Prothomalo:
2025-07-30@10:39:00 GMT

কোরবানি যেন ‘শো অফ’ না হয়

Published: 4th, June 2025 GMT

ঈদের আনন্দ সব মানুষের একরকম হয় না। কোরবানির ঈদ যেমন একজন সামর্থ্যবান মানুষের জন্য উৎসবের উপলক্ষ, তেমনি একজন অসামর্থ্যবান মানুষের জন্য হয়ে দাঁড়ায় নানা অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশ আর চাপের কারণ।

নিম্ন আয়ের বা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এক অদ্ভুত দ্বিধার মধ্যে পড়ে যায় এই ঈদে। একদিকে ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে চায়, অন্যদিকে বাজেট, ঋণ, বাজারদর আর সামাজিক চাপে কাতর হয়। পশুর দাম, জবাইয়ের খরচ, বিতরণের ব্যয়—সবকিছু সামলানোর চাপে কোরবানিই দেওয়া সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে।

এখানে একশ্রেণির মানুষ আছেন, যাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দামি গরুকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করে কোরবানিকে প্রতিযোগিতায় রূপ দেন। আর অসামর্থ্যবান পরিবারের মা-বাবা হিসাব করে দেখেন সন্তানদের হাসিমুখের পেছনে কতটা ত্যাগ জমা হয়ে আছে।

কোরবানি করা যেমন ইসলামের একটি মহান শিক্ষা, তেমনি সেটা সাধ্যের মধ্যে করাই মূল শিক্ষা। কিন্তু সমাজে একধরনের অদৃশ্য প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। কে কত বড় গরু কোরবানি দিচ্ছেন, এই প্রতিযোগিতার বোঝা সবচেয়ে বেশি পড়ে মধ্যবিত্তের লোকজনের ঘাড়ে। কারণ, তাঁরা চাইলেও না পারেন দেখাতে, না পারেন বাদ দিতে। মাঝামাঝি থেকে দুই দিক সামলানোই তাঁদের নিয়তি।

তবু তাঁরা কোরবানি করেন। কেউ ধারকর্জ করেন, কেউ সারা বছরের সঞ্চয় ভাঙেন। কারণ, তাঁরা জানেন, সন্তানদের সামনে আনন্দের মুখ গড়ে তুলতে হলে পেছনের ত্যাগ গোপন রাখতে হয়।

এই প্রবণতা কোরবানির মূল শিক্ষা ও উদ্দেশ্যকে আড়াল করে দিচ্ছে। এক পাশে আছে দামি গরুর ভিডিও ভাইরাল করার উন্মাদনা, অন্য পাশে আছে গরিব মানুষদের মধ্যে লুকিয়ে থাকার লজ্জা। একদিকে আলোকসজ্জিত কোরবানি, অন্যদিকে চুপচাপ নীরব থাকা অসহায় পরিবার।

কোরবানির মূল শিক্ষা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলা পরিষ্কারভাবে কোরআনে বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট তাদের মাংস ও রক্ত পৌঁছায় না, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা হজ: ৩৭) এই আয়াত আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, কোরবানির বাহ্যিক রূপ নয়, বরং অভ্যন্তরীণ খোদাভীতিই আসল।

কোরবানি এমন এক ইবাদত, যেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই একমাত্র লক্ষ্য। এখানে বড় গরু নয়, বড় নিয়তের মূল্য। এই কোরবানির ঈদে আমাদের দরকার একটু সহমর্মিতা, একটু বুঝেশুনে মূল্যায়ন করা—কে কী করলেন, তার চেয়ে বড় কথা হলো, কে কীভাবে ত্যাগ করলেন।

ঈদ যেন শুধু গরুর দাম নয়, বরং আত্মত্যাগ, সহানুভূতি আর মানবিকতার শিক্ষা দেয়। কোরবানি আমাদের কখনোই অর্থবিত্তের অহংকার দেখানো শেখায় না; বরং শেখায় ত্যাগের মর্মবাণী। তাই কোরবানির পশু কেনার অসুস্থ প্রতিযোগিতা পরিহার করি এবং পশুর দাম গোপন রাখি আর সেটাই প্রকৃত ত্যাগ বলে মনে করি।

ইসতিয়াক আহমেদ শিক্ষার্থী, নওগাঁ সরকারি কলেজ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক রব ন র

এছাড়াও পড়ুন:

নিউ ইয়র্কে নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল ম্যানহাটনে একটি বহুতল অফিসে বন্দুক হামলায় নিহত হয়েছেন নিউ ইয়র্ক পুলিশের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬)। জানা গেছে, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসী ছিলেন। খবর রয়টার্সের।

নিহত কর্মকর্তা দিদরুল ইসলামকে একজন ‘বীর বাংলাদেশি অভিবাসী’ হিসেবে উল্লেখ বর্ণনা করেছেন নিউ ইয়র্কের মেয়র এবং নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার। তারা বলেছেন, ওই কর্মকর্তা নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে অন্যদের জীবন রক্ষা করেছিলেন।

সোমবার ম্যানহাটনের মিডটাউন অফিস টাওয়ারের ভেতরে এক বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬) সহ চারজনকে হত্যা করে। হামলাকারী পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

পুতিনকে এবার ১২ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প

নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৪

নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “ভয়াবহ একটি বন্দুক সহিংসতার ঘটনায় আমরা চারটি প্রাণ হারিয়েছি, যার মধ্যে নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের একজন সদস্য ‘অফিসার ইসলাম’ রয়েছেন। 

অ্যাডামস জানান, নিহত অফিসার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নিউ ইয়র্ক পুলিশে কর্মরত ছিলেন এবং তিনি বাংলাদেশ থেকে আসা একজন অভিবাসী।

মেয়র বলেন, “হামলার সময় অফিসার ইসলাম অন্যদের জীবন রক্ষা করছিলেন, তিনি নিউ ইয়র্কবাসীদের রক্ষা করছিলেন। তিনি এই শহরকে ভালোবাসতেন এবং আমরা যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই বলেছেন যে, তিনি একজন সৎ মানুষ ও ঈশ্বরে বিশ্বাসী ব্যক্তি ছিলেন।”

মেয়র আরো জানিয়েছেন, সোমবার রাতে তিনি অফিসর ইসলামের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। 

মেয়র আরো বলেন, “আমি তাদেরকে বলেছি, অফিসার ইসলাম একজন একজন বীর এবং আমরা তার ত্যাগের প্রশংসা করি।”

নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ সংবাদ সম্মেলনে জানান, অফিসার ইসলাম বিবাহিত ছিলেন এবং তার দুটি সন্তান ছিল। তার স্ত্রী তৃতীয় সন্তানের মা হতে চলেছেন।

পুলিশ কমিশনার বলেন, “অফিসার ইসলাম নিজেকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিলেন। তিনি চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন, তাকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
  • স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগীকেও বাঁচানো যায়
  • রাগ নিয়ন্ত্রণে হাদিসের ৭ উপদেশ
  • চুলে গুঁজে দিলেন ৭১১ গলফ ‘টি’
  • বাবা হারালেন চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত
  • ‘নতুন একটি দলের কয়েকজন মহারথী’ বলার পর বক্তব্য বদলালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু
  • ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
  • কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ধাক্কা দিয়ে দুমড়েমুচড়ে গেল যাত্রীবাহী বাস
  • নিউ ইয়র্কে নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো