দ্রোহ ও প্রেমের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী নজরুল উৎসবের আয়োজন করেছে ছায়ানট। আজ রোববার সন্ধ্যায় সাতটায় ছায়ানট মিলনায়তনে উৎসবের প্রথম দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।

ছায়ানটের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে ‘এ কী অপরূপ রূপে মা তোমার’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে ছিল কথন। প্রাবন্ধিক মফিদুল হক জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর ছিল সম্মেলক গান ‘দেশ গৌড়-বিজয়ে দেবরাজ’। গানের পরে ছিল বিশেষ গীতি–আলেখ্য ‘কাবেরী তীরে’।

অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল গীতি–আলেখ্য, একক ও সম্মেলক গান, নৃত্য ও আবৃত্তি দিয়ে। নুসরাত জাহানের গাওয়া ‘মেঘের হিন্দোলা দেয়’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন ফারহানা আহমেদ। আবৃত্তি করেন রফিকুল ইসলাম।

একক শিল্পীদের মধ্যে নাসিমা শাহীন ফ্যান্সী পরিবেশন করেন ‘এখনো মেটেনি আশা’, ‘মোহিত খান গেয়েছেন ‘কাবেরী নদী জলে কে গো বালিকা’, ‘এসো চির জনমের সাথী’ গেয়েছেন শ্রাবন্তী ধর, ‘নিশি রাতে রিম ঝিম ঝিম’ পরিবেশন করেছেন মইদুল ইসলাম, ‘পাষাণের ভাঙালে ঘুম’ গেয়েছেন সঞ্জয় কবিরাজ। একক শিল্পীদের মধ্যে আরও ছিলেন ইয়াকুব আলী খান, ঐশ্বর্য সমদ্দার, ধ্রুব সরকার, ছন্দা চক্রবর্তী, রেজাউল করিম, প্রিয়ন্ত দেব, প্রিয়াঙ্কা গোপ, অরূপ সমদ্দার, নাসরিন আক্তার, জয়েৎ কল্যাণ ও শুক্লা পাল। শিল্পীরা ‘নীলাম্বরী শাড়ি পরি নীল যমুনায়’, ‘রহি রহি কেন সে মুখ পড়ে মনে’, ‘ও গো বৈশাখী ঝড়’, ‘পরদেশী বঁধুয়া’সহ অনেকগুলো গান গেয়ে শুনিয়েছেন।

সম্মেলক গান ‘ত্রিংশ কোটি সন্তান তব’ ও ‘বিজলি খেলে আকাশে কেন’ পরিবেশন করেন ইউডার শিক্ষার্থীরা। শেষে ছিল ছায়ানটের ছোটদের দলের সম্মিলিত গান পরিবেশনা ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি আমার দেশের মাটি’।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম ছ য় নট নজর ল

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।

সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।

ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’

হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’

কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।

এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’
  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ