দক্ষিণ সুদানে হাসপাতালে বোমা হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত
Published: 4th, May 2025 GMT
দক্ষিণ সুদানের একটি হাসপাতালে বোমা হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা দাতব্য সংস্থা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’ (এমএসএফ)। বিশ্বের সবচেয়ে নবীন রাষ্ট্রটিতে আবারও সর্বাত্মক গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।
এমএসএফ এক বিবৃতিতে দক্ষিণ সুদানের উত্তরাঞ্চলীয় ওল্ড ফ্যাংগাক এলাকায় তাদের হাসপাতালে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে বোমা হামলার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। হামলায় ওই অঞ্চলের সবশেষ কার্যকর হাসপাতাল ও ওষুধের দোকান ধ্বংস হয়ে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমএসএফ বোমা হামলা বন্ধের আহ্বান জানায়। পোস্টে সংস্থাটি লিখেছে, ‘বোমা হামলা বন্ধ করুন। বেসামরিক মানুষদের রক্ষা করুন। স্বাস্থ্যসেবা খাতকে রক্ষা করুন।’ এ হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলেও উল্লেখ করেছে এমএসএফ।
হাসপাতাল লক্ষ্য করে কেন হামলা চালানো হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, এ বিষয়ে কথা বলতে দক্ষিণ সুদানের সেনাবাহিনীর কোনো মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দক্ষিণ সুদানে এমএসএফের প্রধান মামান মুস্তাফা রাজধানী জুবা থেকে আল–জাজিরাকে বলেন, অস্ত্রশস্ত্রসজ্জিত দুটি হেলিকপ্টার থেকে হাসপাতালের ওপর ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তাঁর মাঠপর্যায়ের দল।
মুস্তাফা বলেন, হেলিকপ্টার দুটি হাসপাতাল ও চিকিৎসাসামগ্রী লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপের পর ওল্ড ফ্যাংগাক শহরে টানা গুলিবর্ষণ করেছে।
মুস্তাফা আরও বলেন, ‘বেসামরিক জনগণ ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ ও বিপর্যয়কর…আমরা হতবাক হয়ে গেছি। হাসপাতালটি ২০১৪ সাল থেকে, অর্থাৎ ১০ বছর ধরে সেখানে ছিল।’
গৃহযুদ্ধের নতুন আশঙ্কাজাতিসংঘ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সতর্ক করে বলেছে, ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই অস্থিরতায় জর্জরিত দক্ষিণ সুদান। দেশটির আবারও সর্বাত্মক গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে আছে।
প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাশারের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তি ভেঙে পড়ার কারণে গত কয়েক মাসে দেশে নতুন করে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ সুদানের প্রধান দুই জাতিগোষ্ঠী ডিংকা ও নুয়ের–এর প্রতিনিধিত্ব করেন কির ও মাশার। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ হয়। এতে প্রায় চার লাখ মানুষ নিহত হন। ২০১৮ সালের শান্তিচুক্তির পর তারা একটি ঐক্যের সরকার গঠন করেছিল।
এবার আবারও কির ও মাশারের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। গত মার্চ মাস থেকে মাশার গৃহবন্দী। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুনদক্ষিণ সুদানে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ২০ জন নিহত৩০ জানুয়ারি ২০২৫যেখানে এমএসএফের হাসপাতালের ওপর হামলা হয়েছে, সেই ওল্ড ফ্যাংগাক হচ্ছে ফ্যাংগাক কাউন্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি জংগলেই রাজ্যের অন্তর্গত, যা মূলত নুয়ের জাতিগোষ্ঠী–অধ্যুষিত এলাকা ও ঐতিহাসিকভাবে মাশারের নেতৃত্বাধীন সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-ইন-অপজিশনের (এসপিএলএম-আইও) ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
নাইরোবি থেকে আল–জাজিরার ক্যাথরিন সোই জানিয়েছেন, তিনি ফ্যাংগাক কাউন্টির কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন, যিনি এ হামলার জন্য সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন। ওই কর্মকর্তা এসপিএলএম-আইও-এর ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে।
ওই কমিশনার আল–জাজিরাকে বলেন, ‘শুধু সেনাবাহিনীই এ ধরনের হামলা চালানোর সামর্থ্য রাখে।’
এদিকে ক্যাথরিন বলেন, ‘আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাঁরা বলেছেন.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর
আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) নতুন হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিল অভিষেক নায়ারকে। গত মৌসুমে তিনি ছিলেন চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের সহকারী কোচ। এবার সেই জায়গা থেকেই পদোন্নতি পেয়ে দলের দায়িত্বভার নিলেন তিনি। এর আগে এক বছরের বিরতিতে নায়ার কাজ করেছিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সহকারী হিসেবে।
সম্প্রতি নারী প্রিমিয়ার লিগের দল ইউপি ওয়ারিয়র্সও তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।
আরো পড়ুন:
শেষটায় কী অপেক্ষা করছে?
ফাইনালে যেতে ভারতকে ৩৩৯ রানের টার্গেট দিলো অস্ট্রেলিয়া
কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর এক বিবৃতিতে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে অভিষেক কেকেআর পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঠের ভেতরে ও বাইরে- দুই জায়গাতেই তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। খেলার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সংযোগ; দুটোই তাকে আলাদা করে রেখেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন তিনি প্রধান কোচ হিসেবে কেকেআরকে নতুন অধ্যায়ে নেতৃত্ব দেবেন।”
৪২ বছর বয়সী অভিষেক নায়ার একসময় ছিলেন মুম্বাইয়ের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ২০০৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে তিনটি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচ হিসেবে তার সিভিটাই এখন অনেক সমৃদ্ধ।
২০১৮ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে নায়ার কেকেআর একাডেমির প্রধান কোচ নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালে অবসরের পর মূল দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন।
কেকেআরে থাকাকালীন গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তার গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যখন গম্ভীর ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন, তখন নায়ারও তার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিসিআইয়ের পর্যালোচনার পর এক বছরেরও কম সময়ে তার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এরপর আইপিএল ২০২৫ মৌসুমের আগে তিনি ফের ফিরে আসেন কেকেআরে।
তিন মৌসুম পর কেকেআর ও চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের পথ আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে দলটি দশ বছর পর ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল। তবে ২০২৫ মৌসুমে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মাত্র পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকাটা শেষ পর্যন্ত পান্ডিতের বিদায়ের কারণ হয়। এরপর তিনি ফিরে যান নিজ রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এবং সেখানে ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব নেন।
কেকেআরের সহায়ক দলেও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বোলিং পরামর্শক ভরৎ অরুণ ও স্পিন-বোলিং বিশেষজ্ঞ কার্ল ক্রো দুজনই চলে গেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। ফলে আগামী কয়েক মাসে তাদের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে।
অর্থাৎ, নতুন করে সাজানো কেকেআর এখন নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের হাত ধরে এগোতে প্রস্তুত। আইপিএল ২০২৬-এ আবারও পুরনো জৌলুস ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়।
ঢাকা/আমিনুল