কোনো শাস্তি নয়, ক্রম অবনতির কারণেই ছাঁটাই ফারুক: আসিফ মাহমুদ
Published: 31st, May 2025 GMT
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে নিজের বাসভবনে ডেকে নিয়ে নেতৃত্ব পরিবর্তনের কথা জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। সরকার নতুন কাউকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে বেছে নেবে এমনটাই জানানো হয়েছিল গত বুধবার রাতে। ফারুক আহমেদকে পদত্যাগ করতেও বলা হয়।
কিন্তু পরদিন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক সাফ জানিয়ে দেন পদত্যাগ করবেন না। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বসে থাকেনি। তারা ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে এবং আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে বেছে নেয়। পরবর্তীতে আমিনুল প্রথমে বোর্ডের পরিচালক ও পরে পরিচালকদের ভোটে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন।
৪৮ ঘণ্টার হঠাৎ ঝড়েই সব ওলটপালট। ৯ মাস আগে সরকার পরিবর্তনের পর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ফারুক আহমেদকে বেছে নেয়। আগস্টের নির্বাচন পর্যন্তই তার মেয়াদ ছিল। অথচ মেয়াদ পূর্তির দুই মাস আগেই তাকে কেনো সরানোর প্রয়োজন হলো সেই উত্তর দুদিনেও সংশ্লিষ্ট কেউ দেয়নি।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের কাছে পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ
দুই পরিচালককে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে বিসিবি
সেই উত্তর দিতেই সামনে এলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। শনিবার বিকেলে এক অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, “প্রথমত যেটা হচ্ছে, এটা কোনো শাস্তি বা এ রকম কিছু না। আমরা দেখেছি বিগত ৯ মাসে বিসিবিতে নতুন নেতৃত্ব আসার পর ক্রিকেটে যে প্রত্যাশা ছিল আমাদের, সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নয়ন আমরা দেখিনি। সরকার আসার পর বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জিতে আসল। তারপর থেকে আমরা ক্রম অবনতি দেখছি। খুবই দুঃখজনক, যে প্রত্যাশা নিয়ে নতুন নেতৃত্ব এসেছিল…।”
“আমি তো স্পোর্টসের মানুষ না। আমি দশজনের সঙ্গে কথা বলে যাকে এবং সবাই যার কথা বলেছে যে, তিনি ভালো চালাতে পারবেন, তাকেই বোর্ডের বাকি সদস্যরা নির্বাচিত করেছিলেন। কিন্তু বিগত সময়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, বিপিএল থেকে শুরু করে সর্বোপরি বাংলাদেশের ক্রিকেটের, আমাদেরকে বিচার করতে হবে পারফরম্যান্স দিয়ে। সেই পারফরম্যান্স আশানুরূপ না,” যুক্ত করেন আসিফ।
সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নেতৃত্বেও পরিবর্তন আসে। তাবিথ আওয়াল বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হন। ফুটবলের হঠাৎ জাগরণ বেড়েছে। উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে।
ফুটবলের উদাহরণ টেনে আসিফ মাহমুদ বলেন, “আপনারা দেখেছেন কোনো একটা স্পোর্টসের উন্নয়নে যেতে কোনো সময় লাগে না। যেটা বাফুফেতে দেখেছেন। তাদের নতুন নেতৃত্ব প্রমাণ করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় প্রতিটি স্পোর্টসে সহযোগিতা করে এসেছে সাধ্যমতো। বাফুফে সেটা প্রমাণ করতে পেরেছে। তারা ফুটবলকে কেন্দ্র করে নতুন একটি উন্মাদনা ও আশার সঞ্চার করতে পেরেছেন।”
ঢাকা/ইয়াসিন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা
বয়স ৪৪, শরীরও আর আগের মতো চলছে না। তবু মহেন্দ্র সিং ধোনি আইপিএল ছাড়েননি। সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছেন, শোনা যাচ্ছে, পরের মৌসুমেও খেলবেন। অথচ তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স বলছে, সময় ফুরিয়েছে। তবু তিনি খেলে যাচ্ছেন কেন? ক্রিকেট ছাড়তে পারছেন না তাই? নাকি খ্যাতির মোহ? সত্যিটা এসবের চেয়েও বড়—ধোনি এখন শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একটি বিশাল অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেমের মূল স্তম্ভ, যাঁর বিদায় মানে অনেক কিছুর ধস।
চলুন দেখা যাক, কীভাবে ধোনির একটুখানি মাঠে থাকা বদলে দেয় বিশাল অঙ্কের হিসাব।২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ব্র্যান্ড ভ্যালু ২০২৫ আইপিএল ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ইতিহাসেই সবচেয়ে বাজে মৌসুম। পয়েন্ট তালিকায় একেবারে তলানিতে থেকে মৌসুম শেষ করেছে তারা। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার, এর কোনো প্রভাবই পড়েনি সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে; বরং সামান্য বেড়েছে!
হুলিহ্যান লোকির ‘আইপিএল ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন স্টাডি ২০২৫’ প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা ২০২৪ সালে ছিল ২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যদিও আইপিএলের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজির র্যাঙ্কিংয়ে চেন্নাই ১ নম্বর থেকে তিনে নেমে গেছে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে নয়।
তুলনা করে দেখা যাক—রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) প্রথমবার আইপিএল জেতায় তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে, উঠে এসেছে ১ নম্বরে। অথচ সিএসকে কিছু না করেই সেরা তিনে আছে শুধু একজনের জন্য—ঠিক ধরেছেন, এম এস ধোনি!
২০২৩ আইপিএলের একটি মুহূর্তই বলে দেয়, ধোনির উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে মাত্র ৩ বল খেলেছিলেন ধোনি, করেছিলেন ১২ রান। তাতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিউয়ারশিপ পৌঁছায় ১ কোটি ৭০ লাখে, যা ছিল সে মৌসুমের সর্বোচ্চ। এমনকি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের ১ কোটি ৬০ লাখ ভিউয়ারকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ধোনির সেই ৩ বল স্থায়ী ইনিংসটা!
টিএএম মিডিয়া রিসার্চ বলছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরও ধোনি দিনে গড়ে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ১৪ ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম ধরে রেখেছেন। ২০২৪ সালে তিনি ৪২টি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন, যা অমিতাভ বচ্চন (৪১) ও শাহরুখ খানের (৩৪) চেয়েও বেশি।