সিদ্ধিরগঞ্জে ঝুট নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি
Published: 3rd, May 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে একটি গার্মেন্টস এর ঝুট নামানোকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩ মে) রাত সাড়ে ৮টার সময় সিদ্ধিরগঞ্জপুলস্থ এম এস টাওয়ারে অবস্থিত উক্ত গার্মেন্টস এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
ঘটনাস্থলে থাকা কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জপুলস্থ একটি গার্মেন্টস এর ঝুট নামানোকে কেন্দ্র করে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের সমর্থক ও বর্তমান জেলা বিএনপির আহ্ববায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সমর্থক গাজী মনিরের সাথে প্রথমে কথাকাটাকাটির ঘটনা ঘটে। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।
এতে বিএনপি নেতা গাজী মনিরসহ উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়। খবর পেয়ে গাজী মনিরের সমর্থক কিশোর গ্যাং লিডার করিম বাদশাসহ অর্ধশতাধিক পালিত সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে এলে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা জানান, যে গার্মেন্টস এর ঝুট নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে সেটি নাসিক ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। বিএনপি নেতা গাজী মনিরের বাসা নাসিক ১নং ওয়ার্ডে। সে নাসিক ১ নং ওয়ার্ড থেকে এসে ৪ নং ওয়ার্ডের ঝুট নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে ঘটনার সূত্রপাতের সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও বলেন, জেলা বিএনপির আহ্ববায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ নাকি তাকে এই গার্মেন্টস এর ঝুট নামানোর অনুমতি দিয়েছে তাই তিনি এখানে এসেছেন। তবে খবর পেয়ে গনমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে উভয় পক্ষের বিএনপি নেতাকমীরা জানান নিজেদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে এটা আমরা বসে মিমাংসা করে নিবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন সমর্থক রাশেদ জানান, আমাদের কোনো লোক সেখানে যায়নি। আমাদের লোকজনদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা গাজী মনির জানান, বেশ কিছুদিন ধরে শুনেছি কে বা কারা আমার নাম জড়িয়ে মিথ্যে অপবাদ ছড়াচ্ছে, আমি নাকি গার্মেন্টস এর ঝুটের গোডাউন তালা দিয়ে রেখেছি। বিষয়টি আমাদের নেতা অধ্যাপক মামুন মাহমুদ আমাকে জানালে আমি আজ ঘটনাস্থলে যাই।
সেখানে গেলে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের লোকজন আমার উপর হামলা করে। আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান এখনো কোনো সিন্ধান্ত হয়নি সুস্থ হয়ে পরে সিন্ধান্ত নিবো।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ ব এনপ র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলে সংগীত শিক্ষক পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাল উদীচী
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগব্যবস্থা বাতিল করার সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতা, মানবিক বোধ, দলগত চেতনা ও শারীরিক-মানসিক ভারসাম্যপূর্ণ বিকাশের জন্য সংগীতচর্চা, শিল্পকলা ও ক্রীড়া শিক্ষা মৌলিকভাবে প্রয়োজন।
বিবৃতিতে উদীচী নেতারা আরও বলেন, পৃথিবীর সব উন্নত দেশেই শিশুদের যথাযথ মানসিক বিকাশ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য সংগীত, শিল্পকলা ও শরীরচর্চাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষাকে কেবল পরীক্ষার খাতা ও পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা মানে ছাত্রছাত্রীদের মনন ও আবেগের জগৎকে সংকীর্ণ করে দেওয়া। সংগীত ও শিল্প মানুষকে মুক্তভাবে ভাবতে শেখায়, অনুভবের শক্তিকে জাগিয়ে তোলে এবং সহমর্মিতা তৈরি করে; অন্যদিকে ক্রীড়া শিক্ষা শিশুর আত্মবিশ্বাস, শৃঙ্খলা, নেতৃত্ব, দলগত সমন্বয় ও শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে। এই দুই বিষয় বাদ দিয়ে বা অবমূল্যায়ন করে প্রাথমিক শিক্ষার যে কাঠামো তৈরি করা হবে, তা হবে বিকলাঙ্গ, সংকীর্ণ ও মানবিকতাহীন।
বাংলাদেশ যে অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনার ওপর প্রতিষ্ঠিত, এই সিদ্ধান্ত সেই চেতনার পরিপন্থী উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, শিশুদের শিল্প ও ক্রীড়া শিক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে দিলে তার ভেতরের সৌন্দর্যবোধ, কল্পনাশক্তি, মানবিক অনুভূতি ও সৃজনশীলতার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। এর প্রভাব পড়বে সমাজ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ চরিত্রে। একটি প্রগতিশীল, মুক্তমনা, নান্দনিকতায় সমৃদ্ধ সমাজ গড়তে হলে প্রাথমিক স্তর থেকেই শিশুকে শিল্প-সংস্কৃতি-খেলাধুলার চর্চার সুযোগ দিতে হয়। রাষ্ট্র যদি সেই দরজা বন্ধ করে দেয়, তবে তা হবে জাতিকে পশ্চাৎ–মুখী করে দেওয়ার সমান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা ছোটবেলা থেকেই সুর ও সংগীতসাধনার মধ্য দিয়ে বড় হয়, তাদের মধ্যে শুভবোধ সদা জাগ্রত থাকে। তারা অসুর বা মন্দ কোনো কাজের দিকে ধাবিত হয় না। সুরের প্রতি আকর্ষণ মানুষের জৈবিক বিষয়। আবহমান কাল ধরে বাংলার পথে–প্রান্তরে হাজারো রকম সংগীতের চর্চা হয়ে আসছে এবং সংগীতচর্চা বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। তাই এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করা এবং সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় পুনর্বহাল করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে উদীচী।