প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নেমে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ট্রাকচালক নিহত
Published: 21st, May 2025 GMT
ঢাকা থেকে মালামাল নিয়ে সিলেটে যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক মো. সজীব (২২)। কিশোরগঞ্জে মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুর ভৈরব প্রান্ত অতিক্রমের সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ট্রাক থামান। ট্রাক থেকে নামতেই তাঁকে ঘিরে ধরে কয়েকজন ছিনতাইকারী। সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়ার পর পেটে ছুরিকাঘাত করে তারা।
কয়েক ঘণ্টা পর আজ বুধবার সকালে সজীবের মৃত্যু হয়। ভৈরবের এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। নিহত সজীব পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বট কাজল গ্রামের মো.
পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সজীব গতকাল মঙ্গলবার রাতে ট্রাক নিয়ে সিলেট যাচ্ছিলেন। সহযোগী হিসেবে ট্রাকে ছিলেন মো. ইব্রাহিম নামে তাঁর আপন ভাই। ভৈরব বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করেন দিবাগত রাত তিনটায়। বাসস্ট্যান্ড থেকে সামান্য দূরে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুর ভৈরব প্রান্তে ট্রাক থামান। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা ইব্রাহিমকে জানিয়ে সজীব সড়ক থেকে নিচে নামেন। কয়েক মিনিট পর ইব্রাহিম বুঝতে পারেন, ভাই বিপদে পড়েছেন। এগিয়ে গিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তখন ইব্রাহিমকে সজীব জানান, তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছেন। ছিনতাইকারীরা তাঁর সব নিয়ে গেছে এবং পেটে ছুরিকাঘাত করেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ভৈরব থানা–পুলিশ। পরে কয়েকজন ট্রাকচালকের সহযোগিতায় সজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সকাল ছয়টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, হাসপাতালে আনার আগেই সজীবের মৃত্যু হয়েছে।
সজীবের বাবা শাহাবুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে সবকিছু দিয়ে দেওয়ার পরও ছিনতাইকারীরা ছুরিকাঘাত করে। এই কথা মানতে কষ্ট হচ্ছে।’
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, ছিনতাইয়ের খবর জানার পর রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লাশ ঢাকায় আছে। সেখান থেকে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এ ঘটনায় মামলা হবে ভৈরবে। তিনি জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক