বিস্ময়কর।

বাস্তবতা হলো, বৈশ্বিক রপ্তানিতে ভারতের অবদান মাত্র ২ শতাংশ। এই যে বিশ্ববাণিজ্যে ভারতের সীমিত অংশগ্রহণ, সেটাই তার জন্য এখন শাপেবর হতে পারে। মুম্বাইভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গান্ধী ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল রিসার্চের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাজেশ্বরী সেনগুপ্ত বিবিসিকে বলেন, রপ্তানিমুখী দেশগুলো এই সময় শুল্কের চাপে প্রবৃদ্ধির গতি হারিয়ে ফেললেও ভারত একভাবে টিকে থাকবে। তখন অন্য দেশের সঙ্গে তুলনায় ভারত শক্তিশালী, এমন ধারণা তৈরি হবে। বলা বাহুল্য, এ ক্ষেত্রে ভারতের মূল চালিকা শক্তি হলো তার বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার।

কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও আত্মতুষ্টিতে ভোগার কারণ নেই বলে মনে করেন রাজেশ্বরী। নতুন বাস্তবতার সুযোগ নিতে ভারতকে ধারাবাহিকভাবে আরও উন্মুক্ত হতে হবে; নিতে হবে কৌশলী পদক্ষেপ। কিন্তু ভারতে যেভাবে বহুদিন ধরে বাণিজ্য ও শুল্ক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সহজ হবে না বলেই মনে করেন রাজেশ্বরী।

সংবাদে ভারতের সঙ্গে এশিয়ার অন্যান্য দেশ, যেমন তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের তুলনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই দেশগুলো যখন ১৯৬০–এর দশকে রপ্তানিমুখী প্রবৃদ্ধির নীতি গ্রহণ করল, তখন ভারত আমদানি প্রতিস্থাপন নীতি গ্রহণ করে। ওই সময় এসব দেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে। এই নীতির কারণে ভারতের জিডিপিতে আমদানির হিস্যা যেখানে ১৯৫৭ সালে ছিল ১০ শতাংশ; ১৯৬৯–৭০ সালে তা ৪ শতাংশে নেমে আসে।

১৯৬০–এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারত ভোগ্যপণ্য আমদানি পুরোপুরি বাতিল করে। এতে হলো কী, দেশীয় উৎপাদকদের ওপর মান বৃদ্ধির চাপ কমে গেল এবং বিশ্বমানের কাঁচামাল ও প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত হলো ভারত। পরিণামে ভারতের উৎপাদকেরা বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারিয়ে ফেললেন এবং তাঁদের রপ্তানি স্থবির হয়ে গেল। এতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমল এবং পরিণামে আমদানিতে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এই অশুভ চক্রের কারণে ভারতের প্রবৃদ্ধির চাকা শ্লথ হয়ে গেল। বাস্তবতা হলো, ১৯৫১ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ভারতের মাথাপিছু আয়ের প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ।

মোড় ঘুরল ১৯৯১ সালে। ব্যালান্স অব পেমেন্টের সংকটে পড়ে ভারত অনেক ক্ষেত্রে আমদানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে এবং রুপির দরপতন হতে দেয়। এই উদ্যোগের ফলে রপ্তানিকারকেরা উৎসাহিত হন। এরপর আমদানির ক্ষেত্রে লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা দূর হয় কেবল ২০০১ সালে, তা–ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিরুদ্ধে বিধি জারির কারণে। ফলও হাতেনাতে পাওয়া গেল। ২০০২–০৩ সাল থেকে ২০১১–১২ সাল পর্যন্ত ভারতের পণ্য ও সেবা রপ্তানি বেড়েছে ছয় গুণ—৭৫ বিলিয়ন বা ৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার থেকে একলাফে ৪০০ বিলিয়ন বা ৪০ হাজার কোটি ডলার। ফলে দেশটির মানুষের মাথাপিছু আয়ও বৃদ্ধি পায়।

এখন কী পারবে ভারত

শুল্কযুদ্ধের এই সময় বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসছে। যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্মুখী হচ্ছে এবং তার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো নির্ভরযোগ্য বাণিজ্য অংশীদার খুঁজছে, এই সময় ভারত কতটা পারবে। অর্থনীতিবিদেরা বিশ্বাস করেন, এই সুযোগ নিতে হলে ভারতকে শুল্কের হার কমাতে হবে অর্থাৎ রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে নিজেদের উন্মুক্ত নীতির কথা বিশ্ববাজারকে জানাতে হবে।

তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল ও খেলনার মতো খাতগুলোয় ভারতের ভালো করার সুবর্ণ সুযোগ আছে বলে সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশেষ করে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে। ট্রাম্প তাঁর নীতিতে অটল থাকলে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি কমতে পারে ৭৭৬ কোটি ডলার বা ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। দিল্লিভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) এই তথ্য দিয়েছে। অর্থাৎ কিছুটা আঘাত লাগবে।

জিটিআরআইয়ের অর্থনীতিবিদ অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, এই পরিস্থিতিতে ভারতের উচিত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ন্যায্য চুক্তির পর নিজেদের বাণিজ্যের ভিত আরও সম্প্রসারণ করা। যেমন ইইউ, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশের সঙ্গে দ্রুত চুক্তি করা এবং চীন, রাশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গভীরতর করা।

বাস্তবে কী ঘটবে, তা নির্ভর করবে শেষমেশ সংস্কারের ওপর। যেমন শুল্কের কাঠামো সহজতর করা, জিএসটি বা পণ্য ও পরিষেবা কর প্রদানের প্রক্রিয়া মসৃণ করা, বাণিজ্য নীতির উন্নতি ঘটানো ও মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ন্যায্য অবস্থান নেওয়া। এসব ছাড়া ভারতের পক্ষে চলমান ট্রেনে ওঠা সম্ভব না–ও হতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প রব দ ধ প রব দ ধ র ব স তবত আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পবিত্র কোরআনে ‘রুকু’ কীভাবে এল

আমরা কোরআন তিলাওয়াত করার সময় প্রতিটি সুরার শুরুতেই আয়াত সংখ্যার সঙ্গে ‘রুকু’ সংখ্যাও লেখা দেখি। পৃষ্ঠার মাঝেও রুকু লেখা থাকে। এই রুকু মানে কী? কী কাজ এই রুকুর?

এই প্রবন্ধে রুকুর ধারণা, কোরআন তিলাওয়াতের সঙ্গে এর সম্পর্ক এবং কোরআনে রুকুর সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

রুকু কী

রুকু আরবি শব্দ, যার অর্থ ‘নমন’ বা ‘বাঁকানো’। নামাজে রুকু বলতে কোমর ঝুঁকিয়ে আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অঙ্গভঙ্গিকে বোঝায়।

তবে কোরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে রুকু একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়াতের সংকলনকে বোঝায়, যা তিলাওয়াতকে সংগঠিত ও সহজতর করে। এটি বিশেষ করে হাফেজদের (যাঁরা কোরআন মুখস্থ করেন) জন্য সুবিধাজনক।

ইমাম সারাখসি (মৃ. ৪৮৩ হি.) রুকুকে রাকাতের সঙ্গে সম্পর্কিত করে বলেছেন, এক রাকাতে তিলাওয়াতের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়াতের সংকেত হিসেবে রুকু ব্যবহৃত হতো।কোরআন তিলাওয়াতে রুকুর ভূমিকা

রুকু নির্ধারণের উদ্দেশ্য ছিল তিলাওয়াতের সময় আয়াতের বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং বিরতি নেওয়ার সুবিধা প্রদান। ইসলামের প্রাথমিক যুগে, বিশেষ করে হাফেজরা তিলাওয়াতের পর নির্দিষ্ট আয়াতে এসে রুকুতে যেতেন, যা এই প্রথার উৎপত্তির ইঙ্গিত দেয়।

ঐতিহাসিকভাবে রুকু নির্ধারণের প্রথা মা-ওয়ারাউন্নাহার (বুখারা, সমরখন্দ) অঞ্চলে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। এটি তারাবিহ নামাজের সময় কোরআন তিলাওয়াতকে সংগঠিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।

ইমাম সারাখসি (মৃ. ৪৮৩ হি.) রুকুকে রাকাতের সঙ্গে সম্পর্কিত করে বলেছেন, এক রাকাতে তিলাওয়াতের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়াতের সংকেত হিসেবে রুকু ব্যবহৃত হতো। অন্য একটি মত অনুসারে, হাফেজরা নির্দিষ্ট পরিমাণ তিলাওয়াতের পর রুকুতে যাওয়ার কারণে এই নামকরণ হয়েছে। (আল-সারাখসি, আল-মাবসুত, বৈরুত: দার আল-মা’রিফা)

আরও পড়ুনধীরে ধীরে কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার কারণ৩০ মে ২০২৫কোরআনে রুকুর সংখ্যা

কোরআনে রুকুর সংখ্যা বিভিন্ন অঞ্চলে ও ঐতিহ্য অনুসারে ভিন্নতা দেখায়। প্রধানত তিনটি ধারা প্রচলিত: ৫৫৮, ৫৪০ ও ৪৮০।

৫৫৮ রুকু: বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মুসহাফে সাধারণত ৫৫৮টি রুকু ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি সুরায় রুকুর সংখ্যা উল্লেখ থাকে এবং আরবি অক্ষর ‘আইন’ দিয়ে রুকু চিহ্নিত করা হয়। এই চিহ্নে তিনটি সংখ্যা থাকে:

 ১. ওপরের সংখ্যা: সুরার মধ্যে রুকুর ক্রম।

 ২. মাঝের সংখ্যা: রুকুর আয়াতসংখ্যা।

 ৩. নিচের সংখ্যা: পারার (জুজ) মধ্যে রুকুর ক্রম।

 এই পদ্ধতি তিলাওয়াতকে সুসংগঠিত করে এবং হাফেজদের জন্য সুবিধাজনক। (সিদ্দিকি, এ, ২০১৭, কোরআনিক ম্যানুস্ক্রিপ্টস অ্যান্ড দেয়ার ডিভিশনস, জার্নাল অব ইসলামিক স্টাডিজ, ২৮(২), (১৪৫-১৬৭)

বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মুসহাফে সাধারণত ৫৫৮টি রুকু ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি সুরায় রুকুর সংখ্যা উল্লেখ থাকে এবং আরবি অক্ষর ‘আইন’ দিয়ে রুকু চিহ্নিত করা হয়।

৫৪০ রুকু: বুখারায় প্রথম রুকু নির্ধারণের সময় এর সংখ্যা ছিল ৫৪০। বুখারার মাশায়েখরা রমজানে তারাবিহ নামাজে প্রতি রাকাতে ১০টি আয়াত তিলাওয়াতের প্রথা অনুসরণ করতেন। এভাবে ৩০ দিনে কোরআনের প্রায় ৬ হাজার আয়াত তিলাওয়াত হতো। তবে দশ আয়াতের ভিত্তিতে তিলাওয়াত করলে বিষয়বস্তুর মাঝখানে বিরতি পড়ত, তাই তারা বিষয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য রুকু নির্ধারণ করেন। (রহিম বখশ, আল-খাত্ত আল-উসমানি ফি রাসমিল কোরআন, লাহোর: মাকতাবা কুদ্দুসিয়া, ১৯৮২)

৪৮০ রুকু: সিন্ধুর হাশিম থাট্টুভি কোরআনের রুকুসংখ্যা ৪৮০ নির্ধারণ করেছিলেন। তিনি সুরাভিত্তিক নয়, বরং পারাভিত্তিক রুকু নির্ধারণ করেন। প্রতি পারায় ১৬টি রুকু ধরে ৩০ পারায় মোট ৪৮০ রুকু হয়।

তিনি ‘রুকু’ শব্দের পরিবর্তে ‘মাকরা’ বা ‘মাকারি’ শব্দ প্রস্তাব করেন, যা ‘কিরআত’ (পাঠ্যাংশ) থেকে উদ্ভূত। (আজমি, এম এম, ২০০৩, দ্য হিস্ট্রি অব দ্য কোরআনিক টেক্সট: ফ্রম রেভল্যুশন টু কম্পাইলেশন, যুক্তরাজ্য: আল-কোরআন সোসাইটি)

আরও পড়ুনসহজে কোরআন বোঝার পাঁচটি কৌশল০৩ মে ২০২৫রুকুর প্রচলন

হিজাজ, আন্দালুসিয়া, মিসর, আফ্রিকা ও সিরিয়ায় রুকুর প্রচলন তেমন ছিল না। রুকুর প্রচলন মূলত মা-ওয়ারাউন্নাহার (বুখারা, সমরখন্দ), ভারতবর্ষ ও তুরস্কে ব্যাপক ছিল। ওসমানি খেলাফতের পর তুরস্কে এটা বিলুপ্ত হয়ে, তবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে এখনো রুকুর প্রচলন আছে।

বুখারার মাশায়েখরা রমজানে তারাবিহ নামাজে প্রতি রাকাতে ১০টি আয়াত তিলাওয়াতের প্রথা অনুসরণ করতেন। তবে এভাবে তিলাওয়াত করলে বিষয়বস্তুর মাঝখানে বিরতি পড়ত, তাই তারা বিষয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য রুকু নির্ধারণ করেন।

ইমাম দানি (মৃ. ৪৪৪ হি.) তাঁর গ্রন্থ আল-বায়ান ফি আদ্দি আয়িল কোরআন-এ কোরআনের বিভিন্ন ভাগ নিয়ে আলোচনা করলেও রুকু নিয়ে বিস্তারিত বলেননি। তবে ইমাম সারাখসি এবং রহিম বখশ তাঁদের লেখায় রুকুর ঐতিহাসিক বিবরণ দিয়েছেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সময়ে সাহাবিরা ১০টি আয়াত করে মুখস্থ করতেন এবং এর ব্যাখ্যা বুঝে পরবর্তী আয়াত শিখতেন, যা রুকু নির্ধারণের প্রাথমিক ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। (আল-দানি, আল-বায়ান ফি আদ্দি আয়িল কুরআন, কায়রো: দার আল-মা’আরিফ)

সারকথা, রুকু কোরআন তিলাওয়াতকে সহজ ও সংগঠিত করে, বিশেষ করে হাফেজদের জন্য। এটি ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকে প্রচলিত একটি পদ্ধতি, যা বুখারা, সমরখন্দ ও ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে। ৫৫৮, ৫৪০ ও ৪৮০ রুকুর ধারা বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত হলেও বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ৫৫৮ রুকুই বেশি ব্যবহৃত হয়।

লেখক: খণ্ডকালীন শিক্ষক, আরবি বিভাগ, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুনযে ঘটনায় কোরআনে পূর্ণ দুটি রুকু নাজিল হয়১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ