‘তুমি না মরলে আমি মাহীরের হব না’, বলেন বর্ষা
Published: 21st, October 2025 GMT
ত্রিভুজ প্রেমের জেরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যেখানে মূল ভূমিকা রেখেছে জোবায়েদের ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপির) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো.
আরো পড়ুন:
জোবায়েদ হত্যা: ছাত্রী বর্ষাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
যে কারণে নবজাতককে খালে ফেললেন মা
প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, “এটি একটি ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা। বর্ষা মেয়েটি চালাক, দুই দিকেই সম্পর্ক বজায় রাখত। ঘটনাটি অনেকটা মিন্নি ঘটনার কাছাকাছি।”
তিনি বলেন, “নিহত জুবায়েদ হোসেন (২৫) গত ১ বছর ধরে বার্জিস শাবনাম বর্ষাকে (১৯) প্রাইভেট পড়াতেন। ৪ মাস আগে বর্ষা জুবায়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কিন্তু এর আগে বর্ষার সঙ্গে অভিযুক্ত মাহির রহমানের ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
“জুবায়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর বর্ষা মাহিরকে জানায়, জোবায়েদকে না সরালে তোমার কাছে ফিরতে পারব না। এরপর বর্ষার প্ররোচনায় মাহির ও তার বন্ধু ফারদিন আহমেদ আয়লান জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে,” -বলেন নজরুল ইসলাম।
হত্যার সময় বর্ষা ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিল এবং সবকিছু নিজ চোখে দেখেছে জানিয়ে ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি বলেন, “ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পরও জোবায়েদ বেঁচে ছিলেন। বাঁচার জন্য দোতলায় উঠে যান। তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে থাকা বর্ষাকে দেখে জোবায়েদ বলেন, আমাকে বাঁচাও। কিন্তু বর্ষা জবাবে বলেন, ‘তুমি না মরলে আমি মাহীরের হব না।’ এরপর বর্ষা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।”
পুলিশের তথ্য মতে, ঘটনার দিন বর্ষা ফোনে জোবায়েদের অবস্থান জেনে মাহিরকে জানায়। পরে আরমানিটোলার একটি ভবনের নিচে দেখা করতে আসে জোবায়েদ। সেখানে মাহির ও আয়লান তার সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মাহির জোবায়েদের গলায় ছুরি চালায়।
রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই জোবায়েদের মৃত্যু হয়। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তিনজনই।পুলিশ পরে অভিযান চালিয়ে বর্ষা, মাহির ও আয়লানকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত মঙ্গলবার বংশাল থানায় তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আরো পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
জুবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ছিলেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ছ ত রদল ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
অবশেষে সৎকার হলো হিমাগারে থাকা ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের হিমাগারে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ভারতীয় নাগরিক রাজনের (৬৩) মরদেহের সৎকার করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে পৌরসভার মনোহরবাজার শ্মশানঘাটে মরদেহটি সৎকার করা হয়। প্রায় ৭ মাস ধরে এই মরদেহ সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা ছিল।
আরো পড়ুন:
নড়াইলে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সাংবাদিকের ভাইয়ের মৃত্যু
নবাবগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে বৃদ্ধের মৃত্যু, ভস্মীভূত ১১ ঘর
রাজন ভারতের দিল্লি প্রদেশের দিলিপের ছেলে। তবে তার জেলার নাম জানা যায়নি।
শরীয়তপুর কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজন নামে এই ব্যক্তিকে ২০২২ সালের আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা এলাকা থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর ওই মামলায় তাকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি আর পি বন্দী হিসেবে কারাগারে ছিলেন।
গত ১৮ মে রাজন অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই রাজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা ছিলো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মরদেহটি সৎকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শরীয়তপুরের জেল সুপার বজলুর রশিদ বলেন, “রাজন নামের ওই ব্যক্তি আর পি বন্দী ছিলেন। হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এরপর থেকে তার মরদেহ হিমাগারে রাখা ছিল। পরে দুই দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) উচ্চ পর্যায়ে সভার মাধ্যমে মরদেহটি দাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সৎকার শেষে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়ে দেব।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ