৫ দিন পর মুক্তি পেলেন বান্দরবানে অপহৃত নির্মাণশ্রমিক
Published: 23rd, April 2025 GMT
অপহরণের পাঁচ দিন পর বান্দরবানে রেডক্রিসেন্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজের মাঝি (তত্ত্বাবধায়ক) মো. বাবুল মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে সদর উপজেলার সুয়ালকের লাম্বা রাস্তা নামের এলাকায় ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। তাঁকে ১৭ এপ্রিল রাতে একই স্থান থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। কারা, কী কারণে তাঁকে অপহরণ করেছে, বিষয়টি জানার জন্য মো.
রেডক্রিসেন্টের হাসপাতাল নির্মাণকাজের ঠিকাদার জসীম উদ্দিন বাবুলকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় মো. বাবুলকে অপহরণকারীরা সুয়ালক মাঝের পাড়া রাস্তার মাথায় ছেড়ে দিয়ে যায়। তাঁকে দেখে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সুয়ালক মাঝের পাড়া রাস্তার মাথা এলাকাটি বান্দরবান জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। ওই স্থানের এক কিলোমিটারের মধ্যে সুয়ালক বাজারের পাশে আনসার ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরের অবস্থান।
মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নির্মাণকাজের ঠিকাদার জসীম উদ্দিন বলেছেন, মুক্তিপণের জন্য কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে থানায় অপহরণ মামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। কারা অপহরণের সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে জানার জন্য পুলিশ বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় সুয়ালক লাম্বারাস্তা এলাকায় মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখান থেকে নির্মাণকাজ দেখভালকারী মো. বাবুলকে অপহরণ করা হয়েছিল। পাঁচ দিন পর অপহরণকারীরা তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ জানিয়েছেন, মো. বাবুলকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছ। তাঁর কাছ থেকে অপহরণকারীদের ব্যাপারে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। তথ্য পাওয়া গেলে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অপহরণক র ব ন দরব ন র জন য স য় লক ব ব লক
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহরণ’, ফেনী থেকে মিলল কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ
২০১৯ সালের ৭ মে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহৃত’ হয়েছিলেন কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল আহাদ (৪৬)। এরপর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরিবারের দাবি, আবদুল আহাদের মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের মুক্তিপণও দিয়েছিল তারা। তবে ফেরত পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত ছয় বছর পর গতকাল বুধবার আহাদের মরদেহ মিলেছে ফেনীতে।
পুলিশ জানায়, গতকাল দুপুরে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে আহাদের মরদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের ধারণা ছিল, আহাদ দিনমজুরের কাজ করেন। তবে তাঁর পকেটে থাকা একটি বেসরকারি ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে আসল পরিচয় পাওয়া যায়। এরপর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পুলিশ পরিবারকে খবর দেয়।
নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্র জানায়, আবদুল আহাদ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ভূইগাঁও ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মো. ইমানি মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি একটি কলেজের প্রভাষক ছিলেন। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে তিনি প্রথমে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শেষে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যোগ দেন। সেখান থেকে তিনি নিখোঁজ হন।
নিহত আহাদের ছোট বোন নাঈমা নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই চট্টগ্রামে একাই থাকতেন। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন। ২০১৯ সালের ৭ মে ভোরে তাঁর ভাবিকে মুঠোফোনে জানানো হয় ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীদের তাঁর ভাবি মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকাও দেন। তবে তাঁর ভাইকে ফেরত পাওয়া যায়নি।
নাঈমা নাসরিন দাবি করেন, তাঁর ভাই আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তবে দলীয় কোনো পদে ছিলেন না। তাঁর ভাইকে কেন অপহরণ করা হয়েছে, কেন গুম করা হয়েছে তাঁরা জানেন না। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।
লাশ ফেনীতে কীভাবে এল, জানে না পুলিশ
নিহত আবদুল আহাদের ফেনীর ছাগলনাইয়া কীভাবে এসেছে, তা আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি এত দিন আহাদ কোথায় ছিলেন, এর কোনো ব্যাখ্যাও তাঁরা দিতে পারেনি। পুলিশের দাবি, আহাদের শরীরে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কোনো কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের প্রাথমিক ধারণা।
নিহত আহাদের ভাগনে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণের ঘটনার পর তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। তবে তাঁর মামার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি চান।
জানতে চাইলে ছাগলনাইয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলম বলেন, নিহত কাস্টম কর্মকর্তার ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে ছয় বছর আগে অপহরণের যে বিষয়টি জানানো হচ্ছে, সে বিষয়ে পুলিশ খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা তাঁরা নেবেন।