সাকিবের জন্য জাতীয় দলের দরজা এখনও খোলা, বলছে বিসিবি
Published: 27th, May 2025 GMT
গত বছরের অক্টোবর থেকে জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর থেকে দেশের মাটিতেও আর দেখা মেলেনি তার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়া এবং টেস্ট ক্রিকেট থেকে কার্যত বিদায় নেওয়ায় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, বাংলাদেশের জার্সিতে হয়তো আর দেখা যাবে না সাকিবকে।
তবে সেই শঙ্কার মধ্যেই আশার সুর শুনিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ড পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন, জাতীয় দলে ফেরার দরজা এখনও খোলা রয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের জন্য।
সম্প্রতি পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সের হয়ে মাঠে নেমে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকিব। প্রায় ছয় সপ্তাহ পর মাঠে ফেরা এই অলরাউন্ডার কিছুদিন আগেই ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) থেকে নিজের বোলিং অ্যাকশন বৈধতার স্বীকৃতি পান। এর আগে তার অ্যাকশনকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল ইসিবি।
সাকিব সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে খেলেন ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে। সেসময় তিনি ঘোষণা দেন, দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। টি-টোয়েন্টিও আর খেলবেন না বলে জানান। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়েনে সেই বিদায়ী ম্যাচও খেলতে পারেননি।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে তিনি জনরোষের আশঙ্কায় দেশে ফেরেননি। বিসিবিও এরপর আর কোনো সিরিজে তাকে বিবেচনায় নেয়নি। এমনকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা হয়নি তার। তবুও সাকিবকে পুরোপুরি বাদ দিচ্ছে না বিসিবি।
পরিচালক ইফতেখার রহমান বলেন, ‘সাকিব সবসময় নির্বাচকদের বিবেচনায় থাকবেন। তিনি একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটার এবং দলের জন্য বড় সম্পদ। বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করে ফেরার পর টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চয়ই তাকে পর্যবেক্ষণে রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে বিসিবির সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়নি। সে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাত্র কিছু ম্যাচ খেলেছে। আরও কয়েকটি ম্যাচ খেললে তার ফর্ম ও ফিটনেস দেখে আমরা স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’
বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও সাকিবের ফেরার প্রসঙ্গ সামনে নিয়ে এসেছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হেরে গেছে বাংলাদেশ। সামনে রয়েছে পাকিস্তান সফরের আরেকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ। দলের অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্স ঘাটতির মধ্যে সাকিবের অভাব গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে।
ইফতেখার রহমান বলেন, ‘তামিম, রিয়াদ, মুশফিক ও সাকিব এই চার সিনিয়র ছাড়া দল অনেকটাই নতুন। তাই এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তবে নতুনদের মধ্যে প্রতিভা আছে। তারা যত খেলবে, ততই পরিণত হবে।’
তিনি আশাবাদী, ‘আমাদের বর্তমান অবস্থান থেকে শুধুই উপরের দিকে যাওয়ার সুযোগ আছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন
এছাড়াও পড়ুন:
ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা
বয়স ৪৪, শরীরও আর আগের মতো চলছে না। তবু মহেন্দ্র সিং ধোনি আইপিএল ছাড়েননি। সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছেন, শোনা যাচ্ছে, পরের মৌসুমেও খেলবেন। অথচ তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স বলছে, সময় ফুরিয়েছে। তবু তিনি খেলে যাচ্ছেন কেন? ক্রিকেট ছাড়তে পারছেন না তাই? নাকি খ্যাতির মোহ? সত্যিটা এসবের চেয়েও বড়—ধোনি এখন শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একটি বিশাল অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেমের মূল স্তম্ভ, যাঁর বিদায় মানে অনেক কিছুর ধস।
চলুন দেখা যাক, কীভাবে ধোনির একটুখানি মাঠে থাকা বদলে দেয় বিশাল অঙ্কের হিসাব।২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ব্র্যান্ড ভ্যালু ২০২৫ আইপিএল ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ইতিহাসেই সবচেয়ে বাজে মৌসুম। পয়েন্ট তালিকায় একেবারে তলানিতে থেকে মৌসুম শেষ করেছে তারা। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার, এর কোনো প্রভাবই পড়েনি সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে; বরং সামান্য বেড়েছে!
হুলিহ্যান লোকির ‘আইপিএল ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন স্টাডি ২০২৫’ প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা ২০২৪ সালে ছিল ২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যদিও আইপিএলের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজির র্যাঙ্কিংয়ে চেন্নাই ১ নম্বর থেকে তিনে নেমে গেছে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে নয়।
তুলনা করে দেখা যাক—রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) প্রথমবার আইপিএল জেতায় তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে, উঠে এসেছে ১ নম্বরে। অথচ সিএসকে কিছু না করেই সেরা তিনে আছে শুধু একজনের জন্য—ঠিক ধরেছেন, এম এস ধোনি!
২০২৩ আইপিএলের একটি মুহূর্তই বলে দেয়, ধোনির উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে মাত্র ৩ বল খেলেছিলেন ধোনি, করেছিলেন ১২ রান। তাতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিউয়ারশিপ পৌঁছায় ১ কোটি ৭০ লাখে, যা ছিল সে মৌসুমের সর্বোচ্চ। এমনকি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের ১ কোটি ৬০ লাখ ভিউয়ারকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ধোনির সেই ৩ বল স্থায়ী ইনিংসটা!
টিএএম মিডিয়া রিসার্চ বলছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরও ধোনি দিনে গড়ে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ১৪ ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম ধরে রেখেছেন। ২০২৪ সালে তিনি ৪২টি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন, যা অমিতাভ বচ্চন (৪১) ও শাহরুখ খানের (৩৪) চেয়েও বেশি।