ত্রিভুজ প্রেমের জেরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যেখানে মূল ভূমিকা রেখেছে জোবায়েদের ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপির) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো.

নজরুল ইসলাম পিপিএম এবং লালবাগ বিভাগের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি।

আরো পড়ুন:

জোবায়েদ হত্যা: ছাত্রী বর্ষাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যে কারণে নবজাতককে খালে ফেললেন মা

প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, “এটি একটি ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা। বর্ষা মেয়েটি চালাক, দুই দিকেই সম্পর্ক বজায় রাখত। ঘটনাটি অনেকটা মিন্নি ঘটনার কাছাকাছি।”

তিনি বলেন, “নিহত জুবায়েদ হোসেন (২৫) গত ১ বছর ধরে বার্জিস শাবনাম বর্ষাকে (১৯) প্রাইভেট পড়াতেন। ৪ মাস আগে বর্ষা জুবায়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কিন্তু এর আগে বর্ষার সঙ্গে অভিযুক্ত মাহির রহমানের ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

“জুবায়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর বর্ষা মাহিরকে জানায়, জোবায়েদকে না সরালে তোমার কাছে ফিরতে পারব না। এরপর বর্ষার প্ররোচনায় মাহির ও তার বন্ধু ফারদিন আহমেদ আয়লান জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে,” -বলেন নজরুল ইসলাম।

হত্যার সময় বর্ষা ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিল এবং সবকিছু নিজ চোখে দেখেছে জানিয়ে ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি বলেন, “ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পরও জোবায়েদ বেঁচে ছিলেন। বাঁচার জন্য দোতলায় উঠে যান। তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে থাকা বর্ষাকে দেখে জোবায়েদ বলেন, আমাকে বাঁচাও। কিন্তু বর্ষা জবাবে বলেন, ‘তুমি না মরলে আমি মাহীরের হব না।’ এরপর বর্ষা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।”

পুলিশের তথ্য মতে, ঘটনার দিন বর্ষা ফোনে জোবায়েদের অবস্থান জেনে মাহিরকে জানায়। পরে আরমানিটোলার একটি ভবনের নিচে দেখা করতে আসে জোবায়েদ। সেখানে মাহির ও আয়লান তার সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মাহির জোবায়েদের গলায় ছুরি চালায়।

রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই জোবায়েদের মৃত্যু হয়। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তিনজনই।পুলিশ পরে অভিযান চালিয়ে বর্ষা, মাহির ও আয়লানকে গ্রেপ্তার করে।

নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত মঙ্গলবার বংশাল থানায় তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আরো পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

জুবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ছ ত রদল ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

নেতৃত্ব হারাতে পারেন রিজওয়ান, কে হবেন পাকিস্তানের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক

গত বছরের অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে পাশে বসিয়ে তাঁকে নতুন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ঘোষণা করেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি।

সেই রিজওয়ান এ বছরের অক্টোবরে মুদ্রার অন্য পিঠ দেখতে যাচ্ছেন। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডের নেতৃত্বও হারাতে পারেন রিজওয়ান।

বর্তমানে নিজেদের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলছে পাকিস্তান। দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু ২৮ অক্টোবর। এরপর ৪ নভেম্বর শুরু ওয়ানডে সিরিজ। এ মুহূর্তে তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক দিয়ে চলছে পাকিস্তান। টেস্টে শান মাসুদ, টি-টোয়েন্টিতে সালমান আলী আগা এবং ওয়ানডেতে মোহাম্মদ রিজওয়ান।

কিন্তু সম্প্রতি পিসিবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজের জন্য অধিনায়ক এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। এতেই রিজওয়ানের অধিনায়কত্ব ধরে রাখা নিয়ে শঙ্কা জেগেছে।

ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামীকাল সোমবার প্রধান কোচ মাইক হেসনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে পিসিবির নির্বাচক কমিটি। সেখানেই নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক বেছে নিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

গত বছরের অক্টোবরে সীমিত ওভারের দুই সংস্করণের নেতৃত্ব পেলেও নভেম্বরেই টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব হারান রিজওয়ান। এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের নেতৃত্বে খেলা চার টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই হেরে যায় পাকিস্তান। এরপর তিনি এ সংস্করণের দল থেকেই বাদ পড়েন।

তবে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল রিজওয়ানের। অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা—তিন দেশেই তাঁর অধিনায়কত্বে গত বছর ওয়ানডে সিরিজ জেতে পাকিস্তান।

কিন্তু বছর ঘুরতেই রিজওয়ানের ভাগ্যও যেন ঘুরে যায়। ২০২৫ সালে পাকিস্তান এখনো কোনো ওয়ানডে সিরিজ বা টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি। এর মধ্যে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভরাডুবি পাকিস্তান সমর্থকদের হতাশা আরও বাড়িয়েছে।

যদিও অধিনায়ক হওয়ার পর ওয়ানডেতে রিজওয়ানের ব্যাটিং গড় (৪১.৬৬) বেড়েছে। কিন্তু তা দলের কোনো কাজে আসছে না বলেই হয়তো তাঁকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে পিসিবি।

এখন প্রশ্ন হলো, রিজওয়ানকে সরিয়ে দেওয়া হলে পাকিস্তানের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হবেন কে? আলোচনায় আছে তিনটি নাম—বাবর আজম, শাহিন আফ্রিদি ও সালমান আলী আগা।

বাবর আজম

পাকিস্তানের পাঁচ অধিনায়কের একজন বাবর আজম, যাঁর নেতৃত্বে ওয়ানডেতে ৬০ শতাংশের বেশি ম্যাচ জিতেছে দল। সেই বাবর আজমকে আবারও এ সংস্করণের নেতৃত্বে ফেরাতে পারে পিসিবি।

কিন্তু বাবর রাজি হবেন কি না, সেটাই প্রশ্ন। কারণ, এর আগে দুবার স্বেচ্ছায় নেতৃত্ব ছেড়েছেন এই তারকা ব্যাটসম্যান। প্রথমবার ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর। ২০২৪ সালের মার্চে তাঁকে নেতৃত্বে ফেরানো হয়। কিন্তু অক্টোবরে আবারও অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।

তবে বাবরকে নেতৃত্বে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ব্যাটিং ফর্ম পিসিবিকে ভাবাতে পারে। ওয়ানডেতে তিনি সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছেন প্রায় ২৬ মাস আগে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে খেলা সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচের দুটিতেই এক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েছেন।

পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে বাবর আজম

মোট ম্যাচ ৪৩
পাকিস্তানের জয় ২৬
পাকিস্তানের হার ১৫
টাই
ফল হয়নি
শতকরা জয় ৬০.৪৭%

শাহিন আফ্রিদি

পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক শাহিন আফ্রিদি। তাঁর নেতৃত্বে রেকর্ড তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লাহোর কালান্দার্স।

কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা খুব বেশি নেই আফ্রিদির। গত বছর তাঁর নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড সফরে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের চারটিতেই হেরেছে পাকিস্তান। সেই সিরিজে ব্যর্থ হওয়ার পরই তাঁর অধিনায়কত্ব চলে যায়।

তবে সম্প্রতি দারুণ ছন্দে থাকায় আফ্রিদিকে আরেকবার অধিনায়ক করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে পিসিবি। তাঁর আসল কাজ বোলিং হলেও ব্যাটিংয়েও তিনি বেশ উন্নতি করেছেন।

২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের বেশির ভাগ ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার সিমিং কন্ডিশনে। দলের প্রধান পেসার হওয়ায় আফ্রিদি যেহেতু ‘অটো চয়েজ’, তাই বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তাঁকে এখনই নেতৃত্বে আনতে পারে পিসিবি।

পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে শাহিন আফ্রিদি

মোট ম্যাচ
পাকিস্তানের জয়
পাকিস্তানের হার
শতকরা জয় ২০%

সালমান আলী আগা

তিন সংস্করণেই পাকিস্তান দলের নিয়মিত মুখ সালমান আলী আগা। এ বছরের শুরু থেকেই তিনি টি-টোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁকে মোটামুটি সফলই বলা চলে।

বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পাশপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আফগানিস্তানকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজেও দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সম্প্রতি তাঁর নেতৃত্বেই এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে পাকিস্তান।

মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসা সালমান স্পিন বোলিংটাও খারাপ করেন না। যদিও আফ্রিদির মতো তাঁরও ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা নেই। তবে পিসিবি যেহেতু তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক নীতি থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে, তাই সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেই সালমানকে নেতৃত্ব দেওয়া হতে পারে।

পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে সালমান আলী আগা

মোট ম্যাচ ৩০
পাকিস্তানের জয় ১৭
পাকিস্তানের হার ১৩
শতকরা জয় ৫৬.৬৭%

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুরে কাঠমিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ পরিবারের 
  • মাদারীপুরে আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তি হত্যা মামলার রায় আজ
  • শান মাসুদের ব্যাটে প্রথম দিন এগিয়ে পাকিস্তান
  • মান্ধানা সেঞ্চুরি পাননি, ভারতও জেতেনি, ৪ রানের জয়ে ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে
  • নেতৃত্ব হারাতে পারেন রিজওয়ান, কে হবেন পাকিস্তানের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক
  • সৈয়দ আব্দুল হাদীর জীবনের গান
  • ২২৩ দিন পর ভারতের জার্সিতে ফিরে ০ রানে আউট কোহলি
  • ওমান থেকে ফিরল ৭ প্রবাসীর মরদেহ, আজ জানাজা
  • কৃত্রিম হাত খুলে যাওয়া আতিকুলের বাসায় নাহিদ ইসলাম