ভারতে মাওবাদী সাধারণ সম্পাদকসহ ২৭ জনকে হত্যা
Published: 21st, May 2025 GMT
ভারতে নিষিদ্ধ ও সশস্ত্র বামপন্থী সংগঠন কমিউনিস্ট পার্টি-মাওবাদীর (সিপিআই-এম) সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশভা রাও ওরফে বাসভরাজসহ ২৭ জন নকশালকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং এই সংবাদ নিশ্চিত করেছেন।
এই অভিযানকে যুগান্তকারী সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করে অমিত শাহ বলেছেন, তিন দশকের মধ্যে এই প্রথম সিপিআইএমের একজন সাধারণ সম্পাদককে নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করতে পেরেছে। তিনি অভিযানে জড়িত নিরাপত্তাকর্মীদের সাহসিকতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেন।
মধ্য ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলার অবুজমাড়ের ঘন জঙ্গলে এই অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানেই আদতে বাসভরাজের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। মাওবাদী নেতা বাসভরাজ তেলেঙ্গানা রাজ্যের মানুষ। তিনি ২০১৮ সালে তাঁর পূর্বসূরি মুপ্পালা লক্ষ্মণ রাওয়ের কাছ থেকে ভারতের বৃহত্তম সশস্ত্র এই বামপন্থী সংগঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। অতীতে তিনি মাওবাদীদের সামরিক কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন।
বাসভরাজ দীর্ঘ সময় দলের সামরিক কাজকর্মের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি একাধিক সামরিক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেসব অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য নিহত হয়েছেন। ২০১৮ সালে তাঁকে দল সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ দেয়।
বাসভরাজের মৃত্যুর পরে এখন নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ভারতে নিষিদ্ধ এই সংগঠনের পক্ষে আর সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়। এই অভিযানে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্রজুড়ে ৫৪ জন নকশাল সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নকশালের ৮৪ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেছেন বলেও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
এর ফলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ছত্তিশগড় রাজ্যের যেখানে মাওবাদীরা প্রায় ৫০ বছর ধরে গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থেকে তাঁদের সদর দপ্তর ধরে রাখতে পেরেছিলেন, সেখান থেকে তাঁরা পুরোপুরি উৎখাত হতে চলেছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই বলেছিলেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সিপিআইয়ের (মাওবাদী) অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। আজ বুধবারও তাঁর সেই বক্তব্য মনে করিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাম্প্রতিক অভিযানের ঠিক আগে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ নামের আরেকটি অভিযান মাওবাদীদের প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। গত ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১১ মে পর্যন্ত ওই অভিযান চলে। ২১ দিনের অভিযানে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী, সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স, স্পেশাল টাস্কফোর্স, বিভিন্ন জেলাস্তরের স্থানীয় বাহিনী এবং অঞ্চল নিরাপত্তা বাহিনী অংশ নেয়।
মাওবাদীদের যেসব সামরিক অবকাঠামো ছিল, ২১ দিনের অভিযানে সেগুলো অনেকটাই ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর আজ বুধবার তাদের সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যুর সংবাদের সঙ্গে সঙ্গে মাওবাদীদের ছত্তিশগড়ে বিলুপ্তি এখন সময়ের অপেক্ষা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব সভর জ
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর
আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) নতুন হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিল অভিষেক নায়ারকে। গত মৌসুমে তিনি ছিলেন চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের সহকারী কোচ। এবার সেই জায়গা থেকেই পদোন্নতি পেয়ে দলের দায়িত্বভার নিলেন তিনি। এর আগে এক বছরের বিরতিতে নায়ার কাজ করেছিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সহকারী হিসেবে।
সম্প্রতি নারী প্রিমিয়ার লিগের দল ইউপি ওয়ারিয়র্সও তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।
আরো পড়ুন:
শেষটায় কী অপেক্ষা করছে?
ফাইনালে যেতে ভারতকে ৩৩৯ রানের টার্গেট দিলো অস্ট্রেলিয়া
কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর এক বিবৃতিতে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে অভিষেক কেকেআর পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঠের ভেতরে ও বাইরে- দুই জায়গাতেই তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। খেলার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সংযোগ; দুটোই তাকে আলাদা করে রেখেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন তিনি প্রধান কোচ হিসেবে কেকেআরকে নতুন অধ্যায়ে নেতৃত্ব দেবেন।”
৪২ বছর বয়সী অভিষেক নায়ার একসময় ছিলেন মুম্বাইয়ের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ২০০৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে তিনটি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচ হিসেবে তার সিভিটাই এখন অনেক সমৃদ্ধ।
২০১৮ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে নায়ার কেকেআর একাডেমির প্রধান কোচ নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালে অবসরের পর মূল দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন।
কেকেআরে থাকাকালীন গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তার গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যখন গম্ভীর ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন, তখন নায়ারও তার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিসিআইয়ের পর্যালোচনার পর এক বছরেরও কম সময়ে তার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এরপর আইপিএল ২০২৫ মৌসুমের আগে তিনি ফের ফিরে আসেন কেকেআরে।
তিন মৌসুম পর কেকেআর ও চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের পথ আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে দলটি দশ বছর পর ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল। তবে ২০২৫ মৌসুমে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মাত্র পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকাটা শেষ পর্যন্ত পান্ডিতের বিদায়ের কারণ হয়। এরপর তিনি ফিরে যান নিজ রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এবং সেখানে ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব নেন।
কেকেআরের সহায়ক দলেও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বোলিং পরামর্শক ভরৎ অরুণ ও স্পিন-বোলিং বিশেষজ্ঞ কার্ল ক্রো দুজনই চলে গেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। ফলে আগামী কয়েক মাসে তাদের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে।
অর্থাৎ, নতুন করে সাজানো কেকেআর এখন নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের হাত ধরে এগোতে প্রস্তুত। আইপিএল ২০২৬-এ আবারও পুরনো জৌলুস ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়।
ঢাকা/আমিনুল