ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে শহীদ আফ্রিদি, তোপের মুখে ক্ষমা চাইলেন আয়োজকেরা
Published: 2nd, June 2025 GMT
দুবাইয়ে ভারতীয়দের একটি অনুষ্ঠানে শহীদ আফ্রিদি উপস্থিত থাকায় তোপের মুখে পড়েছেন আয়োজকেরা। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ভারতের কোচি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (কুসাট) সাবেক শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে ক্ষমা চেয়েছেন আয়োজকেরা।
আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, আয়োজক সংগঠনটি তাদের অনুমোদিত নয়। অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানত না।
দুবাইয়ের পাকিস্তান অ্যাসোসিয়েশন দুবাই (পিএডি) নামের কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় গত ২৫ মে। এর আয়োজক কোচি ইউনিভার্সিটি বিটেক অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বা সিইউবিএএ-ইউএই। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ইন্টার-কলেজিয়েট ড্যান্স ইভেন্টে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আফ্রিদি ও পেসার উমর গুলকে দেখা যায়। উপস্থিত ব্যক্তিদের আফ্রিদির নামে ‘বুম বুম’ উল্লাসও করতে দেখা যায়।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মে মাসে ভারত প্রতিবেশী দেশটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে একপর্যায়ে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা করে। দুই দেশের ওই সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আফ্রিদির কিছু মন্তব্য ভারতে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ভারতে যেসব পাকিস্তানি ক্রীড়াবিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডল বন্ধ করে দেওয়া হয়, আফ্রিদিও তাঁদের একজন।
আরও পড়ুনরাতে স্বপ্নে জয়াসুরিয়া-মুরালিকে পিটিয়ে পরের দিন বিশ্ব রেকর্ড আফ্রিদির০৬ এপ্রিল ২০২৫এমন প্রেক্ষাপটের মধ্যে আফ্রিদিকে সিইউবিএএর অনুষ্ঠানে দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হন ভারতের অনেকে। ভারতের কেরালা রাজ্যের সাবেক বিজেপি সভাপতি কে সুরেন্দ্রন আফ্রিদির উপস্থিতির মাধ্যমে আয়োজকদের বিরুদ্ধে পেহেলগামের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের অসম্মান করার অভিযোগ তোলেন। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) সিইউবিএএ–ইউএই কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বাতিল করতে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগও দায়ের করে।
এবিভিপি কেরালা রাজ্যের সেক্রেটারি ইইউ ঈশ্বরাপ্রসাদ বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম সন্দেহজনক, যেখানে ভারতবিদ্বেষীরা উপস্থিত ছিলেন। এটি পেহেলগামে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে ভারতের জন্য অসম্মান।’
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আগেই অনুষ্ঠানের ভেন্যু চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল জানিয়ে বলা হয়, ‘ক্রিকেটাররা সেখানে অন্য একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। আমাদের অনুষ্ঠান যখন শেষের দিকে, তখন হঠাৎই সেখানে উপস্থিত হন তাঁরা। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আয়োজক কমিটির কেউ তাঁদের আমন্ত্রণ জানাননি। অনুষ্ঠানের সূচিতে ওই ব্যক্তিদের নামও ছিল না।’
তবে ভারতীয়দের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকলে এ নিয়ে ক্ষমা চেয়েছে সংগঠনটি, ‘আমাদের কাজের কারণে কেউ আহত বা অপমানবোধ করে থাকলে তার জন্য আমরা গভীরভাবে অনুতপ্ত। এটি কখনোই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। এতে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।’
এদিকে কোচি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, সিইউবিএএ-ইউএই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।
আরও পড়ুনভারতের গণমাধ্যম কার্টুন নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে: বললেন আফ্রিদি০৯ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র উপস থ ত দ র অন স ইউব
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।