Risingbd:
2025-06-07@17:01:08 GMT

‘একবার নারী হন, হে প্রভু’

Published: 7th, June 2025 GMT

‘একবার নারী হন, হে প্রভু’

লক্ষ লক্ষ বছর ধরে আমার মতো কোটি কোটি ক্ষুদ্র জীব সৃষ্টি করার পর, আমাদের ভালো কাজের জন্য ‘স্বর্গ’ এবং মন্দ কাজের জন্য ‘নরক’ তৈরি করার পর, হে প্রভু, যিনি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন: প্রভু, অবশ্যই আপনি এখন স্বর্গের বাগানের মিষ্টি ঘ্রাণ উপভোগ করার জন্য তৈরি হচ্ছেন। অথবা হয়তো আপনি দেবদূতদের আদেশ দিচ্ছেন, জ্বলজ্বলে মুখমণ্ডল নিয়ে যারা হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি আপনার অন্তরাত্মার একটি ক্ষুদ্র অংশ হতে পারি, কিন্তু আমার অনুরোধ করার অধিকার আছে। কী, আছে না? 

কোনো এক সময়ের কথা, যখন আমি বিশেষভাবে পলকা এবং অপ্রতিরোধ্য ছিলাম, যদিও তখন আমার সত্যিকারের তেমন একটা সমস্যা ছিল না। আমার চারপাশে সবসময় চারটি দেয়াল ছিল এবং স্বাধীনতা, হালকা বাতাসের রূপে, অনুভূতি, যা আপনার বিশুদ্ধ কল্পনার এক অসাধারণ ফসল, আমার মুখে কেবল তখনই পরশ বুলিয়ে দিয়েছিল, যখন আমি জানালা খুলেছিলাম। আমি কেবল সেই জুঁই ফুলের গাছটিকে স্পর্শ করতাম, যা রাতের বেলায় আশেপাশের বাতাসকে ভারী মিষ্টি গন্ধে ভরিয়ে দিত। সাদা তুলার মতো মেঘগুলো, যেগুলোর কোণা অস্তমিত সূর্যের শিখার মতো রশ্মিতে সজ্জিত হয়েছিল এবং পেছনের আঙ্গিনায় একমাত্র ‘কারি লিফ’ গাছের ডালের মধ্য দিয়ে এক ঝলক দেখা দিয়েছিল, সেই ঘন কালো মেঘের গর্জন, যা উত্তেজিত হাতির মতো দেখাত— এগুলো আমি বাড়ির মাঝের ঘরের জানালার ফাঁক গলিয়ে দেখেছি। শুধু আমার হৃদয়ে ছিল যে, আমি বর্ষার ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছি, মালায় ঝুলানো মুক্তার মতো। সামনের আঙিনায় কখনো আমার পা পড়েনি এবং শুধু বাড়ির সীমানার মধ্যে মেঝেতে পা পড়েছে। ঘোমটা কখনো আমার মাথা থেকে নামেনি। আমার চোখের পাতা লজ্জায় পরিপূর্ণ ছিল। আমার ঠোঁটের মাঝে হাসি খেলা করেনি এবং আমার চোখও মৌমাছির মতো এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করেনি। আর এসব কারণেই আম্মা আমাকে কঠোর নজরে রাখতেন না। এটা করবে না, ওটা করবে না, এমন ভাবে দাঁড়াবে না, অমন করে তাকাবে না … আমাকে এ ধরনের কথা বলার প্রয়োজনিয়তা তিনি অনুভব করেননি। এমনকী আমার একাধিক জিনিসের কথা ভাবার অভ্যাসও ছিল না।

কিন্তু এখনো, হে প্রভু, আমার একটা ছোট্ট প্রশ্ন আছে! এ সবকিছু— অর্থাৎ, এই চকচকে, সবুজ রঙের ঝিঁ ঝিঁ পোকা, চারপাশের রঙ, ঝলমলে পাথর, মাটির সুগন্ধ, হাওয়া, মিষ্টি ঘ্রাণ, গাছপালা এবং বৃক্ষরাজি, ক্ষেত-খামার এবং বন-জঙ্গল, সাগরের গর্জন, বৃষ্টি, বৃষ্টির মাঝে কাগজের নৌকা— এগুলো আমি স্পর্শ করতে পারি না কিংবা এদের মধ্যে নিমজ্জিত হতে পারি না, এগুলোর গন্ধ নিতে পারি না, দু’চোখ মেলে দেখতে পারি না, এসবের দিকে আমি আমার মুখমণ্ডল তুলতে পারি না। আপনি এসব কিছু তাকে দিয়েছেন, আপনার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, তাই না? 

একমাত্র সত্য বলে আমি তাই জানি। এ কারণেই আমি বেশি সমস্যা সৃষ্টি করিনি, কারণ এটা আপনার নির্দেশ, আমার মনে হয়। হতভাগিনী আম্মা! তিনি আসলে কী-ই-বা করতে পারতেন? সুতরাং আমি কখনই আড়ালে-আবডালে কথা বলিনি এবং আম্মা যা বলেছিলেন, আমি তাই শুনেছি। আমাকে সেসব কথা বলতে দিন: অবশ্যই তোমাকে বিনয়ী হতে হবে, তিনি তোমার জন্য দেবতা, তিনি যা বলে তাই তোমাকে করতে হবে, তোমাকে বিশ্বস্ততার সঙ্গে তাকে সেবা করতে হবে। এ সবকিছুই অত্যন্ত গভীরভাবে আমার হৃদয়ে খোদাই করা হয়েছে।
আব্বা সম্পর্কে? থাক না! যখন আম্মাকে ছেড়ে যেতে হয়েছিল, তখন মনে হয়েছে আমার হৃদয় ছিঁড়ে গিয়েছে এবং হাতের তালুতে নিয়ে তা শক্তভাবে নিংড়ানো হয়েছে। আম্মাও কষ্ট পেয়েছিলেন। তবুও তিনি কিছু বলেননি। তার হৃদয়ে একটি করাত এলোপাথারি কাটাকাটি করেছিল। কিন্তু তবুও তার চোখে ছিল ঝলমলে আভা; শুধু চোখের কোণের অংশ ভেজা ছিল।

হে প্রভু, হয়তো আপনি বুঝবেন। তারা বলে, আপনি আমাদের জন্য শত শত মায়ের ভালোবাসা বহন করেন; মায়ের হৃদয়ে যে দহন রয়েছে, তা আপনার মধ্যে থাকা অন্য শত শত হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। কিন্তু আমি আপনাকে কোথাও দেখলাম না। আমি প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম। আম্মা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন, তার শীতল হাত আমার উত্তপ্ত গালের উপর আলতো করে পরশ বুলিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তারপর আপনি আমাকে আমার মায়ের আলিঙ্গন থেকে টেনে আনেন এবং দূরে নিয়ে যান। আমি ছিলাম স্বর্ণ ও রূপা দিয়ে নকশী করা কাপড়ে জড়ানো এক মূল্যবান রত্ন।

আমি জানতাম আম্মা ফুঁপিয়ে কেঁদেছেন। আমাদের দূরত্ব যত বেশি হোক না কেন, আমি তার ফোঁপানোর শব্দ শুনতে পেয়েছি। এখানে একটি ছোট্ট প্রশ্ন আছে: যদি সে এসে আমাদের সঙ্গে শেকড় স্থাপন করে, তবে কেমন হবে? যখন আপনি এত আরামদায়কভাবে জন্তু-জানোয়ারের রাজ্য সৃষ্টি করেছিলেন, ফুলের ভেতরের সোনালী আবরণযুক্ত সূক্ষ্ম সূতার মতো আঁশ, এসব আশ্চর্য পুকুর আর হ্রদ, নদী ও খাল-বিল, তখন কী আমার হৃদয়ে উঁকি দিয়ে আমার ভয়, ইচ্ছা, স্বপ্ন এবং হতাশা দেখার সময় আপনার ছিল না?

নিজের বলতে আমার কাছে আর কিছুই ছিল না। আমাকে অন্যের বাগানে গাছের শেকড় স্থাপন করতে হয়েছিল, সেখানে নতুন অঙ্কুর গজিয়ে তুলতে হয়েছিল, সেখানে ফুল ফোটাতে হয়েছিল। সে নিবীড়ভাবে জড়িয়ে পড়ছিল, যখন আমার নিজের পরিচয় দ্রবীভূত হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছিল। হে প্রভু, আপনি কী জানেন, আমার নতুন নাম কী ছিল? তার স্ত্রী। আমার শরীর ও মন আমার নিজের ছিল না। আমার কাছে আশ্চর্যের বিষয় যে, সে আমার শরীরের প্রতি আকৃষ্ট ছিল, যার পুনরুদ্ধারের শক্তি সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। সে আমাকে নিজের আয়ত্তে নিয়েছিল। সেই মুহূর্তগুলো ছাড়া তাকে আপনি যে ক্ষমতার অধিকার দিয়েছ, তা তার হাতে উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছিল।
তার সমস্ত কূটকৌশল কোন জায়গায় এবং কীভাবে শুরু হয়েছিল, তা আমি জানি না। এক মুহূর্তে সে আমার হৃদয়কে টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিতে পারত এবং প্রতিটি টুকরোকে বিভিন্ন কোণায় ছড়িয়ে রাখতে পারত। আমার শরীর ছিল তার খেলার মাঠ এবং আমার হৃদয় ছিল তার হাতের খেলনা। এভাবে, ঠিক এমনভাবে, আমি মলম লাগিয়ে আমার হৃদয় মেরামত করার চেষ্টা করতাম, কিন্তু সে ইচ্ছামতো তা ভাঙ্গতে থাকত। হে প্রভু, কেন আমাকে তারখেলনা হতে হলো? আমি তাকে ঘৃণা করি না, এমনকী আমি চাইও না সে আমার খেলনা হোক। যদি আমি তার মেরুদণ্ড হতাম এবং সে যদি হত সেই হাত, যা আমার অশ্রু মুছে দিতে পারত …

এক সপ্তাহও হয়নি সে আমাকে ব্যবহার শুরু করেছে, যখন সে পাগলের মতো চিৎকার-চেঁচামেঁচি শুরু করেছিল। আমি কী? আমার অবস্থান কী, অনেকেই আছেন যারা আমাকে লক্ষ লক্ষ রুপি দেবেন, কিন্তু আমি বাড়িতে তোমার মতো এক ভিক্ষুককে নিয়ে এসেছি! আমি কীভাবে জবাব দিতাম? আম্মার উপদেশ মতো আমি নিশ্চুপ থেকেছি। সে আমাকে আদেশ করেছে, ‘তোমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে শীঘ্রই পঞ্চাশ হাজার রুপি নিয়ে আসো। তা না হলে, সেই বাড়িতে তুমি আর কখনই পা রাখতে পারবে না।’ আমি আম্মার কাছে ফিরে যাই, যেন আমি নোংরা কাপড়ে মোড়ানো কোনো এক সাজসজ্জার অলঙ্কার।

আম্মার মুখমণ্ডল আলোয় ভরে যায়। এক মুহূর্তে তার চোখে শত শত সূর্য ও চাঁদ জ্বলে উঠে। যখন তিনি দেখলেন যে, সে আমার সঙ্গে আসেনি, তখনই তার চোখ দুটি ম্লান হয়ে যায়। তিনি আলতো করে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। তার পঞ্চাশ হাজার রুপির দাবি আমার মুখের সমস্ত আনন্দকে মুছে ফেলে। সেই রাতে আমি যখন আম্মার পাশে ঘুমিয়েছি, আমি শান্তি অনুভব করেছি, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তার কথা মনে পড়ে। আম্মার স্নেহময়ী হৃদয়ে একটি গর্তের মুখ খুলে যায়। সে হামাগুড়ি দিয়ে সেখানে ঢুকে পড়ে। তিন দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও আমি অধীর আগ্রহে তার জন্য অপেক্ষা করেছি। যখন সে জিজ্ঞেস করে আমি রুপি পেয়েছি কি না এবং যখন আমার শুকনো, নির্লিপ্ত মুখ দেখল, তখন বলল: ‘এই হচ্ছে আমাদের এখানে শেষ বার আসা। এখন থেকে তুমি আর ফিরে যেতে পারবে না; এমনকী তোমার বাবা-মাও আমাদের বাড়িতে যেতে পারবে না।’

আম্মা আমাকে পেট ভরিয়ে খাওয়ালেন। তিনি সমস্ত হৃদয়-মন দিয়ে আমাকে দোয়া করেন। তিনি আমার চুলের সব গিটে খুলে দেন এবং এমনভাবে আমার চুলে বিনুনি করেন, যেন তিনি তার সমস্ত স্নেহ-ভালবাসার চুম্বন এক সঙ্গে গেঁথে দিয়েছেন। তিনি আমার চুলে যে জুঁই ফুলের মালা জড়িয়েছেন, তাতে তাঁর মতোই সুগন্ধ রয়েছে। কানাকাম্বারা১ ফুলগুলো জুঁইয়ের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছিল। প্রতি দুই সেকেন্ড অন্তর আমি আম্মার দিকে ফিরে তাকাই। অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমি আমার অলস পা টেনে টেনে তার পেছনে হাঁটতে থাকি।

সে তার কথার বাইরে যাওয়ার মতো লোক ছিল না। তার অহংকারের সীমা থাকা উচিত নয় কী? আমি তার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর তিন দিন আমার খোঁপা খুলিনি। আমি আম্মার স্নেহ-মমতায় জড়ানো আদরের স্পর্শ হারিয়ে ফেলার ভয়ে ছিলাম। আমার হৃদয়-মন তার সঙ্গে বাঁধা ছিল; আর তার হৃদয় ছিল শেষ কথা বলার জন্য। তারপর আমি আম্মার সঙ্গে দেখা করিনি। হে প্রভু, এ ব্যাপারে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার প্রয়োজনিয়তা নেই। আপনি সব জানেন; আপনার খাতায় লিপিবদ্ধকারীরা প্রতিদিন এমন কোটি কোটি রিপোর্ট এনে দেয়, কিন্তু সেগুলো কলমে লেখা হয়েছে। অথচ এই রিপোর্টটি লেখা হয়েছে হৃদয়ের অনুভূতি দিয়ে, এক নারীর হৃদয়, হৃদয়ের তীক্ষ্ণ নিব এবং নিবের মধ্যে লাল কালি দিয়ে অক্ষরের পর অক্ষর লেখা হয়েছে। হয়তো এখন পর্যন্ত আপনার কাছে এমন কোনো অনুরোধ আসেনি, কারণ আপনার কাছে আমার মতো হৃদয়ের কোনো লিপিবদ্ধকারী নেই।

সব সময়ই আমি একজন আত্মার বন্দিনী হয়ে আছি, যার দরজা এবং জানালা বন্ধ। আমি আর কখনই আম্মা, অথবা আব্বা, কিংবা আমার ছোট ভাইকে দেখতে পাইনি। আমার সামান্য আশা ছিল যে, আম্মা চুপ থাকতে পারবেন না। আমি জানি তিনি অনেকবার আমাকে দেখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সে এমন এক শক্তিশালী দূর্গ তৈরি করেছিল যে, আম্মার সকল প্রচেষ্টা বিফলে গিয়েছে। অর্থকড়ির প্রতি তার লোভ-লালসা আমাদের সকল সম্পর্ককে নষ্ট করে দিয়েছিল, গলাধঃকরণ করেছিল প্রেম-ভালোবাসা ও আন্তরিকতা। সে একরোখা ছিল এবং নিজের অবস্থানের প্রতি ছিল দৃঢ় সংকল্প বদ্ধ।

কয়েকজন প্রতিবেশী আমাকে পরামর্শ দিয়েছিল যে, সে যেভাবে চিন্তা-ভাবনা করে, তাই সঠিক। এমনকী তুমিও অন্যদের কাছে প্রচার করবে যে, সে আমার ঈশ্বরতুল্য স্বামী, তাকে মান্য করা আমার কর্তব্য। সে এই জগতের যে কাউকে যে কোনো সময় চাইতে পারে, তার সঙ্গে দেখা করতে পারে। কিন্তু আমি? তোমরাও তো বলেছিলে যে, জন্মদাত্রী আম্মাও ঈশ্বরের সমান। তোমরা আরও বলেছিলে যে, আম্মার পায়ের নিচে বেহেশত রয়েছে। আর তারপরও আমি একবারের জন্য আম্মার সঙ্গে দেখা করতে পারি না। তুমি কী এসব ছোটখাটো সমস্যা সমাধানের জন্য সময় রেখেছ, যা আমার সীমিত চিন্তা-ভাবনাকে আঘাত করছে? তুমি কী মনে করো আমার সম্পূর্ণ জীবন একটি তিন ঘণ্টার নাটক, যেখানে তোমার কাছে আমি একজন অভিনয় শিল্পী? একটি বিষয় মনে রেখো: আমার সুখ ও দুঃখ ধার করা নয়। এসব পরিপূর্ণ করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং অনুভব করার জন্য। তুমি শুধু একজন বিচ্ছিন্ন হুকুমদাতা। যখন তোমার নিজের চরিত্রের একটা কিছু আমার মনে বিনা কারণে আঘাত করে, তখন কী হুকুমদাতা হিসেবে তোমার কোনো কর্তব্য নেই? নিদেন পক্ষে আমাকে একটু সান্ত্বনা দিতে পারো। এসব কিছুর জন্য আমার কী দোষ, আমাকে বলো?

সে কখনো আমাকে জিজ্ঞেস করেনি যে, আমি খেয়েছি কি না, অথবা পান করার মতো কিছু আছে কি না। কিন্তু সে জমি চাষ করেছে, বীজ বপন করেছে; ভঙ্গুর হৃদয় ও ক্লান্তি-ভরা মন থাকা সত্ত্বেও আমার দেহ ছিল টসটসে পাকা, গর্ভ ছিল প্রস্তুত এবং তারও বড্ড বেশি ক্ষুধা ছিল। আমি নিজেও একজন মা হওয়ার পথে ছিলাম, কিন্তু আমি ক্রমাগত আমার আম্মার বাড়ির দিকে ফিরে তাকিয়ে এক কোণায় দাঁড়িয়ে থেকেছি। আমি যতদূর দিগন্তপানে তাকিয়েছি, ততদূর পর্যন্ত কোনো গঠন বা আকৃতি দেখতে পাইনি। আমি শুধু কয়েকটি সবুজ স্মৃতির গাছ দেখেছি, যেগুলো থেকে পাতা ঝরে পড়ছিল এবং শুকনো ডালপালা নিয়ে বড় হচ্ছিল।

আমি পরে জানতে পেরেছি যে, আম্মা কোনোভাবে আব্বাকে রাজী করিয়েছিলেন যে, সবকিছু বিক্রি করে দিবেন, যা তারা নিজেদের জিনিসপত্র মনে করেছেন। তারপর তারা কুড়ি হাজার রুপি পুঁটলিতে বেঁধে আমাদের বাড়ি আসবেন। সেদিন কাক ডাকছিল, আমার ডান চোখ চুলকাচ্ছিল, অগ্নিচুল্লী একটানা হালকা শব্দ করছিল। সম্ভবত আম্মা আসবেন। আম্মা যাত্রা করেছিলেন, কিন্তু আসেননি। মনে হয় রাস্তায় কোথাও দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সবকিছুই অন্তহীন, জনশ্রুতি আছে। সে আমাকে আম্মার দেহ দেখতে যেতে দেয়নি। বরং তার পরিবর্তে সে অত্যন্ত সতর্ক ছিল যে, আমি যেন ঘটনার কিছুই শুনতে না পাই, এমনকী জানতেও না পারি।

এখানে আমাদের শহরের বড় হাসপাতালে মনে হয় আম্মার মৃতদেহকে কাটাছেঁড়া করেছে। সম্ভবত তারা তার হৃদপিণ্ড কাটেনি। তারা জমাট বাঁধা রক্ত খুঁজে পাবে না। তবে যদি তারা পেয়েও যায়, তার পরিবর্তে তারা জমাট বাঁধা আত্মা, অতিক্রম অযোগ্য একাধিক সীমা রেখা খুঁজে পাবে, দেখা যাবে বেশ কিছু অগ্নি পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়ার চিহ্ন। কিন্তু একটি বিষয় সত্যি: যদিও তাঁর দেহ জীবিত অবস্থায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল, কিন্তু মৃত্যু হওয়ার পর কেউ তার হৃদয় অথবা আত্মা স্পর্শ করেনি। এক অবিনশ্বর কুমারী, তার চোখ খোলা ছিল। আমি ভাবছি তিনি কাকে দেখার অপেক্ষায় চোখ খোলা রেখেছিলেন। তার হতভাগা চোখ দুটি কারোর অপেক্ষায় খোলা ছিল, কারও আগমনের জন্য প্রহর গুণছিল।    

এখান থেকে এবং সেখান থেকে, এমনকী জানালা থেকে। যদিও আমি ভেন্টিলেটরের ফাঁক গলিয়ে আসা খবর বিচ্ছিন্নভাবে শুনেছি। সে খবরের সবটুকু শুনেছিল, কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিল। আমার মনে হচ্ছিল আম্মার মৃত দেহের পাশে আব্বা বসে আছেন এবং আম্মার কোমরে বাঁধা কুড়ি হাজার রুপির পুঁটলি খুলে নিয়ে হাতে ধরে রেখেছেন। মনে হয় তিনি ভিক্ষা করার মতো কাচুমাচু করেছেন, ‘কমপক্ষে একবার তাকে এখানে নিয়ে আসুন।’ সে এ বিষয়ে আমাকে কিছুই বলেনি। সে আমাকে সেখানেও নেয়নি।

আমাদের এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। ওর মুখমণ্ডল আম্মার মতো, ওর চোখ দুটি গভীর পুকুরের মতো। আম্মার মতোই আমি তাকে উপরে তুলে নেই, তাকে কোলে নেই এবং তার সঙ্গে খেলা করি। কিন্তু এখন আমার চোখে আনন্দের অশ্রুধারা নেমে এলো না কিংবা পুকুর ও নদী তৈরি করল না। বরং আমার চোখের কিনারায় অশ্রুবিন্দু কুয়াশার মতো ঝলমল করছিল। হে প্রভু, আপনার অসাধারণ উপহারের জন্য ধন্যবাদ; আপনি আমাকে ভুলে যাওয়ার ক্ষমতা এবং মনোবল শক্ত করার ক্ষমতা দিয়েছেন। পুরনো স্মৃতির শীতল হাওয়া জীবনের মরুভূমির উপর শান্ত ছিল। আমি আবার গর্ভবতী হয়েছি, যদিও আমি তখনও কন্যা সন্তানকে স্তন্যপান করছিলাম। যখন আমি কন্যা সন্তানকে কোলে নেই, অন্য দুটি ক্ষুদ্র পায়ের কোমল ঠুকঠুক এবং একটি ছোট হৃদয়ের ধুকপুকানি আমার ভেতর স্থান করে নেয়।

আমি প্রচণ্ডভাবে বিক্ষুব্ধ ছিলাম। সে দ্রুত তার দাড়িতে বিলি কাটে এবং বলল, ‘আমি সন্তানদের বড় করছি, গর্ভধারন করতে তোমার সমস্যা কোথায়?’ বেচারা। সে যা বলছে, তা ঠিক। যদি একবারও তাকে জন্ম দেওয়ার কঠিন কথা বলা হতো, তাহলে সে হয়তো এ ধরনের কথা বলত না। খক্‌খক্‌ করে কৃত্রিম কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করার মতো সহজে, চাপ কমানোর জন্য মূত্র ত্যাগ করার মতো সহজে, তুমি নিজেকে এমন এক সহজপ্রাণী তৈরি করেছ, যে কি না গর্বিত এবং আনন্দিত, অথচ এখন তুমি অসংবেদনশীল। তাকে কী রক্ত ও মাংসের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলা উচিত? তার হাড়ের লবণ পিষে কী গর্ভে পৌঁছানো উচিত? তাকে শুধু মাংস ও রক্তের মধ্যে নয়, বরং একটি তীব্র বেদনায় বেঁচে থাকতে হবে, যা পাঁজর ভেঙে ফেলবে? যদি সে এমন সব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারত, তাহলে বুঝত। না, আমার এসব প্রশ্ন করার সুযোগ নেই, কারণ আপনি হলেন স্রষ্টা এবং সে আপনার প্রিয় সৃষ্টিকর্ম। তাহলে কী আমাকে অপ্রিয় সৃষ্টি হিসেবে গণ্য করা হয়?

তার চাওয়া মতো যখন ছেলে জন্মগ্রহণ করল, তখন তার আনন্দের সীমা ছিল না। যদিও আমি খুশি ছিলাম না, তবে একটি জিনিস আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছে। আমরা অন্তত আম্মার মতো আরেকটি অসহায় বন্দী জীবনকে স্বাগত জানাইনি। নিষ্ঠুর জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার পরিবর্তে একজন ছেলে জন্মগ্রহণ করলে সে গর্বের সাথে পুরুষ হওয়ার সম্পূর্ণ অহংকার নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে!

আমি আমার মেয়ের প্রতি আরও বেশি ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা উজাড় করে ঢেলে দিয়েছি। দুটি সন্তানই বেড়ে উঠছিল। তার সামাজিক অবস্থান, আত্মগরিমা এবং একঘেঁয়েমী— সবকিছুই যেন ডিম দিতে এবং বংশবিস্তার করতে তৎপর ছিল। আমি সবচেয়ে নিষ্ঠাবান দাসীতে পরিণত হয়েছি; এটিই ছিল আমার একমাত্র সহজ লভ্য পথ। এই পৃথিবীতে কিছু না দিয়ে, কিছু না পেয়ে, সামাজিক সম্পর্কের কোনো সচেতনতা ছাড়াই, নামহীন একজন মানুষের চেয়েও কম, আমি কেবলই তার স্ত্রী ছিলাম, অর্থাৎ বিনা পারিশ্রমিকে গৃহকর্মী। রাতে যদি আমি ভাবতাম যে, তার সুরক্ষা ছাড়া আমার কী হবে, তখন আমি কাঁপতে শুরু করতাম। সে ছাড়া আমি কিছুই ছিলাম না এবং সেই কঠিন বাস্তবতা সবসময় আমার চোখের সামনে ভাসমান ছিল। আমি কেবলমাত্র একটি ছায়া ছিলাম। প্রথমে আমি মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলাম না। আমার মধ্যে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল। তাকে ছাড়া ভবিষ্যতের সামান্য কোনো সংকেত পেলেই আমি ভীত হয়ে পড়তাম। আমি পরিস্থিতি কল্পনা করতেও ভয় পেতাম। আমি একজন দাসী; তবুও, যে মালিক আমাকে আমার শ্রমের বিনিময়ে খাদ্য এবং আশ্রয় দিয়েছে, আমার কাছে সে একজন মহাত্মা।

সম্ভবত বিষয়টি দীর্ঘায়ু হতে পারতো। আমি শেষ পর্যন্ত সন্তানদের বিয়ে দিতে পারতাম এবং তারপর একসময় মৃত্যু এসে আমাকে নিয়ে যেত, ঠিক আম্মার মতো। কিন্তু একদিন সে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়। স্পষ্টতই আমার পাকস্থলিতে একটি টিউমার বড় হচ্ছিল। ডাক্তাররা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেন এবং বললেন যে, আমার অস্ত্রোপচার জরুরি। তার মুখমণ্ডল অগ্নিমূর্তি ধারণ করে, যেমন আমার সঙ্গে রাগ হলে হয়। সে ডাক্তারদের সামনে কিছুই বলেনি। আমার অস্ত্রোপচার শেষ হওয়ার পর সে ফিরে আসে এবং সেখানেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে। ‘তোমার গলা থেকে খুলে চেইনটা আমাকে দাও,’ সে আদেশ করে।

এই চেইন সম্পর্কে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। যখন আমার বিয়ে হয়, তখন আম্মা দুই লহরীর এই চেইনটি বানিয়েছিলেন। তিনি নিজের বিয়ের সময় তার মায়ের দেওয়া সোনাকে গলিয়ে চেইনটি তৈরি করিয়েছিলেন। আম্মার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে আমি চেইনটি সবসময় ব্যবহার করি। আর এ কারণেই এটিকে ছেড়ে দিতে আমার মন চাচ্ছিল না। আমার কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল এবং তা সত্ত্বেও জিজ্ঞেস করি, ‘তুমি এটা এখন কেন চাচ্ছ?’ আমার মনে হলো জীবনে এই প্রথম আমি তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করেছি। বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে এবং মায়া-দয়াহীন ভাবে খুব সাধারণ ভঙ্গিতে জবাবে সে বলল, ‘আমি আবার বিয়ে করছি। চেইনটি আমি নববধূকে দিতে চাই।’ অন্ধকার এসে আমার চারপাশ ঘিরে ধরল। আমি কী এই গ্লুকোজের বোতলগুলোর পাইপ ছিঁড়ে পালিয়ে যাব? কোথায় পালাব? আমি কী তাকে চড়-থাপ্পর মারব? হায়! এটা অসম্ভব। সন্তানদের কী হবে? সম্ভাবনা এমন যে, আমার বাড়ির চার দেয়ালও আমার জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে, তা আমার চোখের সামনে ঘণীভূত হল এবং আমি বিধ্বস্ত হলাম।

আমি বাম হাতে চেইনটি ধরে রেখেছি, যেন এটি আমার জীবন। আমি বললাম, ‘আমি এটা দেব না।’ সে অবাক হয়ে গেল, সম্ভবত আমার কথা মোটেও আশা করেনি। সে আমার দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। চেইন পাওয়ার চেয়ে তাকে বেশি অপমান করেছে আমার অস্বীকৃতি। সে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিল। ‘ওহো! তুমি কী মনে করো, চেইন না দিলে আমার বিয়ে হবে না?’ সে রীতিমতো চিৎকার করে বলল। আমি ভীরু কণ্ঠে জিজ্ঞেস করি, ‘কেন তুমি এখন আবার বিয়ে করতে চাও?’
‘তোমাকে কী কারণ বলতে হবে? আচ্ছা, তাহলে শোনো। তোমার মতো ভিখারিনীকে নিয়ে আমি আমার বাকি জীবন নষ্ট করতে চাই না। অসুস্থ মানুষের সঙ্গে সংসার করে কী লাভ? আমি সম্ভ্রান্ত পরিবারের ভালো মেয়েকে বিয়ে করছি।’

হে প্রভু, আপনি আমাকে অনেক যন্ত্রণা সহ্য করার শক্তি দিয়েছেন। কিন্তু আমাকে এত বেশি যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য তাকে এতটা নিষ্ঠুর করা আপনার উচিত হয়নি। ধৈর্যের সীমা কত? যদিও ধৈর্য আমার জীবনের মন্ত্র ছিল, কিন্তু আমি ভেঙে পড়েছি, পুরোপুরি অসহায়। আমি কথা বলার আগেই সে আমাকে বলল, ‘তুমি কী আরও শুনতে চাও? আমি তোমার কাছ থেকে কী সুখ-আনন্দ পেয়েছি? যখনই তোমাকে স্পর্শ করেছি, তুমি মরা মানুষের মতো নিথর হয়ে শুয়ে থেকেছ। এজন্যই আমি আবার বিয়ে করতে চাচ্ছি।’

আমি সোজাসাপটা চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। আমার কথা নিস্তব্ধতায় পরিণত হয়েছে। আমার চোখে অশ্রুর আড়ালে মেঘ জমেছে। আমাকে রাস্তার উপর আবর্জনার মতো ছুড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছিল এবং আমি রাগে-ক্ষোভে প্রায় ফেটে পড়তে যাচ্ছিলাম। আমি বিছানা থেকে উঠতে চেয়েছি, কিন্তু পারিনি। আমি ধীরে ধীরে চিন্তা করা শুরু করি। আমার কী এমন ছিল, যা দিয়ে তাকে থামানো যেত? তার বিশ্বস্ত দাস হিসেবে আমি তিন বা চারটি সহজ প্রশ্ন করেছিলাম, যার জন্য হাজার হাজার উত্তর পেয়েছি।

‘দেখো, তোমার শরীর ভালো নেই। তাকে আবার বিয়ে করতে দাও।’ এক অদৃশ্য কণ্ঠস্বর বলল, ‘আরে, সবই তো ভালো চলছে। সে একজন পুরুষ, একটা নয়, বরং সে চারজন নারীকে বিয়ে করতে পারে। তোমার কী বলার আছে?’ অন্যরা গোঁফের নিচে হাসি ফুটিয়ে কৃত্রিম সহানুভূতির সঙ্গে উপদেশ দিয়েছে: ‘শোনো, তার যদি বিয়ে করতে ইচ্ছা হয়, তাহলে করুক। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা করো, যেন সে প্রতি মাসে ভরণপোষণের জন্য তোমাকে কিছু অর্থকড়ি দিতে বাধ্য হয়। মামলার রায় পেতে চার-পাঁচ বছর লাগতে পারে। ততদিন তুমি কোনো কাজ খুঁজে নাও।’ 

তার অর্থ এই যে, সে যা করতে যাচ্ছে, তা সমাজ মেনে নিয়েছে। এমনকী তারা বলেছে যে, আপনি এই বিষয়গুলোতে সাহায্য করছেন! এসব কাজ আপনার নামে হচ্ছে, কারণ আমি আপনার অসম্পূর্ণ সৃষ্টি, হে প্রভু? আপনি কী আমার কষ্টের কান্না শুনতে পান? আমার আর্তনাদ কী আপনার কাছে পৌঁছায়? আমি কী করব … আমি কী করব …

গত তিন দিনে সে হাসপাতালে আসেনি। আমার সন্তানেরা এবং আমি হাসপাতালের দেওয়া বিনামূল্যের খাবার ভাগাভাগি করে খেয়েছি। অবশ্য ডাক্তাররা আমাকে মুক্তি দেওয়ার পর এখন সেই পরিস্থিতি নেই। আমি সন্তানদের নিয়ে বাড়ির দিকে অত্যন্ত কষ্ট করে হেঁটেছি। সামনের দরজায় একটি মোটা তালা। বাড়ির সামনে ঝরে পরা নারকেল গাছের সবুজ পাতা পড়ে আছে। বাড়িতে কেউ নেই। প্রতিবেশীরা একঝলক মুখ দেখিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। বাচ্চারা আমার গায়ের সঙ্গে জড়াজড়ি করে বসে আছে। দিন শেষ হয়ে যায় এবং রাত চলে আসে, তবু আমি ঘরের সামনে বসে থাকি।

হৃদয় এবং বাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্ধকার ঘনীভূত হচ্ছিল। আমার অসহায় অবস্থা দেখে বাচ্চারা ক্ষুধার কথা বলেনি। যেহেতু আমার পা ব্যথা করছিল, তাই আমি পা মেলে দেই। বাচ্চারা আমার গায়ে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে। আমি আধা ঘুমে ছিলাম, আমি বুঝতে পারিনি সময় কত হয়েছে। এমন এক তীব্র চিৎকার, আমার হৃদয়ে আগুন জ্বালানোর জন্য যথেষ্ট, যার জন্য আমার চোখ খুলে যায়, আমি দেখলাম যে আমার ছেলে, যে আমার পাশে ঘুমাচ্ছিল, ডোবার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। এক লাফে আমি নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ি এবং তার কর্দমাক্ত শরীর জড়িয়ে ধরি। তখনই আমি গাছের নিচে একটা টেম্পো থামার শব্দ শুনলাম। সেখানে মানুষের কোলাহল, উত্তেজনা, উৎসবের ব্যস্ততা। সে টেম্পো থেকে নেমে আসে। টেম্পোর পেছনের দরজা থেকে সে তার অত্যন্ত শক্ত হাত দিয়ে এক মহিলাকে বের করে আনে। মহিলার পরনে ছিল লাল পোশাক, যেন স্বর্ণের কারুকাজ করা কাপড়ে মোড়ানো দামি কোনো রত্ন। সে ইচ্ছে করে হালকাভাবে পা ফেলে সামনে এগিয়ে যায়। বাড়ির সামনের দরজা খোলে। সবাই তার সঙ্গে ছিল। আমার ছেলে কাঁপছিল এবং আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি সবকিছু বিস্ফারিত চোখে দেখলাম।

আমার লাল কালি ভর্তি হৃদয়ের নিব ভেঙে গেছে। আমার মুখ আর কথা বলতে পারবে না। আর কোনো চিঠি লেখা যাবে না। আমি ধৈর্য্যের অর্থ জানি না। আর আপনি, হে প্রভু, যদি আবার পৃথিবী বানাতে চান, পুরুষ ও নারী সৃষ্টি করতে চান, তবে অনভিজ্ঞ মৃৎশিল্পীর মতো হবেন না। এই ধরণীতে একজন নারী হয়ে আসুন, প্রভু।

একবার নারী হন, হে প্রভু!

কানাকাম্বারা: উজ্জ্বল হলুদ রঙের ফুল, যা দক্ষিণ ভারতের নারীরা জুঁই ফুলের মালার সঙ্গে খোঁপায় গুঁজে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

গল্পসূত্র: ‘একবার নারী হন, হে প্রভু!’ গল্পটি বানু মুশতাকের ২০২৫ সালে ‘আন্তর্জাতিক বুকার’ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছোটগল্প গ্রন্থ ‘হার্ট ল্যাম্প’-এ অন্তর্ভূক্ত। গ্রন্থটি কন্নড় ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন দীপা ভাসতি।
 

তারা//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ জ ঞ স কর আম র চ খ র র র জন য আম ম র ম আম ম র স ন র জন য আম র ম খ র র মত আম র স কর র প আম র প র স মন কর ছ ল আম র ক আম র ব আম দ র কর ছ ন ষ ট কর ন আম র আম র শ একব র করছ ল চ ইনট র দরজ আনন দ ক ষমত র সমস অবস থ এসব ক সবক ছ সমস ত আপন র ত রপর র একট সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প ও মাস্কের মধুর সম্পর্কে বিচ্ছেদ কেন, কী হবে এবার

একজন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যজন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। বন্ধুত্বের সম্পর্ক দুজনের। বছরের পর বছর ধরে দুজনের বন্ধুত্বে উত্থান–পতন দেখা গেছে। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ইলন মাস্ক যখন সরকারি দায়িত্ব পালন করছিলেন, তখনো তাঁদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। তবে কিছুদিন ধরেই সম্পর্কে চিড় ধরার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সম্পর্কের সেই টানাপোড়েন যেন মাত্রা ছাড়িয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর ও ব্যয় বিলকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনের নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধুত্বের এই টানাপোড়েন। এটা এত দূর পর্যন্ত গিয়েছে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিশংসনের কথাও এসেছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাস্ক একাধিক পোস্ট দিয়েছেন। এসব পোস্টে ট্রাম্পকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়েননি। প্রমাণ না দিলেও মাস্ক দাবি করেছেন, ট্রাম্প ‘এপস্টেইন ফাইল’–এ আছেন।

‘এপস্টেইন ফাইল’ হলো যৌন অপরাধের মামলায় বিচারাধীন অবস্থায় আত্মহত্যা করা জেফরি এপস্টেইনের মামলাসংক্রান্ত নথিপত্র। এসব নথিতে জেফরি ও তাঁর সহযোগীদের ভ্রমণের নথি, কাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন—এসবের বিস্তারিত আছে। এপস্টেইন ফাইলের কিছু অংশ গোপন রাখা হয়েছে। তাই এটা নিয়ে জনমনে ব্যাপক কৌতূহল আছে। ষড়যন্ত্র তত্ত্বেরও জন্ম দিয়েছে।

ডিওজিই প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ইলন মাস্ক। তাঁর বিদায় উপলক্ষে ওভাল অফিসে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু এর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মাথায় কর ও ব্যয়সংক্রান্ত বাজেট বিলকে কেন্দ্র করে দুজনের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এদিকে ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফিউসিলেডে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, তিনি মাস্ককে তাঁর হোয়াইট হাউসের ভূমিকা ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। সেই সঙ্গে বিলিয়নিয়ার কোম্পানিগুলোকে দেওয়া সরকারি ভর্তুকি ও চুক্তিগুলো কাটছাঁট করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

এখন প্রশ্ন হলো—বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি ট্রাম্প ও সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্কের বন্ধুত্বে কীভাবে ফাটল ধরল? এখন এর পরিণতি কী হতে পারে?

মধুচন্দ্রিমার সময়

ট্রাম্প ও মাস্কের বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগেও তাঁদের ‘অবিচ্ছেদ্য রাজনৈতিক শক্তি’ মনে করা হতো। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে দ্বিতীয় মেয়াদে জেতাতে প্রায় ২০ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন মাস্ক। ট্রাম্পও তাঁর প্রশাসনে মাস্ককে যুক্ত করে নেন। সরকারি ব্যয়ে কাটছাঁট করতে নবগঠিত যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব পান মাস্ক।

নতুন এই প্রতিষ্ঠানের (ডিওজিই) নামটিও ধনকুবের মাস্কের পছন্দের একটি ইন্টারনেট মিম থেকে নেওয়া বলে মনে করা হয়। ২০২০ সালের দিকে কুকুরের এই মিম বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের একেবারে শুরুর সপ্তাহগুলোয় তাঁর বন্ধু মাস্ককে প্রশাসনের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বিবেচনা করা হচ্ছিল। এ নিয়ে জনগণের মধ্য থেকে সমালোচনাও কম হয়নি। মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিওজিই ফেডারেল সরকারের হাজার হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করে। বন্ধ করা হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার জন্য মার্কিন সরকারের প্রতিষ্ঠান ইউএসএআইডিও রয়েছে।

ওই সময় মাস্ক এতটাই ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছিলেন যে ডেমোক্র্যাটদের অনেকেই তাঁকে ‘প্রেসিডেন্ট ইলন’ বলে ডাকতে শুরু করেন। তখন ট্রাম্প ও মাস্ক ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে গেছেন। নিজেদের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ফক্স নিউজকে পাশাপাশি বসে সাক্ষাৎকার দেন ট্রাম্প ও মাস্ক। একে অপরকে প্রশংসা করেন তাঁরা।

মাস্কের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তিনি একজন নেতা।’ প্রত্যুত্তরে মাস্ক বলেছিলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টকে ভালোবাসি। আজ এটা স্পষ্ট করে দিতে চাই।’

এরই মধ্যে মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স, যোগাযোগবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকসহ মাস্কের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ‘বাজেটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অর্থ সাশ্রয় করার সবচেয়ে সহজ উপায় ইলনের প্রতিষ্ঠানগুলোর সরকারি ভর্তুকি ও চুক্তি বাতিল করা।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বংশোদ্ভূত মাস্ক কয়েক বছর ধরে ডানপন্থী মনোভাব পোষণ করতে শুরু করেন। এ সময় থেকে তিনি ডেমোক্র্যাট ও প্রগতিশীলদের সমালোচনা করতেও শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কিনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে মাস্কের এমন মনোভাব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি টুইটারের নাম বদলে ‘এক্স’ রাখেন।

মাস্ক অনিয়মিত অভিবাসনের বিরোধিতা ও বাক্‌স্বাধীনতার ওপর নজরদারির প্রচেষ্টা হিসেবে এক্সকে ব্যবহার করতে শুরু করেন। বিশেষ করে পরিচয়ের রাজনীতি ও করোনা মহামারির সময় এটা প্রকটভাবে দেখা যায়। মাস্ক রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে একসময় ট্রাম্পের সমালোচনাও করেছেন। এক্সে লিখেছিলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের সিইও হওয়ার জন্য ট্রাম্প বেশ বয়সী একজন ব্যক্তি। এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্যও।

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থিতার লড়াইয়ে ট্রাম্পের রিপাবলিকান প্রতিপক্ষ রন ডিস্যান্টিসকে প্রাথমিক সমর্থন দিয়েছিলেন মাস্ক। এমনকি ফ্লোরিডার গভর্নর নির্বাচনের প্রচারেও রনের সমর্থনে এক্সে পোস্ট দিয়েছেন মাস্ক।

পরবর্তী সময়ে নির্বাচনী প্রচারের সময় ২০২৪ সালের জুলাইয়ে পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্পের ওপর হামলা হয়। প্রাণে বেঁচে যান ট্রাম্প। তখন মত বদলান মাস্ক। জানান, তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ দেবেন। পরে ট্রাম্পের প্রচার সভায় হাজির হন মাস্ক।

বিরোধের শুরু

এভাবেই প্রকাশ্যে শুরু হয় ট্রাম্প ও মাস্কের বন্ধুত্ব। এর পরের ঘটনা সবার জানা। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তিনি সরাসরি প্রশাসনে যুক্ত করে নেন মাস্ককে। তবে গত এপ্রিলে মাস্ক জানান, তিনি ডিওজিইতে কম সময় দেবেন। আর মে মাসে এসে মাস্ক ট্রাম্প প্রশাসনের কর ও ব্যয় প্রস্তাবনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।

সম্প্রতি ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলকে ‘জঘন্য’ বলে কটাক্ষ করেন মাস্ক। তাঁর ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখুন, ইলনের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। জানি না সেটা আর থাকবে কি না।’

মাস্ককে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ভীষণ হতাশ। কারণ, এখানে উপস্থিত অন্য যে কারও চেয়ে তিনি এ বিলের ভেতরের খুঁটিনাটি সম্পর্কে ভালো জানতেন। হঠাৎই এটি নিয়ে তাঁর সমস্যা শুরু হয়েছে।’ তবে ট্রাম্পের এ দাবিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মাস্ক।

ডিওজিই প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ইলন মাস্ক। তাঁর বিদায় উপলক্ষে ওভাল অফিসে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু এর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মাথায় কর ও ব্যয়সংক্রান্ত বাজেট বিলকে কেন্দ্র করে দুজনের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এখন কী হবে

ট্রাম্প ও মাস্কের বন্ধুত্বের টানাপোড়েনে এখন কী হতে পারে, সেটা স্পষ্ট নয়। রিপাবলিকানদের মধ্যে মাস্ক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। যদিও তাঁর রাজনৈতিক উত্থান অনেকটাই ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বের হাত ধরে। কিন্তু এখন তিনি ডেমোক্র্যাট আর ট্রাম্পের অনুগত—উভয় পক্ষের কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে যেতে পারেন।

আরও পড়ুনএবার প্রকাশ্যে বিবাদে জড়ালেন ট্রাম্প ও মাস্ক৭ ঘণ্টা আগে

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফৌজদারি অভিযোগসহ সাধারণ মানুষের কাছে কেলেঙ্কারি থেকে বেঁচে থাকার রেকর্ড রয়েছে। তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষমতা ব্যবহারের স্পষ্ট ইচ্ছাও দেখিয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর ডেমোক্রেটিক পূর্বসূরি জো বাইডেনের প্রশাসনের কর্মকাণ্ডের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এরই মধ্যে মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স, যোগাযোগবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকসহ মাস্কের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ‘বাজেটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অর্থ সাশ্রয় করার সবচেয়ে সহজ উপায় ইলনের প্রতিষ্ঠানগুলোর সরকারি ভর্তুকি ও চুক্তি বাতিল করা।’

আরও পড়ুনএবার ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমালোচনায় মাস্ক, কর বিলকে বললেন ‘জঘন্য’০৪ জুন ২০২৫

মাস্কও পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক ভাষণে ট্রাম্প তাঁর একটি ইচ্ছার কথা জানান। তিনি বলেন, মঙ্গল গ্রহের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা দেখার অভিপ্রায় রয়েছে তাঁর। কিন্তু গতকাল মাস্ক বলেছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর জন্য স্পেসএক্সের রকেট ব্যবহারের যে উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে, তিনি তা বাতিল করার পরিকল্পনা করছেন।

মার্কিন সিনেটে ট্রাম্পের সই করা কর ও ব্যয় বিল আটকে দিতে আর্থিক খাতের রক্ষণশীল আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে জোট বাঁধতে পারেন মাস্ক।

আল–জাজিরা থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ করেছেন অনিন্দ্য সাইমুম ইমন

আরও পড়ুনইলন মাস্কের মিত্রকে নাসার প্রধান করছেন না ট্রাম্প, ঘোষণা হবে নতুন নাম০১ জুন ২০২৫আরও পড়ুনইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি ট্রাম্পের৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনারগাঁয়ে ৫০০ টাকা কেজি দরে কোরবানির মাংস বিক্রি 
  • ছেলের প্রতি একজন বাবার ভালোবাসা ও একটি সাইকেলের গল্প
  • মন বলছিল, ভালোবাসা আর যত্ন পেলে পাখিটা বাঁচবে
  • আসতে গিয়ে শুনি ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে...
  • গাজায় ঈদের দিনেও ইসরায়েলের হামলা, নিহত ২০
  • আসছে অরুন্ধতী রায়ের নতুন বই ‘মাদার মেরি কামস টু মি’
  • যুদ্ধবিরতির আগে রাশিয়া–ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলা
  • ঢাকা থেকে রাজশাহীতে নিজ বাড়ির সামনে গিয়ে ছিনতাইকারীর কবলে ব্যাংকার দম্পতি
  • ট্রাম্প ও মাস্কের মধুর সম্পর্কে বিচ্ছেদ কেন, কী হবে এবার