“নারায়ণগঞ্জ থেকে শামীম ওসমান পালিয়ে গেলেও তার দোসররা নারায়ণগ‌ঞ্জে বিশৃঙ্খলা কর‌ছে। তা‌দের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের লড়াই করতে হচ্ছে। তারা ঘায়েল করার জন্য বিভিন্নভাবে  নেতাকর্মীদের বিরু‌দ্ধে অপপ্রচার ও কাল্পনিক অভিযোগ সামনে এনে বিএন‌পির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ কর‌ছে। ফ্যাসিবাদের এই দোসরদের বিরুদ্ধে গণপ্রতি‌রোধ গড়ে তুল‌তে হবে।”

রবিার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়নগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী।

অপপ্রচারের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে তি‌নি ব‌লেন, “আওয়ামী দোসরদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মী পর্যন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের শিকার হচ্ছে।”

“একইভাবে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতেও আমা‌দের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হ‌চ্ছে। আমরা এই ধরনের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূল অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দলীয়ভাবে আলোচনা ক‌রে আমরা এই ধরনের কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

ফতুল্লার চৌধুরী বাড়ীর সন্তান হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে রিয়াদ মোহাম্মদ ব‌লেন, “ফতুল্লা মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু সরকারি ও বেসরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ভূমির দাতা আমার পূর্ব পুরুষরা। আমার বাবা ছিলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও মা ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন বিএনপির নিবেদিত কর্মী।”

“গত ২৬ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রইসউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। সেখানে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভূমিদস্যু, দখলবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে; যার স‌ঙ্গে আমার কো‌নো সম্পর্কই নাই।”

 “নির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণাদিও উল্লেখ করেনি। রইস উদ্দিনকে দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসররা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে,” অভিযোগ রিয়াদ মোহাম্মদের।

তিনি বলেন, “যিনি মানববন্ধন করেছেন, তিনি ফতুল্লার কেউ নন এবং মানববন্ধনে মুষ্টিমেয় লোকের সবাই বহিরাগত এবং তারা কেউ এখানকার ব্যবসায়ী নন। মানববন্ধনকারীরা সঠিকভাবে আমার নামটিও জানেন না। যার কারণে তারা সঠিকভাবে আমার নামটিও উচ্চারণ করতে পারেননি। মূলত আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এক পক্ষ ভাড়াটে লোকজন দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ এনে একটি মানববন্ধন আয়োজন করিয়েছে।”

রিয়াদ মোম্মদের দাবি, মানববন্ধনে ফতুল্লা হোসেন ট্রেক্সটাইল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের কথা কথা বলা হয়েছে। সেই ঘটনাটি ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে ফতুল্লা রেললাইন বটতলা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ও মাদকবিরোধী একটি শান্তি মিছিল আয়োজন করে। বিএনপি ও এলাকাবাসীর সমন্বয়ে আয়োজিত সেই শান্তি মিছিলে ফতুল্লার চিহ্নিত আওয়ামী পরিবার ও গডফাদার শামীম ওসমানের অন্যতম সহযোগী যুবলীগ ক্যাডার আক্তার এবং সুমনের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা ও গুলি বর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, “ফতুল্লা থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন, যুবদল নেতা মিঠু, রাহাত চৌধুরীসহ ১৫/২০ জন সাধারণ মানুষ সেই ঘটনায় গুরুতর আহত হন। তাতে হোসেন টেক্সটাইল নামে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা করা হয়। আমি সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে, সেই মামলায় অবশ্যই আমাকেও আসামি করা হতো।”

হত্যাকান্ডের এক দিন পর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী ও হোসেন টেক্সটাইলের দখলদার আক্তার ও সুমনসহ ১১ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান রিয়াদ মোহাম্মদ।  

পুলিশ সেই মামলার ভিত্তিতে আক্তার, সুমনের বাড়ির কেয়ারটেকারসহ ৭-৮ জনকে গ্রেপ্তার করেন জানিয়ে রিয়াদ মোহাম্মদ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেই হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ এনে আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

লিখিত অভিযোগে রিয়াদ বলেন, সন্ত্রাসী আক্তার, সুমন ও তাদের পরিবার বিগত দিনে ৮-১০টি হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। এর মধ্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন মেম্বার, ডাইং ব্যবসায়ী সোলেমান এবং নজরুল হত্যাকাণ্ড অন্যতম।

তি‌নি বলেন, “বর্তমানে দেশে কোন দলীয় সরকার নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগে কোন সত্যতা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে কোনো না কোনো লিখিত অভিযোগ জমা থাকতো এবং আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে বিগত দিনে এই ধরনের কোনো অভিযোগ আইনশৃঙ্খল বাহিনীর কাছে নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কিঞ্চিত সত্যতা থাকলে যৌথবাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থা অবশ্যই অবগত থাকতেন এবং আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন।“

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, সহ-সভাপতি হানিফ কবির, সুমন আকবর, যুগ্ম সম্পাদক আনিস রহমান,ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকী, সহ-প্রচার সম্পাদক কামাল আহম্মেদ, মিলন টালি, এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির চৌধুরী।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র য় দ ম হ ম মদ আম র ব র দ ধ ব এনপ র স র র জন ত কর ম ব যবস আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’

গাড়ি চাপা দিয়ে সড়কে নির্মমভাবে সাইক্লিস্ট ওসমান গণিকে (১৯) হত্যা করেছে। ধাক্কা দেওয়ার পর ওসমানের মাথার ওপর গাড়ি চালিয়ে চলে যান আসামি। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, হত্যা। এ হত্যার বিচার হতে হবে। এখন আসামির বয়স নিয়ে লুকোচুরি করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম নগরের বড়পোল এলাকায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত সাইক্লিস্ট ওসমান হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনের এসব কথা বলেন উপস্থিত বক্তারা। আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় নগরের জামালখান এলাকায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধন আয়োজন করে চট্টগ্রাম সাইক্লিং কমিউনিটি। মানববন্ধন থেকে আসামির শাস্তির দাবি জানানো হয়।

এর আগে গত বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বড়পোল এলাকার সিলভার বেলস স্কুলের সামনে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত হন ওসমান গণি। তিনি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পূর্ব বাইশারী গ্রামের মোহাম্মদ নাছিরের ছেলে। এ ঘটনায় বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সড়ক পরিবহন আইনে হালিশহর থানায় মামলা করেন নিহত ব্যক্তির মামা আবুল কাশেম।

মামলায় প্রাইভেটকার চালক তানিম হোসেনকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি নগরের হালিশহর এল ব্লক এলাকার এরশাদ হোসেনের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, তানিম তাঁর বাবার গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন সময় সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতেন। কিন্তু তাঁর কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। শুরুতে তাঁর বয়স ১৬ থেকে ১৭ বলা হলেও মামলার এজাহারে তাঁর বয়স ১৯ উল্লেখ করা হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত ওসমানের বাবা মোহাম্মদ নাছির, মামা আবুল কাশেম, বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল, সদস্য সুবীর মিত্র, জাতীয় পর্যায়ের সাইক্লিস্ট রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া সারা দেশের অন্তত ১০টি সাইক্লিং গ্রুপের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে ওসমানের বাবা মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের পরিবার ভেঙে পড়েছে। গ্রামের মানুষ, এলাকার লোকজন সবাই শোকাহত। ছেলে যে বাসায় কেয়ারটেকার ছিল সেখানে বাজার-সদাই সে করতে। সেদিনও সে একই উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছিল।’

অন্য বক্তারা বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হয়? আবার তাঁকে এখন শিশু বানানো হচ্ছে। বাবার টাকা থাকলেই কী হত্যাকারীরা বের হয়ে যাতে পারে? আসামি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক, তাঁকে শিশু বানিয়ে তাঁর বাবা ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাঁর ফেসবুকে তাঁর বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ভিডিও সবাই দেখেছেন। বারবার প্রশ্রয় পেয়ে তিনি এমন বেপরোয়া হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
  • ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • পরিবার নিয়ে চীন ভ্রমণে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্যরা
  • নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে : আবদুল্লাহ
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
  • ‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’
  • নারায়ণগঞ্জে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি গ্রহন
  • রূপগঞ্জে সাংবাদিকতায় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত