ঈদ মানেই সিনেমাপ্রেমীর জন্য এক উৎসব। সারাবছর দর্শকশূন্য প্রেক্ষাগৃহগুলো ঈদ এলে যেন প্রাণ ফিরে পায়। নতুন সিনেমার অভাবে যখন প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা কমতে কমতে এসে ঠেকেছে ষাটের ঘরে, তখনও একমাত্র ঈদকে ঘিরেই দেখা যায় আশার আলো।
বছরজুড়ে মৌসুমি নির্মাতারা ঘুমিয়ে থাকলেও ঈদ এলে যেন ঘুম ভেঙে উঠে আসে তাদের স্বপ্নপূরণের তাড়না। এ বছরও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঘোষণা এসেছিল ১২টি সিনেমার মুক্তির। বাস্তবতার কশাঘাতে– প্রেক্ষাগৃহ সংকট, বুকিং এজেন্টদের অনীহা, আর্থিক অনিশ্চয়তা– পিছু হটেছেন অনেকে।
ফলে ঈদে মুক্তি প্রতীক্ষিত তালিকায় শেষ পর্যন্ত টিকে আছে মাত্র ছয়টি সিনেমা। এগুলো হলো– ‘তাণ্ডব’, ‘টগর’, ‘নীলচক্র’, ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’, ‘ইনসাফ’ ও ‘উৎসব’। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ‘নাদান’ ও ‘শিরোনাম’– যেগুলোর নির্মাতারা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, এবার ঈদে তারা আসছেন না। অন্যদিকে, ‘পিনিক’, ‘সর্দারবাড়ির খেলা’ ‘আলী’ ও ‘গোয়ার’– এ সিনেমাগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চুপ।
তাণ্ডব
ঈদের সিনেমার মাঠে এবারও সবচেয়ে বড় চমক নিয়ে হাজির হচ্ছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান। রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তাণ্ডব’ নিয়ে দর্শকের আগ্রহ তুঙ্গে। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত পোস্টার ও টিজারে ধরা দিয়েছে শাকিবের নতুন লুক। তাঁর বিপরীতে প্রথমবারের মতো সিনেমায় অভিনয় করছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ সাবিলা নূর। এ সিনেমায় আরও এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন দুই বাংলার অভিনেত্রী জয়া আহসান। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে হামলার ঘটনাকে ঘিরে এগিয়েছে সিনেমার গল্প, যার ভেতরে রয়েছে টানটান উত্তেজনা আর অ্যাকশনের ঝলক। ইতোমধ্যে সিনেমার দুটি গান প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া লিচুবাগানে গানটি দারুণভাবে আলোচিত হচ্ছে। এতে শাকিব খানের সঙ্গে সাবিলা নূরের পারফর্ম দারুণভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। দুই দিনে প্রায় পাঁচ মিলিনিয় দর্শক দেখেছেন গানটি। এদিকে গতকাল সিনেমাটি সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে বলে জানিয়েছেন রায়হান রাফী। রাফী জানিয়েছেন, ‘তাণ্ডব নিয়ে সবাই যা ভাবছেন তার চেয়েও বড় চমক রয়েছে। তাণ্ডবে এমন কিছু দেখবেন, যা আগে কখনও দেখেননি দর্শক। আমার বিশ্বাস সিনেমাটি দেখে চমকে যাবেন সবাই।’
ইনসাফ
ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে আরও একটি আলোচিত সিনেমা ‘ইনসাফ’। সঞ্জয় সমদ্দারের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন তাসনিয়া ফারিণ, মোশাররফ করিম ও শরিফুল রাজ। মাল্টিকাস্টিং এ সিনেমার মধ্য দিয়ে ফারিণ প্রথমবারের মতো পূর্ণদৈর্ঘ্য বাণিজ্যিক সিনেমার নায়িকা হিসেবে বড়পর্দায় হাজির হচ্ছেন। অন্যদিকে, মোশাররফ করিম এ প্রথম বড়পর্দায় আসছেন নেতিবাচক চরিত্রে। সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে সমাজে বিচার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে কেন্দ্র করে। সিনেমাটিতে নব্বই দশকের ‘কুলি’ সিনেমার ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’ গানটির ফের নতুন করে সংযোগ করা হয়েছে। যে গানটি গেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী মিলা। সিনেমাটি ইতোমধ্যে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দার। সিনেমাটি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী পরিচালক। তাঁর ভাষ্য, ‘বাণিজ্যিক সিনেমায় যা যা থাকা দরকার, তার সবই রয়েছে ইনসাফে। পাশাপাশি শরিফুল রাজ ও মোশাররফ করিমকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যা দেখে দর্শকরা চমকে যাবেন। মোশাররফ করিমকেও এভাবে হাজির করা যায় যা তাদের নতুন করে ভাবাবে। আমার বিশ্বাস দর্শকরা সিনেমার প্রতিটি দৃশ্যেই হাততালি দেবেন।’
নীলচক্র
সাইবার অপরাধভিত্তিক থ্রিলার ‘নীলচক্র’ এবার ঈদে আসছে শুধু স্টার সিনেপ্লেক্সে। ‘নীলচক্র’ সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। তাঁর সঙ্গে আরও আছেন মন্দিরা চক্রবর্তী, ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম, খালেদা আক্তার কল্পনা, শাহেদ আলী, প্রিয়ন্তী ঊর্বী, মাসুম রেজওয়ান প্রমুখ। মিঠু খানের এই সিনেমা ইতোমধ্যে সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়ে গেছে আমেরিকান ফিল্ম মার্কেটে। প্রযুক্তির কল্যাণে বিভিন্ন মাধ্যমে নেশায় বুঁদ হয়ে আছে নতুন প্রজন্ম। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আকর্ষণীয় নানা ফাঁদ তৈরি করে অনেকেই নিজেদের কার্যসিদ্ধি করে নিচ্ছেন। অনেকে পা দিচ্ছেন সেই ফাঁদে। প্রযুক্তির সেই ফাঁদের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সাসপেন্স থ্রিলার সিনেমা ‘নীলচক্র’। নির্মাতা জানান, নীলচক্র অ্যাকশন সিনেমা নয়। তবে এই সিনেমায় যে গল্প রয়েছে তা দর্শকদের শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
টগর
আলোক হাসানের পরিচালনায় ‘টগর’ নিয়ে পর্দায় ফিরছেন আদর আজাদ ও পূজা চেরী জুটি। অ্যাকশন ও থ্রিলার ঘরানার এ সিনেমা নিয়ে দর্শকের আগ্রহ বাড়ছে। পোস্টার, টিজার ও গান ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। নির্মাতা বলেন, টগর দারুণ এক অ্যাকশনধর্মী গল্পের ছবি। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটি দর্শকদের ঈদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেবে।
এশা মার্ডার: কর্মফল
আজমেরী হক বাঁধন অভিনীত ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ সিনেমাটি এবার ঈদে মুক্তির তালিকায়। একজন পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে বাঁধনের দৃপ্ত উপস্থিতি দেখা যাবে এখানে। তিন তরুণীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে আবর্তিত হয়েছে গল্প। সানী সানোয়ার পরিচালিত সিনেমাটি মূলত মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি দেওয়া হবে। বিভিন্ন চরিত্রে সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন পূজা, ফারুক আহমেদ, শরীফ সিরাজ, শতাব্দী ওয়াদুদ, সুষমা সরকার, নিবিড় আদনান, হাসনাত রিপন, সরকার রওনক রিপন, শিল্পী সরকার অপু, এ কে আজাদ সেতু, ইশিকা সাকিন, সৈয়দ এজাজ আহমেদ প্রমুখ। এ ছাড়া বিশেষ একটি চরিত্রে দেখা যাবে মিশা সওদাগর ও সুমিত সেনগুপ্তকে।
উৎসব
‘ঈদের উৎসব, সিনেমার উৎসব’– এই স্লোগানকে সামনে রেখে নির্মাতা তানিম নূর হাজির হয়েছেন ‘উৎসব’ সিনেমা নিয়ে। একঝাঁক নাট্যশিল্পী ও নব্বই দশকের জনপ্রিয় মুখ জাহিদ হাসান, অপি করিম, সাদিয়া আয়মানসহ অনেকে অভিনয় করেছেন এতে। দীর্ঘদিন পর বড়পর্দায় ফিরছেন জাহিদ হাসানও। নির্মাতা জানান, ঈদের এই আনন্দে সিনেমার গল্পেই তুলে ধরেছি উৎসবের রং।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম র ব শ ব স ন লচক র পর দ য় চর ত র পর চ ল ইনস ফ
এছাড়াও পড়ুন:
পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।