ভবন নির্মাণেই সীমাবদ্ধ চালু হয়নি এক যুগেও
Published: 31st, May 2025 GMT
ওসমানীনগরে ভবন নির্মাণের মাঝে আটকে আছে ওসমানী গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর স্মৃতি সংরক্ষণে এই গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়।
জেনারেল ওসমানীর স্মৃতিবিজড়িত পৈতৃক নিবাস ওসমানীনগরের দয়ামীরে মহাসড়কের পাশে এই গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘর স্থাপনের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে প্রায় ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে প্রায় দেড় যুগ সময় অতিবাহিত হলেও চালু হয়নি এর কার্যক্রম। আগামীতে সেটি হবে কিনা সে ব্যাপারেও কিছু বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, ২০০৮ সালে ৩ হাজার ৫৩৫ বর্গফুট স্থানজুড়ে ওসমানী গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। একই বছর ২২ ডিসেম্বর সিলেট জেলা পরিষদের উদ্যোগে প্রায় ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ।
২০০৯ সালের মধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার পর গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘর চালুর জন্য আসবাব ক্রয় করে ভবনটি সজ্জিত করা হয়। স্থাপন করা হয় জেনারেল ওসমানীর সংক্ষিপ্ত জীবনীসংবলিত ম্যুরাল। এরপর ২০১২ সালে সীমানাপ্রাচীরে বেষ্টিত ভবনের সামনে পরিকল্পিতভাবে ফুলের বাগান এবং এসএস স্টিলের বসার জায়গা তৈরি করে দিলে দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে ভবন ও এর চারদিক। এরপর আর কোনো কাজে লাগানো হয়নি স্থাপনাগুলো। আটকে যায় স্মৃতি রক্ষার মূল উদ্যোগটি
বিগত সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এলে তাঁকে দিয়ে এই গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘরটি চালু না করে লোক দেখানো উদ্বোধন করা হয়। এরপরেও এর কার্যক্রম চালুর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণতা ঘিরে ধরতে শুরু করেছে স্থাপনাগুলোকে। সামনে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য যে ফুলের বাগান ছিল তাও এখন নেই। সীমানাপ্রাচীর থাকা সত্ত্বেও ভবনের চারদিকে গরু-ছাগল চড়ে বেড়াচ্ছে। ভেতরের আসবাবে জমেছে ধুলার স্তর। বাগানে বসার জন্য এসএস স্টিলের তৈরি বেঞ্চগুলো নেই।
স্থানীয় দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ দিনেও চালু হয়নি ওসমানী গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘরটি। এই মহান ব্যক্তির নামে স্মৃতি রক্ষার এ প্রতিষ্ঠানটি চালু হওয়ার প্রত্যাশা করছে সবাই।
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আপ্তাব আহমদ বলেন, বঙ্গবীর এমএজি ওসমানীর স্মৃতি রক্ষায় গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘরটি দেড় যুগেও চালু না হওয়া দুঃখজনক। ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অবস্থা খারাপ। ভবনটি সংস্কার করে এই বীর যোদ্ধার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গ্রন্থাগার ও স্মৃতিজাদুঘরটি চালুর দাবি জানান তিনি।
সিলেট জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী সন্দ্বীপ কুমার সিংহ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন এ ব্যাপারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ ভবন ন র ম ণ ওসম ন র স
এছাড়াও পড়ুন:
বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে এক তরুণ তাঁর বোনকে খুন করে লাশ একটি বস্তায় ভরে রেখেছিলেন। ওই বস্তা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে ভেতরে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘এর মধ্যে গম আছে।’
উত্তর প্রদেশের ৩২ বছর বয়সী রাম আশিস নিষাদ তাঁর ১৯ বছর বয়সী বোন নীলমকে খুন করেন।
ওই এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। আশিসের বাবা চিংকু নিষাদ সেখানে সরকারের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ছয় লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, ওই ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থের ভাগাভাগি নিয়েই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই রুপি বোনের বিয়েতে খরচ করা হবে জেনে রাম আশিস ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাম আশিস একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে বোন নীলমকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর নীলমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে ফেলে দেহটি একটি বস্তায় ভরেন। পরে বাইকের সঙ্গে বেঁধে তিনি গোরখপুর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে কুশীনগরের একটি আখখেতে বস্তাটি ফেলে আসেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে অভিযুক্ত
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে রাম আশিসকে একটি বস্তা নিয়ে যেতে দেখা যায়। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই বস্তার মধ্যে ছিল তাঁর বোনের লাশ। কুশীনগর যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁকে থামিয়ে বস্তায় কী আছে জানতে চেয়েছিল।
রাম আশিস পুলিশকে জানান, বস্তায় গম আছে। পরে আবার তিনি কুশীনগরের দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান। সেখানে তিনি আখখেতে নীলমের লাশ ফেলে দেন।
এরপর নীলমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বাবা প্রথমে ধরে নেন, মেয়ে ছটপূজার জন্য কোথাও গেছে। তবে প্রতিবেশীরা যখন জানান, সোমবার রাম আশিস একটি বস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তখন পরিবারের সন্দেহ হয় এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ প্রথমে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ও তদন্ত শুরু করে। গত মঙ্গলবার নীলমের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়, রাম আশিসই নীলমকে খুন করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাম আশিস প্রথমে কিছু না জানার ভান করেন। তবে পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পরে বোনকে খুনের কথা স্বীকার করেন। গত বুধবার রাতে আখখেত থেকে নীলমের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আগামী জানুয়ারি মাসেই নীলমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাকও হয়ে গিয়েছিল।
রাম আশিসের বাবা চিংকু অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই ছয় লাখ রুপি মেয়ের বিয়েতে খরচ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণে রাম ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কারণ, তিনি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই রুপির ভাগ চেয়েছিলেন।