নারী সেজে ভিডিও বানাতেন চিকিৎসক স্বামী, কেন এমন অভিযোগ করছেন স্ত্রী
Published: 24th, May 2025 GMT
তিনি চিকিৎসক। আবার চাকরি করেন সরকারি হাসপাতালে। ভারতের উত্তর প্রদেশের এমন এক সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পর্ন ভিডিও বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর কিছু ছবি ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি সামনে আসে। ছবিতে তাঁকে নারী সেজে থাকতে দেখা গেছে।
বরুনেশ দুবে নামের এই চিকিৎসকের স্ত্রী সিম্পি পান্ডে দাবি করেছেন, তাঁর স্বামী সরকারি কোয়ার্টারে অন্য পুরুষদের সঙ্গে অশ্লীল ভিডিও করতেন এবং তা অনলাইনে বিক্রি করতেন।
সিম্পি পান্ডে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি একদিন এক পেইড ওয়েবসাইটে কিছু ভিডিও পাই। টাকা দিয়ে ভিডিও দেখি, দেখি আমার স্বামী নিজের বাড়িতে পর্ন ভিডিও বানাচ্ছেন। যখন আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে যাই, তখন তিনি আমাকে ও আমার ভাইকে মারধর করেন।’
ওই নারী আরও বলেন, তাঁর স্বামী নিজেকে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ বলে পরিচয় দিতেন এবং অন্য পুরুষদের বাড়িতে এনে ভিডিও করতেন।
স্ত্রী সিম্পির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ চিকিৎসক দুবের বাড়িতে অভিযান চালায়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করেছে পুলিশ।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তাঁর স্বামী নিজেকে ট্রান্সজেন্ডার বলে পরিচয় দেন। তিনি অন্য পুরুষদের বাড়িতে ডেকে এনে পর্ন ভিডিও বানিয়ে অনলাইনে আপলোড করেন। স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধরও করেন তিনি। মামলার তদন্ত চলছে।
স্বামীর পাল্টা দাবি
চিকিৎসক বরুনেশ দুবে একজন জেল চিকিৎসক। তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আমার স্ত্রী আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। তিনি আমার বাবার মৃত্যুর পর আমার সম্পত্তি দখল করতে চান।’
এক ভিডিও বার্তায় দুবে বলেন, ‘তিনি (স্ত্রী) একজন “ডাকাত স্ত্রী”। আমার ৮৫ বছরের বৃদ্ধ বাবাকে গালাগাল দিতেন, মানসিক নির্যাতন করতেন। আমার বাবার মৃত্যুর পেছনে তাঁরই ভূমিকা আছে। তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন, আমাদের সন্তানকে ব্যালকনি থেকে ফেলে দেবেন।’
এই চিকিৎসক আরও দাবি করেন, ‘তিনি আমার ফোন দিয়ে ডিপফেক ভিডিও তৈরি করেছেন। আমার দুর্নাম করেছেন। তিনি চান, আমি আত্মহত্যা করি। কিন্তু আমি আত্মহত্যা করব না, শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।’
দুবে আরও বলেন, একবার তিনি (স্ত্রী সিম্পি) ও তাঁর চাচি মিলে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। বাড়ি থেকে তাঁর ফোনও চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়।
উপমুখ্য চিকিৎসা কর্মকর্তা মহেন্দ্র প্রসাদ বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক কর ছ ন করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক
চট্টগ্রাম নগরে কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার প্রাইভেট কার থামিয়ে হামলার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে বান্দরবান থেকে কাজী মো. ইমন হোসেন (২৩) ও মো. সুজন (২৪)–কে গ্রেপ্তার করে ডিবি (পশ্চিম)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, এক ব্যক্তির নির্দেশে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এ হামলা চালান। সেই নির্দেশদাতা এখনো পলাতক।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশীদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, হামলার সময় ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কাস্টমস কর্মকর্তাকে ভয় দেখানোই ছিল হামলার লক্ষ্য। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
৪ ডিসেম্বর সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকায় কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুল আরেফিন ভাড়ায় নেওয়া প্রাইভেট কারে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তিন ব্যক্তি তাঁদের গাড়ি থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির কাচে কোপ দেন। গাড়ির কাচ ভাঙার পাশাপাশি হামলাকারীরা একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। তবে দুই কর্মকর্তা দ্রুত গাড়ি সরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়ম, রাজস্ব জালিয়াতি ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জড়িত চক্র হামলা চালাতে পারে। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের নিষিদ্ধ পপি বীজ ও ঘন চিনি, প্রায় ৩০ কোটি টাকার নিষিদ্ধ সিগারেট এবং মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা বিপুল পরিমাণ প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে দুজন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। প্রসাধনী জব্দের পর মো. আসাদুজ্জামানকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়।
হামলার নির্দেশদাতার পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে হামলায় ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিষিদ্ধ পপি বীজ, ঘন চিনি ও মিথ্যা ঘোষণায় আসা প্রসাধনী জব্দের কারণে একটি সিন্ডিকেট ক্ষুব্ধ। গত দুই মাসে এসব সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি আসছে।
আরও পড়ুনগাড়ি থামিয়ে কাচে চাপাতির কোপ, একজন বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’০৪ ডিসেম্বর ২০২৫