সিনেমাগুলো নিয়ে এই চর্চা হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার মতো: আফজাল হোসেন
Published: 25th, April 2025 GMT
ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো নিয়ে তুমুল চর্চা হচ্ছে। প্রেক্ষাগৃহে টিকিটের জন্য দর্শকদের মাঝে হাহাকারও দেখা গিয়েছে। সিনেমাগুলো এই নিয়ে চর্চা হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার মতো বলে মন্তব্য করেছেন নন্দিত অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে সিনেমার রূপান্তর ঘটছে। চলচ্চিত্র দিয়ে দেশের পরিচিতি তৈরি হয়। দেশের নাম ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বব্যাপী। দেশ অন্য দেশের মানুষের কাছ থেকে সমীহ পেতে পারে- আর আমরা সিনেমা দেখা, বানানো ছেড়ে দিলাম। আমাদের ঝলমলে সিনেমাজগৎটা অন্ধকারে ডুবে গেলো।
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, সৌভাগ্যের কথা অন্ধকার থেকে সিনেমা আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এবারের ঈদে মুক্তি পেয়েছে চার চারটি সিনেমা। চক্কর, জংলী, দাগী এবং বরবাদ।
খুব ভালো লাগছে- ঈদের পর থেকে আজ অবধি যেখানেই যাই এই সিনেমাগুলো নিয়ে চর্চা হতে দেখি। এটা হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার মতো। ঈদের আনন্দের সাথে বহুকাল পরে আবার সিনেমার আনন্দ যুক্ত হয়েছে। এ যেনো হারিয়ে পাওয়া।
সিনেমা তো এক ধরণের স্বপ্ন রচনা। স্বপ্ন বড় হতে থাকলে মানুষও বড় হবে। ‘তারকা সিনেমার চেহারা বদলে দিতে পারে। সিনেমাও বদলে দিতে পারে তারকাকে। শাকিব খান তার উদাহরণ। এই তারকা প্রথমে নিজের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তারপর ক্রমাগত বদলে দিচ্ছেন তাঁর সিনেমাগুলোকে।’-বললেন তিনি।
এরপর যোগ করে এই নন্দিত নির্মাতা বলেন, ‘দেশটায় আরও কয়েকজন সাহসী পরিচালক থাকলে মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম, নিশোরা আমাদের চলচ্চিত্রের মহা আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারতেন। সিনেমার চেহারায় দারুণ পরিবর্তন নিশ্চয়ই আসতে পারতো।’
প্রশংসা করতে ভুলেননি এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘দাগি’ সিনেমার। সিনেমাটি দেখেছেন জানিয়ে আফজাল হোসেন বলেন, শিহাব শাহীনকে অতি চমৎকার নির্মাতা হিসাবে জানি, তাই আগ্রহ নিয়ে দাগি দেখতে যাই। নিশোকে নিয়ে বহু মহলে আলোচনা শুনি- সেজন্যেও বন্ধুবান্ধব ঠিক করে দাগি দেখবে। একসাথে গিয়েছিলাম নয়জন। সবাইকে মুগ্ধ করতে পেরেছে দাগি। হল থেকে বেরিয়ে দলেবলে রেস্তোরাঁয় খেতে গেছি, এ পুরো সময়টা দাগি নিয়ে অসংখ্য রকমের কথা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমার খুব ভালো লেগেছে। আবার আগের মতোই আমাদের দেশে তৈরি একটা সিনেমা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ সবাই হৈহৈ রৈরৈ আলাপ করেছি। শিহাব শাহীন মুগ্ধ করেছে তারা নির্মাণের মুন্সীয়ানা দিয়ে। গল্পটা এক বৈচিত্র থেকে আর এক বৈচিত্রে দৌঁড়ায়, থামে না। দৌঁড়াতেই থাকে। কি হবে এরপর, এই কৌতুহল সারাক্ষণ টিকিয়ে রাখতে পারা খুবই কঠিন কিন্তু সহজেই তা পেরেছেন শিহাব শাহীন।
নিশো চমকে দেওয়ার মতো সুবাতাস। এত বড় একটা চলচ্চিত্রের ভার কাঁধে নিয়ে দর্শকমনে বিশ্বস্ততা ধরে রেখে দৌঁড়ে চলা মোটেও সহজ কাজ ছিলনা। সিনেমার পর্দাটা অনেক বড়, সেই পর্দা জুড়ে সারাক্ষণ বড় হয়ে জুড়ে যে থাকতে পারে- সেই নায়ক।
এই সিনেমার প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীকে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। চরিত্রগুলোর উপস্থাপনা অসাধারণ। প্রেমকে নতুনভাবে হাজির করা হয়েছে আর দুই নায়িকার প্রেমময়তা যে কোন দর্শকের জন্য চমৎকার উপহার।
নিজেকে সিনেমা পাগল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আমাদেরকালে সিনেমা পাগল ছিলাম। বয়স বেড়েছে কিন্তু একের পর এক ভালো সিনেমা হতে থাকলে যৌবনের আনন্দ আবার ফিরে পেতে পারি, মনে হয়েছে। নতুন নতুন সিনেমা ঘর হোক, মানুষ সিনেমা দেখুক। নানারকম গল্পের চর্চায় মানুষ নিত্য নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারুক। এ চাওয়া বাড়াবাড়ি রকমের নয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফজ ল হ স ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।