চিত্রনায়িকা শাবানা হঠাৎ কেন দেশ ছেড়েছিলেন, এখন কেমন আছেন
Published: 22nd, April 2025 GMT
শাবানার অভিনয়ের শুরুটা সেই ষাটের দশকের শুরুতে ‘নতুন সুর’ ছবিতে। এহতেশাম পরিচালিত সেই ছবিতে অভিনয় করেন শিশুশিল্পী হিসেবে। এরপর বছর পাঁচেক পর নায়িকা হিসেবে তাঁর অভিষেক হয় ‘চকোরী’ ছবিতে, যেটিতে তাঁর নায়ক ছিলেন নাদিম। একটানা কাজ করেছেন নব্বই দশকের শেষ সময় পর্যন্ত। চলচ্চিত্রে অভিনয় তাঁকে দেশ ও দেশের বাইরের বাঙালিদের মনের কোনো জায়গা করে দেয়। অভিনয়ের পাশাপাশি একসময় এই অভিনয়শিল্পী ছবি প্রযোজনাও করেন। তাঁর প্রযোজিত ছবি পায় সাফল্যও। এসএস প্রোডাকশনের সেসব ছবিতে দেশের পাশাপাশি বাইরের দেশের অভিনয়শিল্পীরাও অভিনয় করেন। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে যখন তুমুল ব্যস্ত সময় পার করছিলেন, আচমকা অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। সরিয়ে নিয়ে দেশে বসে থাকেননি, পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর আর অভিনয়ে ফেরেননি।
দেশান্তরি হওয়ার হিসাবে ২৫ বছর ধরে অভিনয় থেকে দূরে সরে আছেন চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী শাবানা। অভিনয়জীবনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় তিনি হুট করেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২৫ বছর ধরে স্বামী, সন্তান, নাতি-নাতনি নিয়ে নিউ জার্সিতে স্থায়ীভাবে থাকছেন। একটা নির্দিষ্ট সময় পর বাংলাদেশে এলেও গত কয়েক বছরে আসা হয়নি।
শাবানা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত