ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বেশ কিছু আসন থেকে নির্বাচন করতে চান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এসব আসনে সমঝোতার বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে তাঁদের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে ওই সব আসনের বেশির ভাগে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং দুই মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের পছন্দের আসনও রয়েছে।

এনসিপির নেতারা বলছেন, দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুর–৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য কাজ করছেন। মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পছন্দের আসন ঢাকা–১৮ অথবা চাঁদপুর–৫। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ঢাকা-৯ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়–১ আসন থেকে আর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা–৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী–৬ আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে এনসিপির আলোচিত এসব নেতার আসনের মধ্যে শুধু ঢাকা–৯ ও ঢাকা–১৮ আসন ছাড়া সবগুলোতেই প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। যে দুটি আসনে বিএনপি প্রার্থী দেয়নি, সেগুলো এনসিপির প্রার্থীদের জন্য কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এনসিপির আরও অর্ধশতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। তাঁদের মধ্যে মনিরা শারমিন নওগাঁ-৫, সারোয়ার তুষার নরসিংদী–২, আতিক মুজাহিদ কুড়িগ্রাম-২, আবদুল্লাহ আল আমিন নারায়ণগঞ্জ- ৪, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ সিরাজগঞ্জ-৬, আশরাফ উদ্দীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও জয়নাল আবেদীন কুমিল্লা-১০ আসনে প্রার্থী হতে চান।

ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে আছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তাঁরা সরাসরি এনসিপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হলেও দলটির বিভিন্ন সিদ্ধান্তে প্রভাব রাখেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এনসিপি সূত্র বলছে, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা–১০ আসনে নির্বাচন করতে পারেন আসিফ মাহমুদ। সেটা এনসিপির মনোনয়নে হতে পারে, স্বতন্ত্রভাবেও হতে পারে। আর বিএনপির সঙ্গে বোঝাপড়া হলে মাহফুজ আলম নির্বাচন করতে পারেন লক্ষ্মীপুর–১ আসন থেকে।

বিএনপি ঢাকা–১০ ও লক্ষ্মীপুর-১ আসন ফাঁকা রেখেছে। তবে সেটি এই দুই ছাত্র উপদেষ্টার জন্যই কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অবশ্য লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বাংলাদেশ এলডিপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সেলিমকে সবুজ সংকেত দিয়েছে দলটি।

জানতে চাইলে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় স্বার্থে অবস্থানগত ঐক্য হলে ফ্যাসিবাদবিরোধী যেকোনো দলের সঙ্গে এনসিপির নির্বাচনী সমঝোতা হতে পারে। তবে এসব বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। এনসিপি প্রার্থী তালিকা তৈরি করছে। শিগগিরই এই তালিকা প্রকাশ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব আসন থ ক এনস প র ইসল ম আখত র ১ আসন আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মাসুদুজ্জামানের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শনী

ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্মভিত্তিক প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ-এর উদ্যোগে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

প্রদর্শনীর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেন, “জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে হাজারো শিশু, কিশোর ও ছাত্রজনতা হত্যা করা হয়েছে।

২০০৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী খুন-গুমের শিকার হয়েছেন। এখন সারাদেশে একটাই দাবি—গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে, আর সেই গণতন্ত্রের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাচাই-বাছাইয়ের পর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মাধ্যমে ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান মাসুদকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এজন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞ।”

বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান, “বিভেদ ও বিভ্রান্তি ভুলে গিয়ে আসুন, আমরা সবাই মিলে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করি।”

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সদস্য মো. ফারুক হোসেন, অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, মাহাবুব উল্লাহ তপন, মো. আলমগীর হোসেন, সহিদুল ইসলাম রিপন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, মনোয়ার হোসেন শোখন, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইমরুল কায়েস রুমেল, জাকির হোসেন, মাহবুবুর রহমান জুলহাস, জহিরুল ইসলাম হারুন, মহিলা দল নেত্রী সাজেদা খাতুন মিতা, বিএনপি নেতা সরকার আলম, সাবেক ছাত্রদল নেতা জয়নাল আবেদীন, ছাত্রদল নেতা আরফিন তায়েফ, এম এ হানিফ, ও মোয়াজ্জেম হোসেন সাগর প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ