ট্রেনে যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রী
Published: 21st, April 2025 GMT
বলিউড, মারাঠি এবং তামিল ছবির পাশাপাশি ওয়েব সিরিজেও নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখেছেন অভিনেত্রী অদিতি পোহনকার। ‘লাই ভারি’ ছবিতে রিতেশ দেশমুখের বিপরীতে কাজ করার পর দর্শকের নজরে আসেন তিনি। এরপর ‘শি’ এবং ‘আশ্রম’ ওয়েব সিরিজে তার চরিত্র তাকে নিয়ে যায় নতুন উচ্চতায়।
সম্প্রতি বলিউড বাবলকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন অদিতি। সাক্ষাৎকারে মুম্বাই লোকাল ট্রেনের যৌন হয়রানির এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।
অদিতি বলেন, ‘যদি কেউ সত্যিকারের জীবনের অভিজ্ঞতা নিতে চায়, তাহলে তাকে মুম্বাই লোকালে তুলে দিন। অভিজ্ঞতা ছাড়া তিনি ফিরে আসবেন কিনা, তার কোনো গ্যারান্টি নেই!’
তিনি জানান, ট্রেনে সফর করার সময় এক কিশোর তাঁকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করে। বিষয়টি একা সামলাননি তিনি—সরাসরি পুলিশ ডেকে অভিযুক্তকে ধরে মারধরও করেন। অদিতির কথায়, ‘সে এতটাই নির্লজ্জ ছিল যে পুলিশের সামনেও নিজের কাজ থামায়নি, ভুল স্বীকারও করেনি।’
তিনি জানান, সেই ছেলেটির বয়স ছিল মাত্র ১৩ বা ১৪ বছর, সম্ভবত সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তবুও অদিতির সাহসিকতা দেখে অনেকেই বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘ভয় পেও না, সাহস নিয়ে মোকাবিলা করো। সোজাসাপ্টা কথা বলো।’
তিনি বলেন, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি একবার ফার্স্ট ক্লাস মহিলা কামরায় যাত্রা করছিলেন। ওই কামরায় ১৮ বছরের কমবয়সী স্কুল ড্রেস পরা ছেলেদেরও ওঠার অনুমতি ছিল। ট্রেনটি যখন দদার স্টেশন থেকে ছাড়ে, তখন তাঁর পাশে দাঁড়ানো এক স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি হঠাৎ করেই তাঁর বুকে হাত দেয়। এ ঘটনার পর আমি সম্পূর্ণভাবে হতবাক হয়ে যাই।’
তিনি বলেন, পরের স্টেশনে নেমে বিষয়টি পুলিশকে জানাই। আশ্চর্যের বিষয়, ছেলেটি তখনও সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল এবং আরেকজন মেয়ের সঙ্গেও একই কাজ করার চেষ্টা করছিল।
পুলিশ তখন মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমার কাছে কী প্রমাণ আছে?” উত্তরে সে জানায়, “আমি বলছি, ও এটা করেছে। আমি কেন মিথ্যা বলব?’
“একজন মহিলা কনস্টেবল আমার সাথে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কি তার সাথে কিছু করেছ? তিনি তা অস্বীকার করলেন। তারপর, যখন আমি তাকে আঘাত করার মতো অঙ্গভঙ্গি করলাম, তখন সে আতঙ্কিত হয়ে বলল, হ্যাঁ, দুঃখিত, দুঃখিত।’
এরপর অন্য কারো সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দেন সেই ছেলেটি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। চলতি বছর এসএসসি পাস করেছে সে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রাত আটটার দিকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকেই সে অচেতন অবস্থায় ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব গত ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে অন্ধকারের মধ্যে পুকুরে ঝাঁপ দেয়।
সেসময় কিছু ব্যক্তিও পুকুরে নেমে শিহাবকে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান।
একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এরপর লাঠি দিয়ে শিহাবকে আরো পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রেমিকার আত্মীয়রা। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুত্বর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন গত ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিম (৩২) নামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হামলার ঘটনায় আগে করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/কেয়া/এস