নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক কাঁচা বাজারে, নিহত ২
Published: 23rd, May 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাক সড়কের পাশে কাঁচা বাজারে ঢুকে পড়ে। এসময় ট্রাক চাপায় বাজার করতে আসা দুইজন ক্রেতা নিহত হয়েছেন। এঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। দুমড়ে মুচড়ে যায় দুটি অটোরিকশা। ঘটনার পর ট্রাক রেখে পালিয়ে গেছেন ড্রাইভার।
শুক্রবার (২৩ মে) সকাল ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহা-সড়কের আকবরনগর বাসস্ট্যান্ড বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ঝগড়ারচর মুন্সি বাড়ির আঙ্গুর মিয়া (৪৫), একই ইউনিয়নের আকবরনগর গ্রামের আলির বাড়ির মো.
ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহাবুর রহমান বলেন, ‘‘৯৯৯ কল পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যাই। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারি, সকালে কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ভৈরবগামী একটি গাছবোঝাই ট্রাক আকবর নগর বাসস্ট্যান্ড বাজার এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে সড়কে থাকা দুটি অটোরিকশাকে চাপা দেয়। বাজারের ভেতরে ঢুকে একটি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে থামে। এসময় এ ট্রাকটির চাপায় বাজার করতে আসা দুইজন নিহত হন। একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আরেকজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।’’
তিনি জানান, এসময় অটোরিকশার যাত্রী ও পথচারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/রুমন/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস