Samakal:
2025-09-18@01:11:57 GMT

চট্টগ্রামে ছোট গরুর বড় দাম

Published: 5th, June 2025 GMT

চট্টগ্রামে ছোট গরুর বড় দাম

এক দিন পরই ঈদুল আজহা। কোরবানির এই উৎসবকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তে জমজমাট চট্টগ্রামের ২২৮টি স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাট। প্রায় প্রতিটি হাটে এসেছে পর্যাপ্ত পশু। তবে দাম বেশ চড়া।

চট্টগ্রামে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের চাহিদা ছোট আকারের গরুর। তাই ব্যাপারীরা ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি নিয়ে এসেছেন। তবে আকার ছোট হলেও এসব গরুর দাম বেশি হাঁকছেন বিক্রেতা। গোখাদ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে ছোট গরুর দাম বেশি বলে দাবি করছেন তারা।

ওজনভিত্তিক গরুর আকার প্রসঙ্গে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.

মো. আলমগীর জানান, সাধারণত এক থেকে দুই মণ ওজনের গরু ছোট আকারের। দুই থেকে তিন মণ ওজনের গরু মাঝারি এবং এর ওপরের ওজনের গরু বড় আকারের। চট্টগ্রামে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। জোগানও রয়েছে। বড় খামারে দুই হাজার কেজি ওজনের (প্রায় ৫০ মণ) বেশ কিছু গরু আনা হয়েছে।

হামজারবাগ থেকে গতকাল বুধবার তিন ছেলেকে নিয়ে নগরের বিবিরহাটে কোরবানির গরু কিনতে এসেছেন দুই চাকরিজীবী মো. লোকমান ও মো. ইমন। সামর্থ্য না থাকায় দুই পরিবার এবার এক গরু দিয়ে কোরবানি করবে। বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা বেশ কিছু গরু দেখেন তারা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দেখেও গরু না কিনে বাজার থেকে বের হতে দেখা যায় তাদের। 

জানতে চাইলে মো. লোকমান বলেন, ‘আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই একই ভবনের আরেক পরিবারের সঙ্গে এবার কোরবানি করতে ছোট গরু কিনতে এসেছি। বাজারে ছোট ও মাঝারি গরু পর্যাপ্ত থাকলেও দাম বেশি। গতবার যেসব গরু ৬০ থেকে ৭০ হাজারে কেনা গেছে, এবার তার দাম চাইছে ১ লাখ ২০ হাজারের ওপরে।’

মো. ইমন বলেন, ‘ছোট অনেক গরু দেখে একটিও কিনতে পারিনি। কারণ গরু পছন্দ হলেও দাম বাজেটের চেয়ে বেশি। ছোট একটি গরুর দাম কেমনে লাখ টাকার ওপরে হয়? এত দাম দিয়ে কীভাবে কোরবানির পশু কিনবে মধ্যবিত্তরা? কোরবানি ঘনিয়ে এলেও দাম ছাড়ছেন না ব্যাপারীরা।’ এ দুই ক্রেতার মতো দাম বেশি নিয়ে হতাশার কথা প্রকাশের পাশাপাশি অনেকে ঝাড়লেন ক্ষোভও।

ভোলার লালমোহন থেকে দুই ট্রাক গরু নিয়ে আসা ব্যাপারী মো. ইদ্রিস বলেন, ‘বাজারে এবার ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। তাই ছোট গরু বেশি এনেছি। তবে বেশির ভাগ ক্রেতা দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এবার ছোট গরুর দাম কিছুটা বেশি।’ কুমিল্লা থেকে ৩০টি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী মাহি উদ্দিন। এর মধ্যে ২০টি ছোট। মাহি উদ্দিন বলেন, ‘বড় গরু কেনে খুব কম মানুষ। বাজারে ছোট গরুর ক্রেতার সমাগম থাকলেও বিক্রি কম। বেশির ভাগ ক্রেতা দরদাম করছে কেবল। গরুর লালন-পালন খরচ বেশি। তাই সামান্য লাভে বিক্রি করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।’

চট্টগ্রামের পশুর হাটে কুমিল্লা, ফেনী, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, বগুড়া, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী, ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশির ভাগ পশু আসে। এবার চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলার ২২৮টি স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাটে গত ২৯ মে থেকে পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। নগরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ব্যবস্থাপনায় ১৩টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট বসেছে। এর মধ্যে বিবিরহাট, সাগরিকা ও নূরনগর হাউজিং সোসাইটির হাট বড়।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বলেন, এবার পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি। এর বিপরীতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২টি, যা গতবার ছিল ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯টি। উৎপাদিত পশুর মধ্যে গরু আছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৩টি। হাট মনিটরিংয়ে ৬৬টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ ল আজহ ক রব ন ওজন র

এছাড়াও পড়ুন:

আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। 

এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আরো পড়ুন:

কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল

জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত

লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, ‍“২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।” 

“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি