বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে এবার আদালতে মামলার আবেদন করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন (তাপস)। তিনি আদালতের কাছে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন।

আজ বুধবার বরিশাল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ইকবাল হোসেনের পক্ষে মামলার আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী আজাদ রহমান। আদালতে বিচারক হাসিবুল হাসান আবেদনটি গ্রহণ করে পরবর্তী আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।

এর আগে ১৭ এপ্রিল একই আদালতে বরিশাল সিটির মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণার দাবিতে মামলার আবেদন করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। নির্বাচনের প্রায় ২২ মাস পর সৈয়দ ফয়জুল করীমের পক্ষে আদালতে আবেদনটি দাখিল করেন তাঁর আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির। আবেদনটি পরবর্তী আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন বিচারক। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার শুনানি হওয়ার কথা। এই দাবিতে কয়েক দিন ধরে বরিশালে বিক্ষোভ, আদালতের সামনে অবস্থান, পদযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

আজ বুধবার মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের নির্বাচন যেমন সুষ্ঠু হয়নি, তেমনি ২০২৩ সালের নির্বাচনেও অনিয়ম ও কারচুপির আশঙ্কা ছিল। জাপার প্রার্থী ইকবাল হোসেন এই আশঙ্কার কথা আগেই তৎকালীন নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে জানিয়েছিলেন। এরপরও নির্বাচনে সরকারি সংস্থা ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের সদস্যরা আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর পক্ষে সরাসরি কাজ করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে বহিরাগতদের এনে হোটেলে রাখাসহ ভোটকেন্দ্রে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ভোটের দিন প্রার্থী ইকবাল হোসেনকে ভয় দেখানো হয় এবং তাঁর পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। ভোটারদের ভোট দিতে না দিয়ে নিজেদের লোকেদের দিয়ে ইভিএমের বোতাম চেপে ভোট দেওয়ানো হয়। ৫০টি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও ফলাফলে অত্যধিক ভোট গ্রহণ দেখানো হয়েছিল। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বহিরাগত একজনকে ধরিয়ে দেওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মামলার আবেদনের পর ইকবাল হোসেন দাবি করেন যে ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারলে তিনি নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হতেন। এ জন্য তিনি আদালতের কাছে ফলাফল বাতিল করে তাঁকে বরিশালের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার আবেদন জানিয়েছেন।

২০২৩ সালের ১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১২৬টি কেন্দ্রের ফলাফলে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ৮৭ হাজার ৭৫২ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করীম পেয়েছিলেন ৩৪ হাজার ৩৪৫ ভোট। আর জাপার প্রার্থী ইকবাল হোসেন ৬ হাজার ৬৬৫ ভোট পেয়েছিলেন। নগরে মোট ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭৬ হাজার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইকব ল হ স ন বর শ ল স র ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া

আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় ব্যাপক সংঘাতপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেকে জয়ী ঘোষণা করেছেন ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপ্রধান সামিয়া সুলুহু হাসান। তিনি প্রায় ৯৮ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছেন।

তবে এ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রেসিডেন্ট সামিয়া তাঁর শীর্ষস্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বাচনী লড়াই থেকে বাইরে রেখেছিলেন। নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় ব্যাপক হতাহতের অভিযোগও তুলেছেন বিরোধীরা।

গত বুধবার তানজানিয়ায় ভোট গ্রহণ হয়। স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে। ফলাফলে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সামিয়া ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আজ শনিবার সামিয়ার শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচনের পরবর্তী দিনগুলোয় তানজানিয়ায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বড় বড় শহরগুলোয় রাস্তায় বিক্ষোভ হয়। সামিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে না দেওয়া এবং ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগে রাজপথে নামে মানুষ।

দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও ভোটের দিন ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার আর ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে, আগুন দেয় সরকারি ভবনে। অন্যদিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রধান বিরোধী দল চাদেমাকেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। গতকাল শুক্রবার দলটির পক্ষ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানানো হয়, নির্বাচনী সহিংসতায় প্রায় ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের দাবি, হাসপাতাল আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া তথ্য থেকে এ সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বলছে, নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী তানজানিয়ার অন্তত তিনটি শহরে ঘটা নির্বাচনী সহিংসতায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ সাবিত কম্বো শুক্রবার আল–জাজিরাকে বলেন, কর্তৃপক্ষ যথাযভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে।

মাহমুদ সাবিত আরও দাবি করেন, বিক্ষোভ দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হয়নি। সরকারের কাছে কোনো বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর তথ্য নেই। বিরোধীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এ ৭০০ জনের কথা কোথাও দেখিনি।’

তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির আকস্মিক মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তাঁর দল থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন সামিয়া।

আরও পড়ুননামিবিয়ায় প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন নান্দি নাদাইতওয়া০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আপিল বিভাগের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করলেন নেপালের প্রধান বিচারপতি
  • খুলনায় বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল, ভোলা সদরে কার্যক্রম স্থগিত
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকারযুক্ত সংবিধানই জনগণ চায়
  • খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত
  • এখন দেখছি নতুন প্রতারকের জন্ম হয়েছে: কায়সার কামাল
  • ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
  • ১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
  • তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী