আজ মাওলানা ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী
Published: 17th, November 2025 GMT
মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার (১৭ নভেম্বর)। এ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মরহুমের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে ভোর থেকে ঢল নেমেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। প্রয়াত এই নেতার মাজারে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, তার পরিবার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে।
ইতোমধ্যে সন্তোষে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে সপ্তাহব্যাপী মেলা বসেছে। বিভিন্ন সংগঠন-প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা, সেমিনার চলছে। মাজার প্রাঙ্গণে ভক্ত, অনুসারী ও মুরিদরা ‘যুগ যুগ জিও তুমি, মওলানা ভাসানী’ স্লোগানে ক্ষণে ক্ষণে স্লোগান দিচ্ছেন।
এদিকে, সংরক্ষণের অভাবে এবং অযত্ম-অবহেলায় থাকা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর স্মৃতিচিহ্ন গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তার চিন্তা ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে একটি রাষ্ট্র গঠন করা যেতে পারে। নতুন সরকারের কাছে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে যথাযথ সম্মান জানানোর দাবি তাদের।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বিগত দিনে যারাই সরকার ছিলেন, তাদের দায়বদ্ধতার ঘাটতি ছিল বলেই মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাতে গড়া অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যমুনা সেতু ও টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ ভাসানীর নামে করার দাবি তাদের।
জাতীয় নেতার মর্যাদার পাশাপাশি, মাওলানা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি সচেতন মহলের। দেশের মানুষের স্বার্থে তাকে নিয়ে আরো গবেষণা করা প্রয়োজন বলে মনে করে ভাসানী ফাউন্ডেশন।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাতে লেখা চিঠি
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে সমাহিত করা হয়।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল চেগা মিয়া। তবে, তিনি লাল মওলানা হিসেবেও সমধিক পরিচিত। মক্তবে শিক্ষকতার সুবাদে ১৯০৯ সালে টাঙ্গাইলের কাগমারীতে চলে আসেন। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও তার জীবনের সিংহভাগই টাঙ্গাইলের সন্তোষে কাটিয়েছেন। সন্তোষের মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতন বিরোধী আন্দোলনসহ সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন তৎকালীন রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সর্বদলীয় ওয়ার কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর পাক জান্তাদের ‘ওয়া আলাইকুম আসসালাম’ বলে বিদায় জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর তার সর্বশেষ কীর্তি ছিল- ফারাক্কা লং মার্চ।
১৯৬৭ সালে চীনের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে উপহার পাওয়া ট্রাক্টর, ওভার কোর্ট, তার ব্যবহৃত টাইপিং মেশিন, লাঠি, ট্রানজিস্টারসহ বিভিন্ন আলোকচিত্রসহ অনেক স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মওলানা ভাসানী রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে জাদুঘরে এগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করা হলেও তার ওপরে ধুলা বালুর আস্তর পড়েছে।
আক্তারুজ্জামান সাজু নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ভারত, এশিয়া, আফ্রিকা, লেটিনসহ নানা দেশে ভাসানীকে নিয়ে চর্চা ও গবেষণা করা হয়। তার চিন্তা ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে একটি রাষ্ট্র গঠন করা যেতে পারে। নতুন সরকারের কাছে ভাসানীকে যথাযথ সম্মান দিতে এবং তার চেতনাকে বাস্তবায়ন করার দাবি জানান তিনি।
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি হাসরত খান ভাসানী ও আজাদ খান ভাসানী জানান, তাদের নানা দেশ ও জাতির জন্য জীবনকে উৎসর্গ করলেও ইতিপূর্বে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কেউ জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মৃত্যুর পর তার শেষ স্বপ্ন ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় মুখ থুবড়ে পড়ে ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। ভাসানীর হাতে গড়া অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড.
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বব দ য সন ত ষ মওল ন
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ সালে ব্যাংক বন্ধের তালিকা প্রকাশ
২০২৬ সালে ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী বছর ব্যাংকগুলোর জন্য ২৮ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
নতুন তালিকা অনুযায়ী, আগামী বছর প্রথম সরকারি ছুটির দিন হবে শবে-বরাত উপলক্ষ্যে। ৪ ফেব্রুয়ারি একদিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। ওই মাসে ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর শবে কদর উপলক্ষে ১৭ মার্চ ব্যাংক বন্ধ থাকবে। জুমাতুল বিদা ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৯ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত পাঁচদিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ২৬ মার্চ ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
চৈত্র সংক্রান্তি (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দারবান পার্বত্য জেলার জন্য প্রযোজ্য) ১৩ এপ্রিল ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে ১৪ এপ্রিল, মে দিবস ও বৌদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ১ মে, ২৬ থেকে ৩১ মে পাঁচদিন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
এদিকে, আশুরা উপলক্ষ্যে ২৬ জুন, ১ জুলাই ব্যাংক হলিডে উপলক্ষ্যে একদিন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ৫ আগস্ট, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে ২৬ আগস্ট, জন্মাষ্টমী ৪ সেপ্টেম্বর, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ২০ ও ২১ অক্টোবর, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর, বড়দিন উপলক্ষ্যে ২৫ ডিসেম্বর ও ব্যাংক হলিডে উপলক্ষ্যে ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চলতি বছরের ৯ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সব তফসিলি ব্যাংকের জন্য এ ছুটি কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় দেখা গেছে, চলতি বছর দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর জন্য ছুটি ছিল ২৭ দিন, আগের বছর ব্যাংকগুলোর জন্য ছুটি ছিল ২৪ দিন।
ঢাকা/নাজমুল//