পাবনার শিশুটিকে হত্যা ও মুখ ঝলসে দেওয়ার আগে ধর্ষণ করা হয়: পুলিশ
Published: 20th, April 2025 GMT
পাবনার চাটমোহর উপজেলায় আট বছর বয়সী মেয়েশিশুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চার কিশোর ও এক তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর পাঁচজনকেই আজ রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) পাঠানো হচ্ছে।
আরও পড়ুননিখোঁজের পরদিন শিশুর মুখ ঝলসানো লাশ উদ্ধার১৫ এপ্রিল ২০২৫১৪ এপ্রিল নিখোঁজ হওয়া শিশুটির মরদেহ পরদিন বাড়ির পাশের ভুট্টাখেত থেকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটির মুখ ঝলসানো ছিল। এ ঘটনায় চাটমোহর থানায় শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
পাবনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মরদেহ উদ্ধারের পর নাটোর ও পাবনার পুলিশ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে। চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলমের নেতৃত্বে কাজ শুরু করে। এরপর চাটমোহর, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রথমে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুননাটোরের শিশুর লাশ উদ্ধারের মামলায় পাঁচ কিশোর আটক৪ ঘণ্টা আগেগ্রেপ্তার চার কিশোর ও এক তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার দিন বাংলা নববর্ষ ছিল। এ উপলক্ষে অভিযুক্তরা গাঁজা সেবন ও আনন্দ–ফুর্তি করার প্রস্তুতি নেয়। তারা টাকা তুলে গাঁজা কেনে। এর মধ্যেই ভুক্তভোগী মেয়েশিশুটি গ্রামের একটি আমবাগানে আম কুড়াতে যায়। এ সময় মেয়েটি ওই কিশোরদের চোখে পড়ে। তারা মেয়েটিকে আমবাগান থেকে তুলে নিয়ে একটি কলাবাগানে যায়। সেখানে চারজন তাকে ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটির অবস্থার অবনতি হলে কলাবাগান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভুট্টাখেতে আনা হয়। সেখানে ওই তরুণ ধর্ষণ শেষে মেয়েটিকে গলা টিপে হত্যা ও মুখে দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে দেন। এরপর সবাই পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুনপাবনায় নিখোঁজ শিশুর মুখ–ঝলসানো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, ধর্ষণের আলামত পায়নি পুলিশ১৬ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম খ ঝলস
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।