‘তোর সময় শেষ’ লেখা চিঠির সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে সাংবাদিককে হুমকি
Published: 29th, April 2025 GMT
রংপুরে এক সাংবাদিককে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কাফনের কাপড় ও চিঠি পাঠিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিঠিতে তাঁকে রংপুর বা মিঠাপুকুরের সুবিধামতো জায়গায় পেলে ‘খতম’ করার কথা বলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এই হুমকির পার্সেলটি পান বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান।
মাহমুদুল হাসান বেসরকারি টেলিভিশন মাইটিভির রংপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ছোট রসুলপুর এলাকায়। পুলিশ বলছে, কে বা কারা কোন উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে ৫টার দিকে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের রংপুরের পীরগঞ্জ শাখা থেকে ফোন করে জানানো হয় তাঁর নামে দুটি পার্সেল এসেছে। দুটির প্রেরক পীরগঞ্জ উপজেলা সমকালের প্রতিনিধি মাজহারুল আলম (মিলন)। একটিতে প্রেরকের ঠিকানা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও অন্যটিতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উল্লেখ করা হয়েছে। এতে তাঁর সন্দেহ হয়। তখন ঘটনাস্থলে যান মাজহারুল আলমও।
মাহমুদুল হাসান বলেন, পার্সেল দুটিতে দুটি কাফনের কাপড়, দুটি চিঠি ও গত বছর পীরগঞ্জের অবৈধ ইটভাটা ও অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে তাঁর দেওয়া ফেসবুক পোস্টের স্ত্রিনশটের প্রিন্ট কপি ছিল। চিঠিতে লেখা, ‘মাহমুদুল, অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি তোর কারণে। এবার আমার খেলা শুরু, ঠিকমতো পছন্দের মতো খাবার খেয়ে নে হারামখোর। তোর সময় শেষ। রংপুর বা মিঠাপুকুর সুবিধামতো জায়গায় কোথাও পেলে খেল খতম। অপেক্ষার প্রহর গণনা শুরু।’ পার্সেল দুটি গোবিন্দগঞ্জে বুকিং দেওয়া হয়েছে বলে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস থেকে জানানো হয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের কারণে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে অভিযোগ করে মাহমুদুল হাসান বলেন, তিনি নিদিষ্ট করে কাউকে দায়ী করছেন না। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তিনি পীরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
সাংবাদিক মাজহারুল আলম বলেন, তাঁরা দুজন পীরগঞ্জের নানা অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন করেছেন। এ জন্য দুজনকে টার্গেট করে এই চিঠি দেওয়া হতে পারে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, কে বা কারা এই পার্সেল পাঠিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ
জীব ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে বনজীবী থেকে শুরু করে পর্যটক, কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবন ঘুরেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী।
গত শুক্রবার তারা ভ্রমণে যান। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়িতে অবস্থানকালে নিজেদের ছবি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ নিয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সাবেক নেতা আমিনুর রহমান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এডিসি পদমর্যাদার একজনের মাধ্যমে বন বিভাগের কাছ থেকে ১০ জনের অনুমতি মেলে। ওই দলে তিনি যুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর সঙ্গে ট্রলারে উঠে পড়েন। এ সময় তাদের আর নামিয়ে দেওয়া যায়নি।
উপসচিব বা তাঁর জন্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে যাওয়া উচিত ছিল কিনা– জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলার তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’ কথা বলার জন্য ওই উপসচিবের নাম ও যোগাযোগ নম্বর চাইলে তিনি দেননি।
এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের জিয়াউর রহমান বলেন, এক উপসচিবের একান্ত সচিব (পিএস) পরিচয়ে ১০ জনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া হয়। অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো করে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই সঙ্গে কয়েক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুন্দরবনে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের এমন আবদারে তারা অসহায় হয়ে পড়েন।