রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি, প্রকল্প এলাকায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 11th, May 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের প্রকল্প এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকল্পের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডে (এনপিসিবিএল) কর্মরত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো.
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। বিষয়টি প্রকল্পের নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
অব্যাহতিপত্রে বলা হয়েছে, এনপিসিবিএলে তাঁদের আর প্রয়োজন নেই। ৮ মে থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হলো। তবে সবাই নোটিশ পেমেন্ট বাবদ তিন মাসের বেতন পাবেন।
প্রকল্প এলাকায় নিষেধাজ্ঞা–সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ ও আবাসিক এলাকা গ্রিনসিটিতে প্রবেশ বন্ধ করা হলো।’
অব্যাহতি পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন এসপিসিবিএলের ডেপুটি চিফ সুপারিনটেন্ড মো. হাসান আলী, ঊর্ধ্বতন সহকারী ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম, আবু রায়হান, রফিকুল হাসান, জয়নাল হোসেন, নাঈম আল সাকিব, আবু সাঈদ, এ কে এম আবদুল্লাহ আল আমিন, শাহ ইখতিয়ার আলম, ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ, সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল নোমান, আসিফ খান, মোহাম্মদ ইমামুল আরেফিন, মো. ইকরাম, মো. রুহুল আমীন, উপসহকারী ব্যবস্থাপক ইসমাইল হাসেন, রুবেল হোসেন ও টেকনিশিয়ান ফিরোজ আহম্মেদ।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের দাবি, ১৮ জন কর্মকর্তার সবাই দক্ষ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জন বুয়েট থেকে পাস করা প্রকৌশলী। ১৮ জনই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয়ে রাশিয়া থেকে একাধিকবার প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করায় তাঁদের অবৈধভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে প্রকল্পের স্বার্থে চাকরি পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছেন। অন্যথায় তাঁরা আইনের আশ্রয় নেবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চাকরিচ্যুত এক প্রকৌশলী প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দাবিদাওয়া তুলে ধরলেই দমন করা হয়। তাঁদের দমানোর চেষ্টা করা হয়। এর প্রতিবাদ করায় বেছে বেছে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। প্রকল্পের আবাসিক এলাকা থেকে সবাইকে তিন দিনের মধ্যে পরিবার নিয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। এতে তাঁরা চরম সমস্যায় পড়েছেন।
জানতে চাইলে এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহেদুল হাছান বলেন, চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের বিষয়ে যথাযথ তদন্ত ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদুল হাছানের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে এনপিসিবিএলের আন্দোলন করে আসছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ৬ মে তাঁরা ঈশ্বরদী শহরে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। ৭ মে প্রকল্প এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন। এ নিয়ে প্রথম আলোতে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুনরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিচালকের অপসারণের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভ০৬ মে ২০২৫আরও পড়ুনপরিচালকের অপসারণের দাবিতে কর্মচারীদের বিক্ষোভ২২ জানুয়ারি ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন কর মকর ত চ কর চ য ত স ব এল র
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রমোশনের’ আনন্দে বাঁধনহারা উদ্যাপন, ২৫ জন হাসপাতালে, একজন জীবন-শঙ্কায়
কখনো কখনো আনন্দই যে বেদনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা এখন টের পাচ্ছেন হামবুর্গের সমর্থকেরা। জার্মানির এই ফুটবল ক্লাব গতকাল বুন্দেসলিগা ২ থেকে প্রমোশন পেয়ে বুন্দেসলিগায় উঠেছে।
৭ বছর পর জার্মানির শীর্ষ প্রতিযোগিতায় ওঠার আনন্দে দলটির সমর্থকেরা এতটাই উদ্বেলিত ছিলেন যে ম্যাচ শেষ হতে না হতেই সবাই হুড়মুড় করে মাঠে নেমে পড়েন। আর তাতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। একসঙ্গে অনেক মানুষের হইহুল্লোড়ে আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত। হামবুর্গের স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ২৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
জার্মানির শীর্ষ লিগে ৬ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া হামবুর্গ ২০১৮ সালে প্রথমবার দ্বিতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা বুন্দেসলিগা ২–তে নেমে যায়। এরপর গত কয়েক বছর চেষ্টা করেও শীর্ষ লিগে ফিরতে পারেনি দলটি। সামনের মৌসুমে বুন্দেসলিগায় খেলতে গতকাল উল্মের বিপক্ষে জয় দরকার ছিল হামবুর্গের।
নিজেদের মাঠ ফক্সপার্কস্টেডিয়নের ম্যাচটিতে শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত উল্মকে ৬–১ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় হামবুর্গ। রেফারি শেষ বাঁশি বাজতেই ৫৭ হাজার ধারণক্ষমতার গ্যালারি থেকে দর্শকেরা হুড়মুড় করে মাঠের ভেতরে ঢুকে যান। একসঙ্গে অনেক মানুষ মাঠে নেমে যাওয়ায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং এতে অনেকে আহত হন।
হামবুর্গ ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া বিবৃতিতে ৪৪ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। এর মধ্যে একজন হাসপাতালে জীবনশঙ্কায় আছেন। এর বাইরে গুরুতর আহত ১৯ জনসহ ২৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
শেষ বাঁশির পর সবাই হুড়মুড় করে মাঠে ঢোকাতেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনাস্থলে একটি জরুরি সেবা বিভাগ চালু করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ ছাড়া উদ্ধারসেবা বিভাগের সহায়তায় মোট ৬৫ জন জরুরি কর্মী সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনবার ইউরোপীয় শিরোপা জেতা হামবুর্গ এবারের বুন্দেসলিগা ২–তে ৩৩ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। লিগে এখনো এক ম্যাচ বাকি থাকলেও শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হওয়ায় বুন্দেসলিগার টিকিট পেয়ে গেছে দলটি। এর আগে গত ছয় বছর বুন্দেসলিগায় ওঠার খুব কাছাকাছি গিয়েও দলটি ব্যর্থ হয়েছিল। তিনবার হয়েছে চতুর্থ, তিনবার তৃতীয়।