চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন ব্যাট-বলের লড়াই জমে উঠল বেশ ভালোভাবেই। দিনের তিন সেশন কাটল ভিন্ন আমেজে। সকালের সেশনে জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশ দুই দলের মুখেই হাসি। দ্বিতীয় সেশনে অতিথিদের একচ্ছত্র আধিপত্য। শেষটায় বাংলাদেশের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। তাতে প্রথম দিনের লড়াইটাই হয়ে উঠল দারুণ। যে লড়াইয়ে দিন শেষে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে স্বস্তির পরশ।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে দিন শেষ করলো জিম্বাবুয়ে। তাইজুল ইসলামের ৫ ও নাঈম হাসানের ২ উইকেটে বাংলাদেশ প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে। স্পিন ঘূর্ণিতেই পরাস্ত হয়েছে অতিথিরা। ২২ গজে বল ঘোরায় দিনের শেষটা বাংলাদেশ নিজেদের করে নিতে পেরেছে। ৯০ ওভারের খেলা শেষে মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে প্রত্যেকের মুখেই ছিল হাসি। যে হাসির উৎস, উইকেটে বল ঘোরা। দিনের শেষটা এতো সুন্দর হবে, এতোটা দারুণভাবে রাঙাবে তা কল্পনা করতে পারেনি কেউ।
নতুন বলে সকালের সেশনে বাংলাদেশ ২ উইকেট তুলে নিতে পারলেও ৩.
আরো পড়ুন:
চাপহীন ক্রিকেটে সিরিজ জিততে চায় জিম্বাবুয়ে
চট্টগ্রামে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় বাংলাদেশের
তৃতীয় উইকেটে জিম্বাবুয়ে প্রতিরোধ পায় নিক উইলচ ও শন উইলিয়ামসের ব্যাটে। ২৩০ বলে ৯০ রানের জুটি গড়েন তারা। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে তারা জুটি গড়েন। জুটি টেনে নেন চা বিরতির পর পর্যন্ত। ফিফটি ছোঁয়া দুই ব্যাটসম্যান যেভাবে বোলারদের কড়া শাসন করলেছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল আজই বড় কিছু করে ফেলবেন। কিন্তু চা-বিরতির পর সব ছন্নছড়া।
শুরুতে অবশ্য বাংলাদেশের কৃতিত্ব ছিল না। উইলচ রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে আসেন ড্রেসিংরুমে। ১৬২ রানে তিনি যখন ড্রেসিংরুমে ফেরেন তারপরই জিম্বাবুয়ে শিবির এলোমেলো হওয়া শুরু। সেখান থেকে ৫৫ রান যোগ করতেই ৭ উইকেট হারায় তারা। নাঈম হাসান ফেরান দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আরভিন ও উইলিয়ামসকে। আরভিন ৩১ বলে ৫ করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ১৬৬ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬৭ রান করা উইলিয়ামস মিড উইকেটে তানজিমের তালুবন্দি হন।
এরপর তাসের ঘরের মতো ভাঙতে থাকে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপ। তাইজুল একে একে তুলে নেন আরো ৪ উইকেট। পূর্ণ করেন নিজের ফাইফার। জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরাও ধৈর্য দেখাতে পারেননি। বড় শট, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বিলিয়ে আসেন নিজেদের উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৬তমবারের মতো তাইজুল পেলেন ৫ উইকেট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আর ২ উইকেট পেলে তাইজুল উইকেটের ফিফটি ছাড়িয়ে যাবেন।
তাফাদজওয়া সিগা ১৮ ও ব্লেসিং মুজারাবানি ২ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। তাদের ব্যাটে জিম্বাবুয়ে কতদূর যায় সেটাই দেখার। বাংলাদেশের দারুণ প্রত্যাবর্তনে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে খুব বেশিদূর যেতে পারবে না। বোলাররা লড়াইয়ে রাখায় ব্যাটসম্যনাদের দায়িত্বটাও বেড়ে গেল। তারা কতটা সেই দায়িত্ব সামলাতে পারে দেখার।
সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ইজ ল উইক ট প রথম য টসম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক
রাগ করে কথা বন্ধ করেছিল প্রেমিকা। রাগ ভাঙিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে, একটু কথা বলতে ইউটিউব থেকে বোমা তৈরিত কৌশল শিখেছিল প্রেমিক। বোম ফাটার শব্দে যদি প্রেমিকা বেরিয়ে আসে... এই আশায়। এক্সপার্টের মতো বানিয়েও ফেলে বোমা। কিন্তু বোমা ফাটার তীব্র সেই শব্দে আতঙ্কিত হয়ে প্রেমিক ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যায় নিজেরাই।
গত ২৮ অক্টোবর, ছট পূজার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি এক আবাসিক এলাকা গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে কেঁপে উঠে। বোমা মারার সেই ঘটনা দুষ্কৃতী আক্রমণ ভেবে লেগেছিল রাজনৈতিক রং, তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনাম। স্বাভাবিকভাবেই দুষ্কৃতীদের ধরতে চাপে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু তদন্তে প্রেমিক প্রেমিকার রাগ ভাঙানোর তথ্যে তদন্ত যেন মোড় নিয়েছে আশ্চর্যের এক প্রেমের গল্পে।
আরো পড়ুন:
বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ভারতীয় পাসপোর্টের অবনতি কেন?
জঙ্গি সন্দেহে ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি ‘মুফতি মাসুদ’
পুলিশ জানায়, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড মালিরবাগান খামারডাঙা এলাকায় একটি বাড়িতে বোমা ছোঁড়া হয়। বাড়িটির দেয়ালে লাগে বোমা, জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বাড়িটির বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু কোনো সূত্র পাওয়া যায় না। এরপর এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি সিসিটিভির ফুটেজে একটি বাইকের ছবি দেখে তার সন্ধান শুরু করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মালিরবাগান এলাকায় যেখানে বোমাবাজি হয়েছিল সেখানে এক তরুণীর সঙ্গে চাঁপদানীর স্থানীয় যুবক সাগর মালিকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমিক প্রেমিকার দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছিল না। এর মধ্যেই প্রেমিক বন্ধুদের মারফত জানতে পারে প্রেমিকা অন্য এক যুবকের সঙ্গে মেলামেশা করছে। এদিকে সাগরের ফোন ধরা বন্ধ করে দেয় তরুণী।
কী করে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করা যায় সেটাই ভাবতে থাকে প্রেমিক। এরপরেই বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখা করার বুদ্ধি বের করে সাগর। ইউটিউব দেখে বেশ কয়েক ধরনের পটকার উপদান দিয়ে বোমা বানায়। সেটি ফাটানোর পরিকল্পনা করা হয় প্রেমিকার বাড়ির পাশে।
বোমা ফাটার আওয়াজে তরুণী প্রেমিকা যদি বেরিয়ে আসে তাহলে তার সঙ্গে কথা বলবে- এই উদ্দেশ্য নিয়ে ছট পূজার রাতে চার বন্ধু পৌঁছে যায় মালিরবাগান এলাকায়। বোমা ছোঁড়ে একটি বাড়ির দেওয়ালে। এতটাই জোরে শব্দ হয় যে তারা নিজেরাই ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে পুলিশ ওই তরুণীর সঙ্গে সাগরের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তার খোঁজ শুরু করে। পাশাপাশি বাইকের নম্বর দেখে খোঁজ শুরু করে। সাগর এবং তার বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, তারা ঘটনার পর থেকে আর বাড়িতে থাকছিল না। ঘটনার পর চার বন্ধুই কল্যাণীতে পালিয়ে গিয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার পুলিশ তাদেরকে ব্যারাকপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আটক সাগর মালিক, প্রিন্স যাদব, প্রণীত পাল, আয়ুস যাদব, চারজনেরই বয়স ১৮-২০ বছর।ইতিমধ্যেই তাদের শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়েছে। আরো জিজ্ঞাসাবাদ জন্য পুলিশ তাদের রিমান্ডে নিয়েছে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ