ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার প্রধান নদী সুরমাসহ সকল শাখা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকলেও জেলায় বন্যা হবে না বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবুও নদীর দুই কূল ছাপিয়ে বন্যার আতঙ্কে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, আজ শনিবার ( ৩১ মে ) সন্ধ্যায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার এই পয়েন্টে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগের দিন একই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সেই হিসাবে একদিনের ব্যবধানে প্রায় ১০০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ৯টা থেকে শনিবার (৩১ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ শহরে ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর আগের দিন ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৭ মিলিমিটার। এই হিসাবে দুই দিনে দেশের উজানে ৬২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি অব্যাহত
সিলেটে তলিয়ে গেছে জাফলংসহ ৩ পর্যটনকেন্দ্র, বাড়ছে নদ-নদীর পানি

ময়মনসিংহে ধসে পড়েছে গহুর মোল্লার ব্রিজ, যোগাযোগ বন্ধ

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  গত দুই দিনে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হওয়ায় সেখানের পানিও নেমে আসছে ভাটির জেলা সুনামগঞ্জে। এতে জেলার তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা, পাটলাই, বৌলাই ও রক্তি; দোয়ারাবাজার-ছাতক উপজেলার খাসিয়ামারা, চিলাই, চেলা, পিয়াইন; মধ্যনগর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতে পাহাড়ি পানির ঢল নেমেছে।

গতরাতে তেমন বৃষ্টি না হলেও আজ শনিবার (৩১ মে) দুপুর দুইটা থেকে সুনামগঞ্জ জেলায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এমন বর্ষণে একদিকে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, অন্যদিকে জনজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে ভারতের আসাম এবং মেঘালয় রাজ্যে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের খবরে জেলার নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষের মনে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শহরের নবীনগর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ অপু বলেন, ‘‘নদীর পানি শুক্রবার (৩০ মে) ও কম ছিল, আজ অনেকটা বেড়েছে। আমাদের বাড়ির পাশের হাওরেও পানি বেড়েছে। এর মধ্যে আরো বৃষ্টি হলে তো বন্যা হয়ে যাবে। টেনশনে আছি।’’  

পৌর শহরের কাজির পয়েন্ট এলাকার ভ্যান চালক শরিফ মিয়া রাইজিংবিডি-কে বলেন, ‘‘বের হয়েছিলাম একটা ট্রিপের জন্য। উকিলপাড়া থেকে মাইজবাড়ি এলাকায় একটা সোফা সেট দিয়ে আসব। বৃষ্টির মধ্যে সোফা সেট নিলে ভিজে নষ্ট হয়ে যাবে তাই আজ ট্রিপটা মিস হয়েছে। মেঘবাদলের দিন, বুঝতেছি না আর কোনো ট্রিপ পাব কি-না।’’  

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার রাইজিংবিডি-কে বলেন, ‘‘ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হওয়ায় জেলার নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে।’’

ভারতে ও সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টির ফলে বন্যার আশঙ্কা আছে কি-না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে জেলাবাসীকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। 
 

ঢাকা/মনোয়ার/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন বন দ নদ স ন মগঞ জ ব পৎস ম র নদ র প ন নদ নদ

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসুর বিবৃতি: বিএনপি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে

জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে, এমন বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। রোববার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বিপ্লব। শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।

ডাকসুর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, যা সরাসরি ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়। কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ