রাজশাহীতে ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯ জনের শরীরেই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের অধিকাংশই চিকিৎসক। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ৬০ শতাংশ। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস নিয়ে রাজশাহীতে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিরা কয়েক দিন ধরে হালকা জ্বর, সর্দি ও কাশিতে ভুগছিলেন। সোমবার (২ জুন) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নয়জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খন্দকার মো.

ফয়সল আলম বলেছেন, “কয়েক দিন ধরেই নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে। সোমবার ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, তাদের মধ্যে ৯ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সম্ভবত সাতজন চিকিৎসক। সবাই হালকা উপসর্গে ভুগছেন, কিন্তু শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগছে। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষকরাই পরীক্ষাগুলো করছেন।”

অধ্যক্ষ আরো বলেন, “আক্রান্ত ব্যক্তিরা হাসপাতালে ভর্তি না হওয়ায় বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। তবে, করোনা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষ করে বয়স্ক ও ডায়াবেটিসসহ জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য। তাই, সতর্ক থাকা জরুরি। অন্তত ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা গেলে দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে নমুনা জমা দিয়ে পরীক্ষাটি করা যায়। এ ক্ষেত্রে মাস্ক পরে আসা বাধ্যতামূলক এবং পরীক্ষার জন্য সরকারি ফি ১০০ টাকা নির্ধারিত। দুপুরের মধ্যে পরীক্ষার ফল পাওয়া যাচ্ছে।”

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেছেন, “বর্তমানে একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন, যার করোনা শনাক্ত হয়েছে। অনেকের পজিটিভ আসলেও শরীরের অবস্থা ভালো থাকায় তারা হাসপাতালে ভর্তি হননি। ভর্তি থাকা রোগীর চিকিৎসা যথাযথ প্রক্রিয়ায় চলেছে।”

ঢাকা/কেয়া/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ